চারশো রানের বিনোদনে ভরা ম্যাচে জিতল মাহমুদউল্লাহ’র দল

২২১ রানের জবাবে ২০৫ । দুই দল মিলে এলো ৪২৬ রান। বিপিএলের ইতিহাসে এক ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে সর্বোচ্চ রানের নজির। যিনিই ব্যাট করতে নামছেন, কমবেশি আনতে পারছেন দ্রুত রান, দিতে পারছেন বিনোদন। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের রাত যেন হয়ে উঠল চার-ছক্কায় উত্তাল। লেন্ডল সিমন্স, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ইমরুল কায়েসরা বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে চড়লেন রানের পাহাড়ে। তার জবাবে কম গেল না মাশরাফি মর্তুজাদের ঢাকা প্লাটুনও। ব্যাটসম্যানদের এমন খুনে মেজাজের দিনেও নিজেকে আলাদা করলেন এক পেসার।
mahmudullah
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

২২১ রানের জবাবে  ২০৫ । দুই দল মিলে এলো  ৪২৬ রান। বিপিএলের ইতিহাসে এক ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে সর্বোচ্চ রানের নজির।  যিনিই ব্যাট করতে নামছেন, কমবেশি আনতে পারছেন দ্রুত রান, দিতে পারছেন বিনোদন। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের রাত যেন হয়ে উঠল চার-ছক্কায় উত্তাল। লেন্ডল সিমন্স, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ইমরুল কায়েসরা বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে চড়লেন রানের পাহাড়ে। তার জবাবে কম গেল না মাশরাফি মর্তুজাদের ঢাকা প্লাটুনও। ব্যাটসম্যানদের এমন খুনে মেজাজের দিনেও নিজেকে আলাদা করলেন এক পেসার। 

সিমন্স-মাহমুদউল্লাহর ঝড়ো ফিফটি, ইমরুল-ওয়ালটনদের ঝড়ের জবাবে মুমিনুল হকের ফিফটির সঙ্গে জাকের আলি, থিসারা পেরেরা, মাশরাফিদের তাণ্ডব।  সেয়ানে সেয়ানে লড়াই যেমন হওয়ার কথা হলো যেন ঠিক তেমনই। চট্টগ্রামের বাইশগজকে বোলারদের দুঃস্বপ্ন বানিয়ে ছাড়লেন দুদলের ব্যাটসম্যানরা। তবে বোলারদের এমন দিনেও একজন ছিলেন আলাদা। চট্টগ্রামের বাঁহাতি পেসার মেহেদী হাসান রানা এদিনও দিলেন সামর্থ্যের প্রমাণ। ২৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ব্যবধান গড়েছেন তিনিই।

১৬ রানের এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের চারটা জিতে টেবিলের উপরেই রইল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

বিপুল রান তাড়ায় এনামুল হক বিজয় শুরুতেই নেই। তিনে নামা জাকের আলি অনিক নিলেন তাণ্ডবের দায়িত্ব। মুমিনুল হককে নিয়ে ৩৭ বলে ৫২ রানের জুটিতে তাই শুরুটা মন্দ হলো না ঢাকার। ১৯ বলে ২৭ করে মুক্তার আলির বলে জাকের ফেরার পর লরি ইভান্স নেমেও রাখলেন রানের গতি।

১১ বলে ১৭ করে তিনিও মুক্তারের শিকার। আসিফ আলি নেমেও বল নষ্ট করেননি। ৬ বলে ২ ছয়ে ১৫ করা আসিফও মুক্তারের শিকার।

শহিদ আফ্রিদি নেমে এদিনও ব্যর্থ। বরং চমক দেখালেন ঢাকা অধিনায়ক মাশরাফি। নাসির হোসেনের এক ওভারে তিন ছয়, এক চারে ২৩ রান তুলে আউট হন তিনি। তবে রান-বলের ব্যবধান কমিয়ে এনে দেন সহনীয় মাত্রায়। 

শেষ পর্যন্ত টিকে থিসারা পেরেরা যদিও মেলাতে পারেননি সেই সমীকরণ। এই শ্রীলঙ্কানের ২৭ বলে ৪৭ রানের ইনিংসের সঙ্গে শেষ দিকে যে সঙ্গ দেওয়ার আর কেউই ছিলেন না।

এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নিয়ে যেন বিপদই ডাকলেন প্লাটুন কাপ্তান মাশরাফি। শুরুতে লেন্ডন সিমন্স আর আবিস্কা ফার্নেন্দো। মাঝে ইমরুল কায়েস আর মাহমুদউল্লাহ। শেষটা করলেন চ্যাডউইক ওয়ালটন।

বৃষ্টির মতো চার-ছয়ের ঝড় বইল ঢাকার উপর। উদ্বোধনী জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে মাত্র ৪.৪ ওভারেই আনল ৫১ রান। ১৩ বলে ২৬ করে ফার্নেন্দো থামার পরও চালিয়ে গেলেন সিমন্স। খুনে হয়ে উঠার পর আবার আগের দিনের মতো এক অদ্ভুতুড়ে রান আউটে আত্মাহুতি তার।

৩৬ বলে ৫৭ করে সিমন্স বিদায় নিলে ঝড় থামেনি। ইমরুল কায়েস ছিলেন তেতে। সঙ্গে যোগ দেওয়া মাহমুদউল্লাহর ব্যাট হয়ে উঠল উত্তাল। মাত্র ২৭ বলে দুজনের ৬২ রানের জুটি হয়ে গেল। ২৪ বলে ৪০ করে থামেন ইমরুল। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে খুঁড়াতে থাকা মাহমুদউল্লাহ দ্রুত সিংগেল নিতে পারছিলেন না, দুই রানের জায়গায় তাকে নিতে হচ্ছিল এক রান। সবটা পুষিয়ে দেন চার-ছয়ে।

মাত্র ২৮ বলে ৫৯ করে ক্যাচ দেন চ্যালেঞ্জার্স অধিনায়ক। শেষটায় ১৮ বলে ২৭ করে দলের সংগ্রহ দুশো ছাড়িয়ে অনেকটা এগিয়ে নেন ওয়ালটন। তার শেষের ওই রান যে কতটা দামি ম্যাচ শেষে বোঝা গেল তা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ২২১/৪ (সিমন্স ৫৭, ফার্নেন্দো ২৬, ইমরুল ৪০ , মাহমুদউল্লাহ ৫৯, ওয়ালটন ২৭*, নুরুল ৭* ; মাশরাফি ৩/৪২ , সালাউদ্দিন ১/২৭,  হাসান ২/৫৫, মেহেদী ০/৩৩, পেরেরা ০/৩৩, আফ্রিদি ০/৩০ )

ঢাকা প্লাটুন: ২০ ওভারে ২০৫ (মুমিনুল ৫২, এনামুল ১, জাকের ২৭, ইভান্স ১৭, আসিফ ১৫, থিসারা ৪৭, আফ্রিদি ৯, মাশরাফি ২৩, মেহেদী ২, হাসান ০, শাকিল ০*; নাসুম ০/২৮ , রানা ৩/২৩, নাসির ২/৬০, মুক্তার ৩/৪২, উইলিয়ামস ২/৪৮)।

ফল: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ১৬ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মেহেদী হাসান রানা।

Comments

The Daily Star  | English

Onions sting

Prices of onion increased by Tk 100 or more per kg overnight as traders began stockpiling following the news that India had extended a virtual restriction on its export.

6h ago