ভারতে কারফিউ ভেঙে বিক্ষোভ, ইন্টারনেট বন্ধ

Jama-Mosque-1.jpg
২০ ডিসেম্বর ২০১৯, দিল্লির জামা মসজিদ প্রাঙ্গণে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ। ছবি: হিন্দুস্থান টাইমস

ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে উত্তাল রয়েছে দিল্লি। কারফিউ, পুলিশের বাধা সত্ত্বে আজও (২০ ডিসেম্বর) সেখানে বিক্ষোভ হয়েছে। দুপুরে জুমার নামাজের পর দিল্লির জামা মসজিদ প্রাঙ্গণে হাজার হাজার মানুষকে জড়ো হতে দেখা যায়।

দলিতদের সংগঠন ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের নেতৃত্বে মিছিল করে তারা যন্তরমন্তরের দিকে রওনা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে চন্দ্রশেখর আজাদকে পুলিশ আটক করে গাড়িতে তুলতে চাইলেও, পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে আবারও মিছিলে যোগ দেন তিনি।

দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, তারা জামা মসজিদের বাইরে কোনো প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করার অনুমতি দেয়নি। দিল্লি মেট্রোরেল কর্পোরেশন (ডিএমআরসি) জানিয়েছে, জামা মসজিদ, চাওরি বাজার এবং লাল কেল্লা মেট্রো স্টেশনগুলিতে ঢোকা ও বেরোনোর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ট্রেনগুলি সেখানে থামবে না।

তা সত্ত্বেও ওই এলাকায় বিশাল জমায়েত দেখা গেছে। গোটা এলাকায় ড্রোন ক্যামেরার নজরদারি চালাচ্ছে দিল্লি পুলিশ।

বিক্ষোভের জেরে উত্তরপ্রদেশ এবং কর্ণাটকের একাধিক জায়গায় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ রাত দশটা পর্যন্ত এই ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, সকালে শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাসভবনের বাইরে বিক্ষোভ করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন মহিলা কংগ্রেসের অনেকে। আটক করা হয়েছে শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়কেও।

গতকাল বিক্ষোভ চলাকালীন লখনউয়ের মাদেগঞ্জে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ বাধে। সেসময় একটি পুলিশ ফাঁড়ির বাইরে একাধিক গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। লখনউতে ১৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সমাজবাদী পার্টির সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান এবং ফিরোজ খান নামের দলের আর এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ইতিমধ্যে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি চত্বর সংলগ্ন এলাকায়। সেখানে লাল সতর্কতা জারি করেছেন জেলাশাসক চন্দ্রভূষণ সিংহ।  ১০ কোম্পানি সশস্ত্র বাহিনী ও চার কোম্পানি র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (র‌্যাফ) মোতায়েন করা হয়েছে। আগামীকাল পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি চলবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের অতিরিক্ত স্বরাষ্ট্র মুখ্যসচিব অবিনাশ অবস্তি।

কর্ণাটকের মেঙ্গালুরুতে তিনটি জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলকে সংবাদ সংগ্রহে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাতে উত্তেজনা ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য গতকাল রাত ১০টা থেকে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে সেখানে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

উত্তরপ্রদেশ, মেঙ্গালুরু ছাড়াও, ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়েছে চেন্নাইয়েও। বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় সেখানে ৬০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে। অভিনেতা সিদ্ধার্থ, সঙ্গীতশিল্পী চিত্র কৃষ্ণ এবং রাজনীতিক তিরুমাভালাভনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত বুধবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে স্বাক্ষর করার পরেই ভারত জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। ইতিমধ্যে মেঙ্গলুরুতে পুলিশের গুলিতে দুজন ও লখনউতে একজন নিহত এবং আরও তিনজন আহত হয়েছেন। এর আগে, আসামে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন।

Comments

The Daily Star  | English

Central bank at odds with BPO over Nagad’s future

The discord became apparent after Faiz Ahmed Taiyeb, special assistant to the chief adviser with authority over the Ministry of Posts, Telecommunications and IT, sent a letter to the BB governor on May 12 and posted the letter to his Facebook account recently

1h ago