নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ‘ব্যাক-ফুটে’ বিজেপি
নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপিকে এমন চাপে পড়তে হবে তা হয়তো ভাবতে পারেনি নরেন্দ্র মোদির সরকার। তাই দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ইঙ্গিত দিলেন ‘পিছু হটার’।
আজ (১৫ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আইনে পরিণত হওয়ার আগেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ভারতজুড়ে। বিশেষ করে, দেশটির উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলোতে সহিংস আন্দোলনের প্রেক্ষিতে নাগরিকত্ব আইনের কিছু অংশ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন অমিত শাহ। বলেছেন, “আমরা এ বিষয়ে কথা বলবো।”
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, গতকাল মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর নাগরিকত্ব আইনে ‘কিছু পরিবর্তন’ আনার আভাস দিয়েছেন অমিত শাহ। বলেছেন, “আমরা তাদেরকে আশ্বস্ত করে বলেছি যে এ (নাগরিকত্ব আইন) বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা করবো।”
এদিকে, আইনের প্রতিবাদে আজও বিক্ষোভ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্নস্থানে। গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, আজ সকাল থেকে রাস্তায় নেমে এসেছেন সাধারণ মানুষ। সড়ক ও রেল অবরোধ শুরু হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত সহিংস কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
পশ্চিমবঙ্গে সহিংস বিক্ষোভের কারণে বিজেপির জাতীয় সচিব রাহুল সিনহা রাজ্যটিতে রাষ্ট্রপতির শাসন চাওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন।
কলকাতায় সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, “আমরা (বিজেপি) কখনই রাষ্ট্রপতি শাসনকে সমর্থন করি না। তবে পশ্চিমবঙ্গে যদি এই ধরণের অরাজকতা অব্যাহত থাকে, তবে রাজ্যে রাষ্ট্রপতির শাসন চাওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না।” তার মতে, “পুরো রাজ্য যখন জ্বলছে তখন তৃণমূল সরকার কেবল নীরব দর্শক।”
এছাড়াও, রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ হুমকি দিয়ে বলেছেন, “নাগরিকত্ব আইনের আওতাভুক্ত হিসেবে ‘প্রথম রাজ্য’ হতে চলেছে বাংলা।”
কেরালা-পাঞ্জাবসহ ভারতের একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের মতোই নাগরিক আইনের বিরোধিতায় সরব রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, রাজ্যে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার অনুরোধ জানিয়েছেন মমতা। পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, থানা, স্টেশন-সহ সরকারি, বেসরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর বা কোনো হিংসাত্মক কাজ প্রশাসন সহ্য করবে না।
মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও শান্তিপূর্ণ পথে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্টজনেরা। গতকাল কলকাতা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে কবি জয় গোস্বামী বলেছেন, “‘ভারতে এখন ঘোর দুর্দিন। এই আইনকে প্রত্যাহার করতে সব ধরনের মানুষকে একত্রিত হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”
Comments