‘৩৬০ ডিগ্রি খেলোয়াড় মুশফিক’

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

লক্ষ্যটা ছিল বিশাল। ১৯০ রানের। সে লক্ষ্য তাড়ায় দুই ওপেনারকে হারিয়ে শুরুতেই চাপে দল। এরপর দুর্দান্ত ব্যাটিং করে এমন লক্ষ্যকেও মামুলি বানিয়ে দিলেন মুশফিকুর রহিম। উইকেটে নেমে যেমন খেলেছেন তা ছিল দেখার মতো। দলের ইনিংস মেরামত করেছেন। সেই সঙ্গে রানের চাকাও সচল রেখেছেন। মাঠের চারপাশে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নিখুঁত সব শটে দলকে জয়ের একেবারে কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েই মাঠে ছাড়েন তিনি। তার এমন ইনিংস দেখে দারুণ মুগ্ধ মুশফিকের দল খুলনা টাইগার্সের ইংলিশ কোচ জেমস ফস্টার। মুশফিককে ‘৩৬০ ডিগ্রি খেলোয়াড়’ বলেই অভিহিত করলেন তিনি।

‘৩৬০ ডিগ্রি খেলোয়াড়’- এর প্রসঙ্গ উঠলে একটি নামই উঠে আসে, আর সেটা দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্সের। ঠাণ্ডা মাথায় দেখে-শুনে যে কোনো ধরনের ডেলিভারিকে মাঠের যে কোনো প্রান্তে বল পাঠিয়ে দেওয়ার অবিশ্বাস্য ক্ষমতার কারণেই তার নামকরণ হয়েছে ‘মিস্টার থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি’। এদিন মুশফিকও কম যাননি। ভিলিয়ার্সের মতো তিন-চার রকমের ‘ইম্প্রোভাইজিং’ স্ট্রোক খেলে মাঠের চারপাশ দিয়েই রান নিয়েছেন। বরাবরের মতো ভয়ডরহীন মানসিকতা ও আগ্রাসনের সঙ্গে টেম্পারমেন্টের নিখুঁত সমন্বয়ে খেলেছেন এক অতিমানবীয় ইনিংস।

আর এ কারণেই ভিলিয়ার্সের পাওয়া তকমা মুশফিককেও দিলেন ফস্টার। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) মুশির কল্যাণে ৫ উইকেটের দারুণ জয় পাওয়ার পর বললেন, ‘সে খুবই উঁচু মানের খেলোয়াড়। সে কন্ডিশন ও পরিস্থিতি বুঝে যা করা দরকার তা-ই করেছে। সে একজন ৩৬০ ডিগ্রি খেলোয়াড়। গত কয়েক বছর তার বিপক্ষে খেলেছিলাম যখন আমি খুলনা টাইটান্সের সঙ্গে ছিলাম। তার বিপক্ষে বোলিং করা খুবই কঠিন। সে খুব শক্তিশালীও। সে একটি পরিপূর্ণ প্যাকেজ।’

শুধু ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করেই থামেননি এ ইংলিশ, মুশফিকের মতো পরিশ্রমী ক্রিকেটার আর কখনোই দেখেননি বলেও জানালেন ফস্টার, ‘আমি বলেছি যে সে ৩৬০ ডিগ্রি খেলোয়াড়। সে মাঠের চারপাশে মারতে পারে। এ ধরনের ক্রিকেটারকে বল করা খুব কঠিন। আপনি জানেন কিছু ক্রিকেটার আছে যারা মিড-উইকেটে খুব শক্তিশালী কিংবা মিড-অফে। কিন্তু মুশি উইকেটের পেছনেও মারতে পারে। আবার সামনেও পারে। এসব ভাগ্যের কারণে আসে না। এটা এসেছে অনেক অনুশীলন ও পরিশ্রমের কারণে। এবারই তার সঙ্গে প্রথম কাজ করছি। তার মতো কঠোর পরিশ্রমী খেলোয়াড় আমি আর কখনোই দেখিনি।’

রাজশাহী রয়্যালসের ছুঁড়ে দেওয়া বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় এদিন ৯৬ রানের দানবীয় এক ইনিংস খেলেন মুশফিক। বল মোকাবেলা করেছেন মাত্র ৫১টি। ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি। শুরুতে চাপে পড়া খুলনার ইনিংস রাইলি রুশোকে নিয়ে ৭২ রানের জুটি গড়ে মেরামত করেন। পরে শামসুর রহমান শুভকে নিয়ে ৬১ রানের আরেকটি জুটি গড়ে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন মুশি। পুরো ইনিংসে শেষ শটটি ছাড়া আর কোনো ভুল করেননি মুশফিক। আর সেটাও হয়েছে সেঞ্চুরি করার লক্ষ্যের কারণে। উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচে পরিণত হওয়া ডেলিভারিতে বাউন্ডারি পেলে ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি শতকটা পেতে পারতেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।

Comments

The Daily Star  | English

Tajia procession marks holy Ashura in Dhaka amid tight security

Crowds began gathering at the site from the early hours, with many attending alongside their families and children

2h ago