সরেজমিন কারওয়ান বাজার

পেঁয়াজের ঝাঁজের মাঝে কিছুক্ষণ

পেঁয়াজের ঝাঁজ সর্বত্র। তর্ক-বিতর্ক, দাম কমছে না। গতকাল একটু কমেছিলো, আজ নাকি আবার বেড়ে গেছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার। কথা হলো জুয়েল মিয়ার সঙ্গে। তিনি পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা। দেশি ছাড়াও মিয়ানমার ও চীন থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি করছেন তিনি।
Onion-Final.jpg
২৫ নভেম্বর ২০১৯, রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একটি পেঁয়াজের আড়ত। ছবি: আরাফাত সেতু/স্টার

পেঁয়াজের ঝাঁজ সর্বত্র। তর্ক-বিতর্ক, দাম কমছে না। গতকাল একটু কমেছিলো, আজ নাকি আবার বেড়ে গেছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার। কথা হলো জুয়েল মিয়ার সঙ্গে। তিনি পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা। দেশি ছাড়াও মিয়ানমার ও চীন থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি করছেন তিনি।

কোন পেঁয়াজের কেমন দাম? জুয়েল মিয়া বললেন, “কেজিপ্রতি দেশি পেঁয়াজ ২৩০ টাকা, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ২০০ এবং চীনা পেঁয়াজ ১৪০ টাকা।”

পাশের আড়তের বাজারদরের চার্টে লেখা দেশি পেঁয়াজের দাম ২২০ টাকা কেজি।

দরদামের এই তারতম্যের বিষয়ে জানতে চাইলে পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা শহীদুল বলছিলেন, “বাজারে যোগান কম। যার যোগান বেশি তিনি হয়তো একটু কম দামে ছেড়ে দিচ্ছেন।”

এছাড়াও পেঁয়াজের মানের কারণেও দামে হালকা এদিক-ওদিক হয় বলেও জানান তিনি।

তার কাছে আবারও জানতে চাইলাম- গতকালও কি একই দামে পেঁয়াজ বিক্রি করেছিলেন?

Onion-Collage.jpg
পাশাপাশি দুই আড়তে টানানো চার্টে পেঁয়াজের দামে ১০টা টাকার ব্যবধান। ছবি: আরাফাত সেতু/স্টার

তিনি না সূচক জবাব দিয়ে বলেন, “কি যে বলেন। প্রতিদিন বাজারদর এক যায় নাকি। এমনিতেই বাজারে যোগান নাই। তার ওপর শুনলাম পাকিস্তান ও মিশর থেকে বিমানে করে পেঁয়াজ আসছে। কিন্তু আমরা কেউ দেখি নাই। পরে শুনলাম পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে আসছে। কিন্তু কারওয়ান বাজারে আসে নাই।”

পেঁয়াজের দাম এই কমছে, এই বাড়ছে, এর কারণ কী? জবাবে পাইকারি বিক্রেতা নাসিরুল হক বললেন, “বিদেশ থেকে প্রচুর পেঁয়াজ আসছে, যেভাবে বলা হচ্ছে, আসলে তা নয়। বাজারে এখনও অনেক ঘাটতি রয়েছে। এ কারণেই পেঁয়াজের বাজার পাগলা ঘোড়া হয়ে গেছে।”

বিষয়টি একটু বুঝিয়ে বলেন তো। নাসিরুল হক বলছিলেন, “বুঝানোর কি আছে। আমরা আসলে নির্ভর করি ভারতের পেঁয়াজের ওপর। ভারত থেকে আগের মতো পেঁয়াজ না আসলে, ওইসব মিসর, পাকিস্তান দিয়ে কাজ হবে না। ভারতের পেঁয়াজ আসলেই বাজার স্থিতিশীল হবে।”

পেঁয়াজের পাইকারি বাজারদর জেনে নেওয়ার পর এবার খুচরা দরের খোঁজ নিতে গেলাম। কিন্তু কারওয়ান বাজারের আশপাশের কোনো মুদি দোকানেই পেঁয়াজ নেই।

Onion-Final-1.jpg
কারওয়ান বাজারে বিক্রি হচ্ছে চীনা পেঁয়াজ। ছবি: আরফাত সেতু/স্টার

জানতে চাইলে বেশ কয়েকজন মুদি দোকানি জানান, পাশেই কারওয়ান বাজার। আর দাম অনেক বাড়তি থাকায় তাদের কাছে কেউ পেঁয়াজ কিনতে আসেন না। তাই তারাও পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।

গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ ২৪০-২৫০ টাকা, মিসরীয় ও চীনা ভালো মানের পেঁয়াজ ১৫০-১৬০ টাকায় বিক্রি করেন বিক্রেতারা।

কারওয়ান বাজার পেরিয়ে ফার্মগেটের দিকে আসতে গলির ভিতর এক খুচরা বিক্রেতাকে পেঁয়াজ বিক্রি করতে দেখা গেলো। জানতে চাইলাম কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম কতো?

তিনি বললেন, “দেশি ২৬০, চীনা ১৮০।”

Comments