জুভেন্টাসকে রুখে দিয়েছে পুঁচকে সাসসুয়োলো
ঘরের মাঠে অপেক্ষাকৃত দুর্বল সাসসুয়োলোর বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল টানা আটবারের চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাস। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি দলটি। যদিও শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিল দলটি। তারপরও তাদের রুখে দিয়েছে পুঁচকে সাসসুয়োলো। এক সময় তো এগিয়েছিলও তারা। পরে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর পেনাল্টি গোলে সমতা ফেরে। শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলের সমতায় শেষ হয় ম্যাচটি। তাতে প্রথমবারের মতো জুভেন্টাসের মাঠ থেকে পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে পারলো সাসসুয়োলো।
এদিন ম্যাচের সপ্তম মিনিটে অবিশ্বাস্য এক মিস করেন জুভেন্টাসের এমেরি চান। ডান প্রান্ত থেকে গোলমুখে বল ঠেলে দিয়েছিলেন হিগুয়েইন। প্রয়োজন ছিল একটি টোকার। কিন্তু বলে পা লাগাতে ব্যর্থ হন এ মিডফিল্ডার। তবে পরের মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে দারুণ একটি শট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এবার দারুণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে তা ঠেকিয়ে দেন সাসসুয়োলো গোলরক্ষক স্তেফানো তুরাতি।
১৬তম মিনিটে একেবারের ফাঁকায় থেকে নেওয়া হিগুয়েইনের নেওয়া শট অল্পের জন্য বারপোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। শেষ মুহূর্তে সুযোগ ছিল ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোরও। কিন্তু অল্পের জন্য বলের নাগাল পাননি এ ফরোয়ার্ড। ১৯তম মিনিটে ভালো সুযোগ ছিল সাসসুয়োলোরও। ফিলিপ দিয়ারিচিচের বাড়ানো বলে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন জেরেমি বোগা। কিন্তু তার শট বারপোস্টের উপর দিয়ে গেলে নষ্ট হয় সে সুযোগ। তবে পরের মিনিটেই এগিয়ে যায় তারা। রদ্রিগো বেনতাচুরের কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া জোরালো এক শটে লক্ষ্যভেদ করে বনুচ্চি।
গোল শোধ করতে অবশ্য দুই মিনিটের বেশি সময় নেয়নি সাসসুয়োলো। দিউরিচিচের সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে দারুণ এক গোল দেন বোগা। গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফনের মাঠের উপর দিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় জালে পাঠান এ ফরোয়ার্ড। ৩২তম মিনিটে হিগুয়েইনের নেওয়া দূরপাল্লার শট লক্ষ্য থাকেনি। ৩৫তম মিনিটে ম্যানুয়েল লোকাতেল্লির শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। চার মিনিট পর একেবারে ফাঁকায় থেকে হেড দিয়েছিলেন হেমাদ জুনিয়র ত্রাওরে। কিন্তু অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি।
বিরতির পরপরই পিছিয়ে পরে জুভেন্টাস। ৪৭তম মিনিটে মাতাইস ডি লিটের ভুলে গোল খায় তারা। ডি-বক্সের সামনে প্রতিপক্ষের পায়ে বল তুলে দেন তিনি। তবে ফ্রান্সিস্কো কাপুতোর শট প্রায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বুফন। ঠিকভাবে ফেরাতে না পারলে হাতে লেগেও বল জালে জড়ায়। চার মিনিট পর সমতায় ফিরতে পারতো তারা। ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন হিগুয়েইন। কিন্তু জোরালো শট নিতে পারেননি। পরের মিনিটে রোনালদোর ব্যাক ভলিতে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন এমেরি চান। কিন্তু তার দুর্বল শট সহজেই ধরে ফেলেন গোলরক্ষক।
৫৪তম মিনিটে বের্নাদস্কির বদলে পাওলো দিবালাকে মাঠে নামান কোচ মাউরিজিও সারি। তাতে ধার বাড়ে আক্রমণভাগে। একের পর আক্রমণের নেতৃত্ব দেন তিনি। কিন্তু জুত করে উঠতে পারছিলেন না। ৬৬তম মিনিটে তাকে ডি-বক্সের সামান্য বাইরে ফাউল করলে বিপজ্জনক জায়গা থেকে ফ্রিকিক পায় জুভেন্টাস। কিন্তু দিবালার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
পরের মিনিটে দিবালাকে ডি-বক্সের মধ্যে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় জুভেন্টাস। সফল স্পট কিকে দলকে সমতায় ফেরান রোনালদো। ৭০তম মিনিটে হিগুয়েইনের সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে ভালো শট নিয়েছিলেন দিবালা। কিন্তু এক ডিফেন্ডার ডি-বক্স থেকে তা ফিরিয়ে দেন। দুই মিনিট পর ডিফেন্ডারের ভুলে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন দিবালা। তবে তার শট অল্পের জন্য বারপোস্টের উপর দিয়ে গেলে হতাশা বাড়ে দলটির।
৭৯তম মিনিটে ফের বিপজ্জনক জায়গা থেকে ফ্রিকিক পায় জুভেন্টাস। কিন্তু মিরালেম পিয়ানিচের নেওয়া শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তিন মিনিট পর দিবালার নেওয়া দূরপাল্লার শট লক্ষ্যে থাকেনি। ৮৮তম মিনিটে একেবারে ফাঁকায় থেকে নেওয়া অ্যারন রামসির শট থেকে প্রায় গোল পেয়ে যাচ্ছিল জুভেন্টাস। গোলরক্ষকের হাত থেকে ছুটে গোলের দিকেই যাচ্ছিল বলটি। তবে শেষ মুহূর্তে রক্ষা করেন গোলরক্ষক।
ম্যাচের যোগ করা সময়ে দিবালার নেওয়া কর্নার কিক সরাসরি গোলের দিকেই যাচ্ছিল। গোলরক্ষক ফিস্ট করে ফেরান। ফিরতি বলে সুযোগ ছিল রোনালদোরও। কিন্তু তার হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরের মিনিটে দিবালার পাস থেকে ফাঁকায় থেকেও বাইরে মারেন রোনালদো। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে অ্যালেক্স সান্দ্রো ক্রস একেবারে থেকে হেড নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে গেলে হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় জুভেন্টাসকে।
Comments