'পুলিশের সম্মানিত অনেকেই শিল্পী সমিতিতে এসে চা খেয়েছেন, ঘুরে ঘুরে সব দেখেছেন'

Zayed-Khan.jpg
চিত্রনায়ক জায়েদ খান। ছবি: শেখ মেহেদী মোর্শেদ/স্টার

পরপর দুইবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির (বিএফডিসি) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। নির্বাচনের আগে ও পরে তার নামে বেশ কিছু অনিয়ম, অভিযোগের কথা শোনা গিয়েছিলো। সেগুলো নিয়ে প্রথমবারের মতো তিনি মুখোমুখি হয়েছেন দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের সঙ্গে।

অভিযোগ আছে, এফডিসিতে সমিতিগুলো শুধুই নাকি সমিতি নিয়েই ব্যস্ত থাকে, সিনেমার বিষয়ে তাদের কোনো মনোযোগ নেই?

আমরা কিন্তু সিনেমা তৈরিতে কোনো প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছি না। সিনেমা তৈরি করার দায়িত্ব কিন্তু সমিতির না। সমিতি চর্চা না হলে, শিল্পীরা আড্ডায় না থাকলে ইন্ডাস্ট্রি থাকতো না। বাংলাদেশের কোনো ছবি তৈরিতে আমরা বাধা দিয়েছি কিংবা আমাদের কারণে কোনো ঝামেলা হয়েছে, কোনো ছবি মুক্তি পায়নি, এই রকম ইতিহাস কিন্তু নেই। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষা করা। এমন না যে- প্রযোজকরা আসছেন, আমরা তাদের ফিরিয়ে দিয়েছি।

শিল্পী সমিতি নিয়ে অনেক অনিয়মের কথা শোনা যায়...

আমার জানা মতে কোনো অনিয়ম করিনি। শিল্পী সমিতির অভ্যন্তরীণ অবয়বের পরিবর্তন দরকার, সেটা করেছি। অনেক সিনিয়র শিল্পী এখন সমিতিতে আসেন। যৌথ প্রযোজিত ছবি নিয়ে অনিয়ম ও সাফটা চুক্তির বিষয়ে প্রতিবাদ করেছি। অনেক মাছ বিক্রেতা শিল্পী সমিতির সদস্য ছিলেন, তাদের বাদ করেছি। এটি যদি অনিয়ম হয়, তাহলে কী আর করা।

অনেকেই বলেন- আপনার অভিনীত ছবিগুলো দর্শকরা পছন্দ করেন না, তাই আপনি সংগঠনের দিকে বেশি মনোযোগী...

ছবি চলা বা না চলা, এটি দর্শকদের ওপর নির্ভর করে। ভালো নায়ক হলেই যে ভালো সংগঠক হওয়া যায়, এমন কোনো নিয়ম নেই। শিল্পী সমিতিকে একটি ভালো জায়গায় নিয়ে গিয়েছি, এ কারণে যদি কেউ ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু বলে, আমার করার কিছু নেই।

পুলিশ প্রশাসনের অনেককেই শিল্পী সমিতিতে আসতে দেখা যায়। শিল্পী সমিতি, সিনেমার সঙ্গে তাদের যোগসূত্র কী? অনেকেই বলেন এইসব নিয়ে আপনি পাওয়ার প্রাকটিস করেন...

পুলিশের সম্মানিত অনেকেই শিল্পী সমিতিতে এসে চা খেয়েছেন, ঘুরে ঘুরে সব দেখেছেন। কিন্তু তার কারণে কেউ যে ভুক্তভোগী হয়েছেন, এটি বলতে পারবো না। সরাসরি বলছি- এমন একজনকেও খুঁজে দেখাতে পারবেন না, তিনি অভিনেতা হোন, পরিচালক হোন, প্রযোজক হোন, আমার দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছেন বা কারও ক্ষতি করেছি। যদি কেউ বলতে পারেন, তাহলে যে শাস্তি দেওয়া হবে মেনে নিবো।

তারা শিল্পী সমিতিতে এসে চা খেয়েছেন, ঘুরে ঘুরে সব দেখেছেন। এটি নিশ্চয়ই পাওয়ার প্রাকটিস না। এটি হলো সমিতির সঙ্গে সব পেশার মানুষকে একাত্ম করা।

সমিতির নির্বাচনের আগে শিল্পীদের আবাসনের বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেটি কতদূর এগিয়েছে?

নির্বাচন শেষ হওয়ার তো মাত্র তেইশ-চব্বিশ দিন হলো। আবাসনের বিষয়টি নিয়ে আমরা চেষ্টা করবো, ফান্ডের একটা ব্যবস্থা করবো। ইতিমধ্যেই আমরা দেখা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। গণপূর্ত এবং গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় লাগবে। তাছাড়া এটি সম্ভব না। তাদের বলিনি যে, আমি তাদের জমি দিয়ে দিবো।

অনেক সময় সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে আপনাদের মিটিং করতে দেখা যায়। সিনেমার কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় সেখানে?

সমিতির কাজই হলো বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা। মাননীয় তথ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছি, ই-টিকেটিংয়ের ব্যবস্থা করার জন্য, হল বাড়ানোর জন্য। হল থেকে ট্যাক্স কমানো যায় কী না, এই সব বিষয়ে আলোচনা করেছি। ৩-৪ শতাংশ সুদে হল মালিকদের ঋণ দেওয়ার জন্য, যেনো তারা হলগুলোকে সংস্কার করতে পারেন। বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলার জন্য কী কী করতে হবে সেই সব। কিন্তু অনেকেই আবার মন্ত্রীদের গিয়ে বলেন, হল বাঁচাতে হবে, বিদেশি ছবি আনতে হবে।

তারা কারা?

হল মালিকেরা। তারা শুধু নিজেদের স্বার্থ দেখছেন, কিন্তু এদিকে যে- আমাদের সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সেদিকে তাদের খেয়াল নেই।

দীর্ঘ এক বছর পর সিনেমায় ফিরলেন। সিনেমা থেকে এতোদিন দূনে ছিলেন কেনো?

এর জন্য আমি নিজেই দায়ী। আমার কাছে যেসব প্রস্তাব এসেছিলো, সেগুলো করতে পারিনি। কারণ তখন শিল্পী সমিতিকে দাড় করানোর একটি স্বপ্ন ছিলো। যৌথ প্রযোজিত ছবির ঝামেলা নিয়ে আন্দোলন করেছি। তাই এফ আই মানিকের মতো বড় পরিচালকের ছবি ‘এভাবেই ভালোবাসা হয়’ দিয়ে ফিরলাম, এছাড়া রবিউল ইসলাম রাজের একটা ছবিতেও চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। 

Comments

The Daily Star  | English

Complete polls preparations by December: Yunus

Asks to review if those who served as polling officers in past three elections shall not be assigned the same roles again

3h ago