তাসকিন-মোস্তাফিজের বেদম মার খাওয়া উইকেটেও দুর্দান্ত শফিউল
ছুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসে শফিউল ইসলামের বোলিং দেখে মুগ্ধতার কথা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তার এই প্রশংসার প্রতিদান আবারও দিলেন এই ডানহাতি পেসার। অন্যদিকে, বিবর্ণ দশার বৃত্ত ভাঙতে আবারও ব্যর্থ হলেন মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ব্যাটিং-বান্ধব উইকেটে বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং করে খুলনা টাইগার্সের শফিউল হলেন ম্যাচসেরা। চার ওভারের কোটা পূর্ণ করে একটি মেডেনসহ মাত্র ২১ রানে নিলেন রংপুর রাইডার্সের তিন উইকেট। বিপরীতে, আবারও হতাশ করলেন মোস্তাফিজ ও তাসকিন। রংপুরের দুই পেসার খেলেন বেদম মার।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ইনিংসের প্রথম ওভারে বল হাতে নিয়ে তিন ওয়াইড দেন মোস্তাফিজ। পরের ওভারে নাজমুল হোসেন শান্তকে ফেরালেও খরচ করেন নয় রান। দুই ওভারে ১৮ রান দেওয়া বাঁহাতি পেসারকে আর আক্রমণে আনেননি রংপুর অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি।
বিপিএলের এবারের আসরে মোস্তাফিজের পড়তি ফর্মের দেখাই মিলছে। এখন পর্যন্ত চার ম্যাচ খেললেও তার নামের পাশে উইকেট মোটে চারটি। ওভারপ্রতি রান দেওয়ার গড় ৮.৩২।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আক্রমণে আসেন তাসকিন। করেন দলের হয়ে সবচেয়ে খরুচে ওভার। তার ওই ওভার থেকে দুই ছক্কা ও এক চারে ১৯ রান তুলে নেন খুলনার দক্ষিণ আফ্রিকান তারকা রাইলে রুশো।
পরে আরও দুই ওভার করেন তাসকিন। তবে লাইন-লেংথে নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বেহাল দশার পরিবর্তন হয়নি। সবমিলিয়ে তিন ওভারে ৩৯ রান দিয়ে উইকেটশূন্য এই ডানহাতি গতিময় বোলার।
এবারের আসরে টানা তিন ম্যাচ খেলে উইকেটের দেখা পেলেন না তাসকিন। তবে প্রতিপক্ষকে রান উপহার দিয়েই যাচ্ছেন তিনি। আগের ম্যাচে একমাত্র ওভারে দিয়েছিলেন ১৪ রান। তার আগে দুই ওভারে খরচ করেছিলেন ২৩।
দলের সেরা দুই পেসারের এমন যখন হাল, তখন ম্যাচের ফল কী হলো তা অনুমান করে নিতে কষ্ট হয় না। রংপুরকে টানা চতুর্থ হারের স্বাদ দিয়ে ৮ উইকেটে জিতল মুশফিকুর রহিমের খুলনা। ব্যাটিং স্বর্গে রহমানউল্লাহ গুরবাজ-রুশোর তাণ্ডবে ১৩৮ রানের মামুলি লক্ষ্য তারা পেরিয়ে গেল ৪৫ বল হারে রেখে।
অথচ এই একই উইকেটে দুপুরে কী দুর্দান্ত বোলিং-ই না করলেন শফিউল। পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমিরের সঙ্গে জুটি বেঁধে অল্প রানে আটকে দিলেন রংপুরকে। মুভমেন্ট পেলেন, আচমকা শর্ট বলে বিপাকে ফেললেন প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আক্রমণে এসে প্রথম বলেই উইকেট আদায় করে নেন শফিউল। ক্যামেরন ডেলপোর্টকে বিদায় করে পুরো ওভারে দিলেন না কোনো রান।
পরের ওভারে ছটফট করতে থাকা নাদিফ চৌধুরী হন শফিউলের দ্বিতীয় শিকার। এই উইকেট দিয়ে সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে শততম উইকেট পূরণ করেন তিনি। আর নিজের শেষ ওভারে রংপুরের ইনিংস টেনে নিতে থাকা ফজলে মাহমুদ রাব্বিকে পাঠান সাজঘরে।
তাসকিন-মোস্তাফিজদের নিষ্প্রভ থাকার দিনে খারাপ করেননি দুই স্থানীয় তরুণ পেসার শহিদুল ইসলাম ও মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধও। খুলনার ২৪ বছররের শহিদুল প্রথম দুই ওভারে বেশি রান দিলেও শেষ ওভারটি করেন দারুণ। মাত্র চার রান দিয়ে নেন দুই উইকেট।
১৯ বছর বয়সী মুগ্ধর বিপিএল অভিষেকই হয় আগের ম্যাচে। রংপুরের এই ডানহাতি গতি তারকা এদিন তিন ওভারে ২৮ রানে নেন এক উইকেট।
Comments