মুশফিকদের টানা তৃতীয় জয়ে দুরন্ত শফিউল, আগ্রাসী রুশো

khulna tigers
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

প্রথম জয়ের খোঁজে থাকা রংপুর রেঞ্জার্সকে অল্প রানে আটকে দিলেন শফিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ আমির। জবাব দিতে নেমে ঝড় তুললেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও রাইলে রুশো। প্রতিপক্ষ বোলারদের কচুকাটা করলেন দুজনে। গুরবাজ ফিরলেও আসরে নিজের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়ে খুলনা টাইগার্সকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন রুশো।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মোহাম্মদ নবির রংপুরকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে মুশফিকুর রহিমের খুলনা। ব্যাটিং-বান্ধব উইকেটে ১৩৮ রানের মামুলি লক্ষ্য ৪৫ বল হাতে রেখে পেরিয়ে যায় তারা। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে তিন ম্যাচ খেলে সবকটিতে জিতল খুলনা। অন্যদিকে, চার ম্যাচ খেলে সবকটিতে হারের দেখা পেল রংপুর।

সহজ লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করেন গুরবাজ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধকে ছয় মেরে দুবার মাঠছাড়া করেন। ওপেনিংয়ে তার সঙ্গী নাজমুল হোসেন শান্ত অবশ্য আবার হতাশ করেন। আগের দুই ম্যাচে ৪ ও ০ করা এই বাঁহাতি এদিন করেন ১ রান। মোস্তাফিজুর রহমানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে দেন ক্যাচ।

তবে তরুণ গুরবাজের তাণ্ডব চলতে থাকে। উইকেটে এসে রুশোও আরেক প্রান্তে শুরু করেন ঝড়। এলোমেলো হয়ে যায় রংপুরের বোলিং আক্রমণ। নবির করা চতুর্থ ওভার থেকে গুরবাজ আদায় করে নেন ১৩ রান। পরের ওভারে আরাফাত সানিকে ৪টি চার মারেন রুশো।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন রুশো। তাসকিন আহমেদের বলে হাঁকান ১ চার ও ২ ছয়। ওই ওভার থেকে ইনিংসের সর্বোচ্চ আসে ১৯ রান। ৬ ওভার শেষে খুলনার সংগ্রহ দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৮৩ রান। বিপিএলের ইতিহাসে পাওয়ার প্লেতে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ।

mohammad naim run out
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

পেসার মুগ্ধর বলে গুরবাজ ফিরলে ভাঙে রুশোর সঙ্গে তার ৬১ রানের জুটি। ২২ বলে ১ চার ও ৪ ছক্কায় ৩৭ রান করেন এই আফগান। এরপর মুশফিককে নিয়ে আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটি গড়ে বাকি কাজটা সারেন রুশো। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তার ব্যাট হয়ে ওঠে আরও ক্ষুরধার। ২৩ বলে ফিফটি পূরণ করা এই দক্ষিণ আফ্রিকান অপরাজিত থাকেন ৬৬ রানে। তার ৩১ বলের ইনিংসে ছিল ৯ চার ও ২ ছয়। মুশফিক করেন ১৭ বলে অপরাজিত ১৭ রান।

রংপুরের সব বোলারই বেদম মার খান। মোস্তাফিজ ২ ওভারে ১৮ রান দেওয়ার পর আর বোলিংয়ে আসেননি। সবচেয়ে বড় ঝড়টা যায় তাসিকনের ওপর দিয়ে। ৩ ওভারে ৩৯ রান খরচ করেন এই পেসার।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা রংপুর শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হওয়া ওপেনার নাঈম শেখ একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন অনেকটা সময় পর্যন্ত। তার বিদায়ের পর দলকে টানেন কেবল ফজলে মাহমুদ রাব্বি।

মোহাম্মদ আমির-শফিউল ইসলামদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের কোনো জবাব যেন জানা ছিল না রংপুরের ব্যাটসম্যানদের। মোহাম্মদ শাহজাদ ২ চারে ১১ রান করে পরাস্ত হন আমিরের গতিময় শর্ট বলে। তিনে নামা ক্যামেরন ডেলপোর্টকে নিজের প্রথম বলেই ফেরান শফিউল। এরপর নাদিফ চৌধুরীকেও শর্ট বলে কুপোকাত করেন তিনি। ৯ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি নাদিফ।

সপ্তম ওভারে ৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলা দলটি এরপর পায় ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩৯ রানের জুটি। ফজলে মাহমুদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে নাঈম আউট হন ব্যক্তিগত ৪৯ রানে। ৩২ বলের ইনিংসে ৫ চার ও ২ ছক্কা হাঁকান এই তরুণ বাঁহাতি।

shafiul islam
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

রংপুর অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি এদিনও ব্যর্থ হন। ষষ্ঠ উইকেটে ফজলে মাহমুদ ও লুইস গ্রেগরি ৩৮ রান যোগ করলেও গতি আনতে পারেননি। রানের চাকা আটকে রাখেন আমির-শফিউল। ৩৩ বলে সমান ২টি করে চার ও ছয়ে ৪২ রান করা ফজলে মাহমুদ হন শফিউলের তৃতীয় শিকার। গ্রেগরির ব্যাট থেকে আসে ২০ বলে ২২ রান।

খুলনার হয়ে ২১ রানে ৩ উইকেট নেন ম্যাচসেরা শফিউল। নিজের প্রথম ওভারটি মেডেন পান তিনি। বাঁহাতি আমির ২ উইকেট শিকার করেন ২৪ রানে। তরুণ পেসার শহিদুল ইসলামও সমান উইকেট পান ৩২ রানের বিনিময়ে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রংপুর রেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৩৭/৯ (শাহজাদ ১১, নাঈম ৪৯, ডেলপোর্ট ৪, নাদিফ ০, ফজলে মাহমুদ ৪২, নবি ৪, গ্রেগরি ২২, তাসকিন ২, মোস্তাফিজ ০, সানি ১*; আমির ২/২৪, ফ্রাইলিঙ্ক ০/৯, মিরাজ ০/২৫, শফিউল ৩/২১, শহিদুল ২/৩২, রবিউল ০/২৫)

খুলনা টাইগার্স: ১২.৩ ওভারে ১৩৮/২ (গুরবাজ ৩৭, শান্ত ১, রুশো ৬৬*, মুশফিক ১৭*; মোস্তাফিজ ১/১৮, মুগ্ধ ১/২৮, নবি ০/২১, সানি ০/২৮, তাসকিন ০/৩৯)।

ফল: খুলনা ৮ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচসেরা: শফিউল ইসলাম।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda urges unity, quick action to institutionalise democracy

She also demanded a comprehensive list of victims of abduction, murder, and extrajudicial killings

33m ago