বিপিএলে বল করার সুযোগ মেলে না জাতীয় দলের বোলারের
এক সময় ছিলেন জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য। ছিলেন দলের অন্যতম প্রধান স্পিনার। মাঝে নানা কারণে বাদ পড়ে গেলেও আরাফাত সানি আবার ফিরেছেন বাংলাদেশ দলে। সবশেষ ভারত সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে ছিলেন তিনি। সেই সানি-ই এবার বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ম্যাচে একাদশে থেকেও বল করার সুযোগ পেলেন না! কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ব্যাটিং করার সুযোগ পেলেও বল হাতে দেখা যায়নি রংপুর রেঞ্জার্সের বাঁহাতি স্পিনারকে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কুমিল্লার বিপক্ষে তেমন কোনো লড়াই ছাড়াই হেরে গেছে সানির দল রংপুর। অথচ আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৮১ রানের বড় সংগ্রহ গড়েছিল দলটি। ছোট মাঠ-উইকেট ব্যাটিং স্বর্গ, তবুও ২০ ওভারের ম্যাচ বিবেচনায় স্কোরটা স্বল্প নয়। আর বড় রান তাড়ায় বরাবরই কিছুটা চাপে থাকে প্রতিপক্ষ। কিন্তু কুমিল্লার ব্যাটসম্যানদের তেমন কোনো পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি রংপুরের বোলাররা। ২ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখে অনায়াসে ম্যাচ জিতে নিয়েছে কুমিল্লা।
এমন নয় যে ইনজুরিতে পড়েছেন সানি কিংবা দলের বাকি বোলাররা খুব ভালো করছিলেন। পেস অলরাউন্ডার লুইস গ্রেগরি দেদারসে রান বিলিয়েছেন। অনিয়মিত বোলার টম অ্যাবেল করেছেন গুরুত্বপূর্ণ শেষ ওভার। আনকোরা স্পিনার আল-আমিন জুনিয়রকে দিয়েও বল করিয়েছেন রংপুরের অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। তবুও সানিকে আনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি তিনি। কেন করেননি তার সঠিক কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারলেন না দলটির ম্যানেজার খন্দকার সাইদুল ইসলাম ইফিও, ‘ঠিক জানি না কেন অধিনায়ক ওকে (সানি) দিয়ে বল করায়নি। তবে ওর কোনো ইনজুরি বা অন্য কোনো সমস্যা নেই।’
অথচ আঁটসাঁট বোলিং করায় বেশ সুনাম রয়েছে সানির। এমনকি বিপিএলে সবচেয়ে কৃপণ বোলিংয়ের রেকর্ডটিও তার। ২০১৬ সালে রংপুর রাইডার্সের হয়ে খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে ২.৪ বল করে কোনো রান না দিয়েই উইকেট নিয়েছিলেন ৩টি! দারুণ নজির স্থাপন করে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিলেন সানি।
সেই সানির সামনেই এদিন ৪ ওভারে ৫৫ রান দিয়েছেন গ্রেগরি। আর ২.৪ ওভার বল করে ২১ রান খরচ করেছেন অ্যাবেল। আল-আমিন জুনিয়রের করা ইনিংসের প্রথম ও তার একমাত্র ওভার থেকে কুমিল্লা নিয়েছে ১৭ রান।
সময় গড়িয়েছে, হয়েছে অনেক অদল-বদল। ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই চলছিল সানির। ক্রিকেটের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে দেশের অন্যতম প্রধান ভরসা ছিলেন তিনি। বাংলাদেশের বহু জয়ে রেখেছেন প্রত্যক্ষ অবদান। এরপর বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটি ধরা পড়ায় বদলে গেছে পথচলার অনেক কিছু। অ্যাকশন বদলে ফিরলেও শুরুতে আগের মতো কার্যকরী ছিলেন না সানি। তবে ধীরে ধীরে নিজেকে ফিরে পেয়েছেন। জাতীয় দলেও জায়গা করে নিয়েছেন। কিন্তু এমন অদ্ভুত অভিজ্ঞতার স্বাদ নেওয়ার প্রত্যাশা নিশ্চয়ই কখনও করেননি সানি!
Comments