‘বয়কট মিয়ানমার ক্যাম্পেইন’
মিয়ানমারকে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপে ফেলতে শুরু হয়েছে ‘বয়কট মিয়ানমার ক্যাম্পেইন’।
বিশ্বের ১০টি দেশের ৩০টি মানবাধিকার, একাডেমিক ও অন্যান্য সংস্থা যৌথভাবে আজ (৯ ডিসেম্বর) থেকে এই ক্যাম্পেইন শুরু করেছে।
ক্যাম্পেইনটি এমন সময় শুরু হলো, যখন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি তার দেশকে গণহত্যার অভিযোগ থেকে বাঁচাতে নেদারল্যান্ডসের হেগে পৌঁছেছেন।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার এই অভিযোগটি এনেছে গাম্বিয়া। হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) এর শুনানি চলবে ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর।
এই ক্যাম্পেইনটির উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছে ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন, ফরসি ডট কো, রেস্ট-লেস বিংগস, ডেসটিনেশন জাস্টিস, রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক অব কানাডা, রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক ইনিশিয়েটিভ অব ইন্ডিয়া এবং এশিয়া সেন্টার।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাম্পেইনটির আয়োজকরা জানান, শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পাওয়া সু চির বিরুদ্ধে গণহত্যার বিষয়টি অস্বীকার করে আসার অভিযোগ রয়েছে। সারা পৃথিবীকে এটি বিস্মিত করেছে। যথেষ্ট পরিমাণ তথ্য-প্রমাণ রয়েছে যে, ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে মিয়ানমার সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও দেশটির সেনাবাহিনীর দ্বারা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছেন।
২০১৭ সালের আগস্ট থেকে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। মিয়ানমারের রাখাইনে বর্বর সেনা অভিযানে তাদের ওপর হওয়া হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও উচ্ছেদের কারণে তারা পালিয়ে আসতে বাধ্য হন। এর আগেও, প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বিভিন্ন সময় পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।
অন্টারিও ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় বাহিনী ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে প্রায় ২৪ হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে এবং কয়েক হাজার নারী ও মেয়েকে ধর্ষণ করেছে।
জাতিসংঘ এই ঘটনাকে জাতিগত নির্মূলের একটি সর্বোত্তম উদাহরণ বলে অভিহিত করেছে। গত দু’বছরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মূলত চীন ও রাশিয়ার বিরোধিতার কারণে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
Comments