মোস্তাফিজের বোলিংয়ে প্রচণ্ড বিরক্ত নির্বাচক হাবিবুল
পুরনো অস্ত্রগুলো ভোঁতা, ভাণ্ডারে যোগ হচ্ছে না নতুন কিছুও, মার খেলে বুদ্ধি খাটিয়ে ফিরে আসার সামর্থ্য দেখাতে পারছেন না। সব মিলিয়ে মোস্তাফিজুর রহমানের বোলিংয়ে চরম বিরক্তি প্রকাশ করেছেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। যিনি এবার বিপিএলে মোস্তাফিজের দল রংপুর রেঞ্জার্সেরও টেকনিক্যাল এডভাইজরও।
বিপিএলে প্রথম ম্যাচে নেমেই তেতো অভিজ্ঞতা হয় মোস্তাফিজের। প্রথম দুই ওভার বেশ ভালো বল করেছিলেন, পেয়েছিলেন উইকেট। কিন্তু শেষ দিকে তাকে তুলোধুনো করেন দাসুন শানাকা। মোস্তাফিজের শেষ ওভার থেকে টানা চার ছক্কা মারেন লঙ্কান ব্যাটসম্যান।
শানাকাকে ম্যাচ শেষে বলছিলেন, মোস্তাফিজ কি করতে পারেন তা তার জানা থাকায় মারতে পেরেছেন সহজে। ম্যাচেও দেখা গেছে মোস্তাফিজ একইরকম ভাবে বল করে যাচ্ছিলেন আর খাচ্ছিলেন মার। এক, দুইটা ছক্কা খাওয়ার পরও আলাদা কিছু করতে চেষ্টা করেননি। একই লেন্থে বল ফেলে খেয়েছেন আরও দুই ছক্কা। সব মিলিয়ে ৪ ওভারে ৩৭ রান নিয়ে তিনি পান ২ উইকেট।
মোস্তাফিজের এই অবস্থা অবশ্য নতুন নয়। বেশ কয়েকদিন থেকেই ভুগছেন তিনি। ভারতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে একটাও উইকেট পাননি, ওভারপ্রতি রান বিলিয়েছেন নয়ের উপরে। মোস্তাফিজ যেন এখন খরুচে বোলিংয়ের সমার্থক।
সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। মোস্তাফিজের এমন বিবর্ণ হয়ে যাওয়া ভাবাচ্ছে হাবিবুলকে। বিপিএলের প্রথম ম্যাচ মোস্তাফিজের বোলিং কেবল বিরক্তিই উদ্রেক করেছে হাবিবুলের, ’আমার মনে হচ্ছে ওকে চিন্তা করতে হবে। আমরা ব্যাটসম্যানরা, বোলাররা চিন্তা করি ম্যাচ শেষে যে কী হচ্ছে। ইটস হাই টাইম ফর হিম ভালো করছি বা এসব চিন্তা না করে ব্যাটসম্যান আমাকে পড়ে ফেলছে বা আমাকে দ্বিতীয় পরিকল্পনায় যেতে হবে। কোচ হয়তো তাকে বলবে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ক্রিকেটারদেরও বোঝা উচিত আমার কীভাবে বোলিং করা উচিত। কাল যদি দেখি দুই ওভার সে দারুণ বোলিং করেছে। শেষ দুই ওভারে সে অনেকটা প্রেডিক্টেবল। একই লেন্থে বোলিং করছে, একইভাবে মার খাচ্ছে। এমন তো হবেই। টি-টুয়েন্টিতে শানাকা তো দারুণ ব্যাটসম্যান। মোস্তাফিজ ব্যতিক্রমী কিছু করার চেষ্টা করছিল না।’
শানাকার তাণ্ডবের জবাবে মোস্তাফিজ মারতে পারতেন ইয়র্কর। কিন্তু বেশ অনেকদিন থেকেই আগের মতো ইয়র্কর মারতে পারেন না তিনি, হাবিবুলের মনে হচ্ছে মোস্তাফিজ এখন অনেক বেশি অনুমেয় ব্যাটসম্যানদের কাছে, ‘মোস্তাফিজ এক বছর ধরে মিসিং হয়ে যাচ্ছে। মোস্তাফিজের বোলিংয়ে এখন ইয়র্কার নেই। সে ইয়র্কার পাচ্ছে না। আগে একটা দারুণ ইয়র্কার ছিল বোলিংয়ে। স্লোয়ার বল এখনও আছে। পেসও আস্তে আস্তে বাড়ছে। এখন মোটামুটি ভালো পেসেই বল করছে। ইয়র্কার মিসিং। সে একটু বেশি প্রেডিক্টেবল হয়ে যাচ্ছে। এটাই আমার কন্সার্ন। মনে হচ্ছে আমার কাছে। ব্যাটসম্যানরা ওকে পড়ে ফেলছে যে ও কী করতে যাচ্ছে।’
‘ইয়র্কার মিসিং। আগে ছিল। এখন কমে যাচ্ছে। আগে একজন জিম্বাবুয়ে ব্যাটসম্যানের সঙ্গে যখন আমার কথা হচ্ছিল, মোস্তাফিজের ব্যাপারে। আমি তখন তাকে বললাম তুমি সামনে গিয়ে দাঁড়াও। সে তো প্রধানত কাটার দিবে। আমি তাঁকে সামনে দাঁড়িয়ে ব্যাটিং করতে বললাম। তখন ও ১৪০ এ ইয়র্কার মারে। মোস্তাফিজ নিয়ে চিন্তাভাবনা তখন এমন ছিল। যে সামনে দাঁড়াবো, সে অনেক জোরে ইয়র্কার মেরে দিবে। ওইটা এখন আর নেই। ’
Comments