নাব্যতা সঙ্কটে বরিশালের নদীপথ
পানি প্রবাহ কমে যাওয়া এবং নতুন চর জেগে ওঠায় বরিশালের বিভিন্ন নদীপথে নাব্যতা সংকট তৈরি হয়েছে। এতে ঢাকাসহ অন্তত ৪০টি গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়া বরিশালের নৌযানগুলকে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।
কয়েক সপ্তাহ আগে, বরগুনার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ এলাকার কাছে মেঘনা নদীতে ঢাকাগামী ‘এমভি শাহরুখ -২’ চরে আটকা পরে।
লঞ্চটির এক যাত্রী মির্জা খালিদ প্রায় নয় ঘণ্টা পর কীভাবে অন্য একটি লঞ্চের মাধ্যমে উদ্ধার পেয়েছিলেন তা জানিয়ে বলছিলেন, “বরগুনা থেকে ঢাকার ৮ ঘণ্টার পথ এখন প্রায় ২৪ ঘণ্টা লাগে।”
যাত্রীবাহী একটি লঞ্চের চালক রহিম মিয়া জানান, মেঘনায় মেহেন্দিগঞ্জের ভাসানচরের কাছে গত দুই মাসে তার লঞ্চটি বেশ কয়েকবার আটকে যায়।
বরিশাল-ভোলা রুটে চলাচলকারী একটি জাহাজের ক্রু জানান, বরিশাল সদর উপজেলার লাহারহাট এবং শাহেরহাট পয়েন্টে পানি অনেক কমে গেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তারা জানান, বরিশাল অঞ্চলের নদীপথে কমপক্ষে ৩০টি পয়েন্টে পানি প্রবাহের অভাবে নাব্যতা সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী মূল নদীগুলি উজান থেকে গড়ে ১.২ বিলিয়ন টন কাদা ও বালু বয়ে আনছে এবং ৪০ শতাংশ পলি বিভিন্ন পয়েন্টে জমা হয়েছে।
উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলিতে বন্যার কারণে নদীগুলি আরও পলি ও বালু বয়ে এনেছে বলেও তিনি জানান।
এই সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে বলে জানান বিআইডব্লিউটিএ এর ড্রেজিং বিভাগের সহকারী পরিচালক রেজাউর রশিদ খন্দকার। দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি জানিয়েছেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে মেঘনা, কলাবোদোর, তেনতুলিয়া, খাকদন, কারখানা এবং কির্তনখোলা নদীর ১০টি পয়েন্টে ১০টি ড্রেজিং মেশিন কাজ করছে।
বিআইডব্লিউটিএর সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও নদী ট্র্যাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডি) আজমল হুদা মিঠু বলেছেন, জাহাজগুলি চলাচলের জন্য কমপক্ষে ১২ ফুট গভীর পানি প্রয়োজন, কিন্তু বরিশাল বন্দরে ভাটার সময় সর্বোচ্চ ১০ ফুট গভীরতা পাওয়া যায়। যার কারণে, আমরা নদী বন্দরের আশেপাশের এলাকায় ১৪ ফুট গভীরতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।
নাব্যতা সংকটের কারণে কিছু লঞ্চ টার্মিনালও স্থানান্তর করতে হবে বলে তিনি যোগ করেন।
Comments