একযোগে ভারতের ১০ শহরে বিক্ষোভের প্রস্তুতি

Protest in India
ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আসামের গোয়াহাটিতে বিক্ষোভ। ছবি: এপি ফাইল ফটো

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভারতের চলমান আন্দোলন আরও বেগবান হচ্ছে। আজ (১৯ ডিসেম্বর) নতুন করে দেশটির ১০টির বেশি শহরে একযোগে বিক্ষোভের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভুবনেশ্বরে আজ সকালে বিক্ষোভ-সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়াও, ভূপালে দুপুর ২টায়, চেন্নাইয়ে দুপুর ৩টায়, হায়দরাবাদে বিকাল ৪টায় এবং পুনেতে বিকাল সাড়ে ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করা হয়েছে।

গতকাল রাজধানী দিল্লিতে পুলিশ বিক্ষোভের অনুমতি দেয়নি। এছাড়াও, লখনৌতেও কোনও বড় সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুসহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গাতেও বিক্ষোভ সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।

নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আজ দিল্লিতে একটি সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি না মেলায় বাতিল হয়ে গিয়েছে সেটি। লালকেল্লা থেকে ওই প্রতিবাদ মিছিল হওয়ার কথা ছিলো। পুলিশ জানায়, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কায় ওই মিছিল বা সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।”

আজ সকালে বেঙ্গালুরুতেও দুটি বিক্ষোভ মিছিলের পরিকল্পনা করা হয়েছিলো। বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার ভাস্কর রাও বলেছেন, “এর আগে বিক্ষোভ চলাকালে পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে মানুষ আহত হয়েছেন এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। সুতরাং আমরা এই মিছিলটিকে অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

বেঙ্গালুরুতে ১৯ তারিখ সকাল ৬টা থেকে ২১ তারিখ মধ্যরাত পর্যন্ত ওই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পুলিশ অনুমতি না দিলেও, ‘মিছিল হচ্ছে’, ‘আমরা ভারতের মানুষ’ ইত্যাদি নানা বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তাই এটি এখনও পরিষ্কার নয় যে বিক্ষোভকারীরা ওই সমাবেশ উপলক্ষে দিল্লির লালকেল্লায় একত্রিত হওয়ার চেষ্টা করবেন কী না।

উত্তরপ্রদেশে বিক্ষোভ-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে রাজ্য পুলিশ প্রধান টুইটার বার্তায় বলেছেন, “রাজ্যে ১৪৪ ধারা কার্যকর রয়েছে এবং ১৯ ডিসেম্বর কোনও সমাবেশের ব্যাপারে অনুমতি দেওয়া হয়নি। দয়া করে এই ধরণের সমাবেশে কেউ অংশ নেবেন না। অভিভাবকদের অনুরোধ করা হচ্ছে তারা যেনো তাদের সন্তানদের ওই মিছিল বা সমাবেশে না যাওয়ারই পরামর্শ দেন।”

এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের বেশ কয়েকটি স্থানে বিভিন্ন সংস্থা, রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শহর, স্থান ও সময় উল্লেখ করে সমাবেশ সংগঠিত করার চেষ্টা করছে।

উল্লেখ্য, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনটির সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে ৫৯টি আবেদন জমা পড়ে। আবেদনে বলা হয়, ওই আইনের প্রয়োগে স্থগিতাদেশ জারি করুক শীর্ষ আদালত। তবে আদালত আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেছে, ‘এই আইনটি স্থগিত রাখার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে’ আগামী ২২ জানুয়ারি।

নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের মধ্যে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে যেসব অমুসলিম মানুষ ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তারা এবার ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। নতুন আইনটি ধর্মের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হয়েছে যা ভারতীয় সংবিধানের মূল কাঠামোর পরিপন্থি।

এই আইন নাগরিকদের জীবন ও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে বলে ভারতজুড়ে সহিংস বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
Global fashion brands are reaping triple-digit profits on Bangladeshi garments

Fast fashion, fat margins: How retailers cash in on low-cost RMG

Global fashion brands are reaping triple-digit profits on Bangladeshi garments, buying at $3 and selling for three to four times more. Yet, they continue to pressure factories to cut prices further.

13h ago