সেঞ্চুরিয়ানের স্মৃতি চট্টগ্রামে ফিরিয়ে আনলেন রুশো

২৭৬ বলে ৩০০ রান। প্রথম শ্রেণির ম্যাচে এমন স্কোরকে রীতিমতো টর্নেডো ইনিংসই বলা হয়। সেঞ্চুরিয়ানে নয় বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেটে ঈগলসের হয়ে টাইটান্সের বিপক্ষে সেই ইনিংসটি খেলেছিলেন রাইলি রুশো। পুরো ইনিংসেই আগ্রাসী ব্যাটিং করেছিলেন। কিন্তু মেজাজটা ছিল খুব ঠাণ্ডা। যেন ঠাণ্ডা মাথায় প্রতিপক্ষকে খুন করে ফেলা। সেদিন সবকিছুই ঠিক হচ্ছিল রুশোর।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

২৭৬ বলে ৩০০ রান। প্রথম শ্রেণির ম্যাচে এমন স্কোরকে রীতিমতো টর্নেডো ইনিংসই বলা হয়। সেঞ্চুরিয়ানে নয় বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেটে ঈগলসের হয়ে টাইটান্সের বিপক্ষে সেই ইনিংসটি খেলেছিলেন রাইলি রুশো। পুরো ইনিংসেই আগ্রাসী ব্যাটিং করেছিলেন। কিন্তু মেজাজটা ছিল খুব ঠাণ্ডা। যেন ঠাণ্ডা মাথায় প্রতিপক্ষকে খুন করে ফেলা। সেদিন সবকিছুই ঠিক হচ্ছিল রুশোর।

নয় বছর পর এদিন আবার ঠাণ্ডা মাথায় রুশো খুন করলেন রংপুর রেঞ্জার্সকে। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) তার খুনে ব্যাটিংয়ে স্রেফ উড়ে গেলেন মোস্তাফিজুর রহমানরা। লক্ষ্যটাও খুব বড় ছিল না। ১৩৮ রানের। এমন লক্ষ্যে দেখেশুনেই ব্যাট করে থাকেন ক্রিকেটাররা। রুশোও ঠিক তাই করলেন। অথচ ম্যাচ শেষে তার স্ট্রাইক রেট দুইশরও বেশ উপরে! ৩১ বলের ইনিংসে করেছেন হার না মানা ৬৬ রান। ৯টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কাও মেরেছেন। কিন্তু কখনোই দেখা যায়নি তেড়েফুঁড়ে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে জোর দিয়ে খেলতে। বলের মেজাজ-মর্জি বুঝে টাইমিংয়ে ভর করে ঠেলে দিয়েছেন ফাঁকায়। তাতেই বাউন্ডারি মিলেছে।

এমন নিখুঁত ইনিংসের পর সেঞ্চুরিয়ানের সেই স্মৃতি আওড়ালেন রুশো, ‘আমি আজকে এমন দিনে ছিলাম যেদিন আপনার সব বল মাঝ ব্যাটে আসবে। আমি ভেবেছিলাম যে আমার এখন অনেক সময় আছে যা আমি অনেক দিন পাইনি। শেষবার আমি এমন ভালো অনুভব করছিলাম যখন চার দিনের ম্যাচে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলাম। সবকিছুই এদিন ব্যাটের মাঝে লেগে ঠিকঠাক হচ্ছিল।’

সেই স্মৃতি মনে করলেও তার ব্যাটিংয়ে গোপন কোনো রহস্য নেই বলে জানালেন বাঁহাতি রুশো, ‘এর পেছনে কোনো রহস্য নেই। আমি বিশ্বাস করি, অনেক চেষ্টা করে কাজটা করার চেয়ে তা-ই করা উচিৎ যা উপভোগ করা যায়। সৌভাগ্য যে আমি এমন একটি দল পেয়েছি যারা আমার সঙ্গে রয়েছে। আমি ক্রিকেটটা উপভোগ করে ও ভালোবেসেই খেলি। তাই এখানে গোপন কিছু নেই। আমি খুব শান্ত ও নির্ভার থাকি। এটা আমার দিন হলে আমার দিন। না হলে পরের ম্যাচে হবে। সুন্দর ও শান্ত থাকাই আমার পদ্ধতি।’

তবে প্রতিপক্ষও যে রুশোকে খুব শক্ত পরীক্ষায় ফেলতে পেরেছে তা-ও নয়। টানা হারের বৃত্তে রয়েছে রংপুর। দেশ সেরা পেসার মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমে দলে থাকলেও ছন্দে নেই। তাই আত্মবিশ্বাসটা বেশিই ছিল রুশোর, ‘মোমেন্টাম না থাকলে কাজটা খুব কঠিন। তারা এ নিয়ে চারটি ম্যাচ হারল। তাই মোমেন্টাম পাওয়া এবং সঠিক পেসে বল করা খুব কঠিন। মোস্তাফিজ বেশ গতিময় কিন্তু তাদের কাউকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে, মোমেন্টাম বদলাতে হবে।

শুধু এদিনই নয়, প্রতি ম্যাচেই ধারাবাহিকভাবে পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন রুশো। প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে হার না মানা ৬৪ রান করার পর রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে করেন ৪২ রান। আর এদিন তো আরও দুর্ধর্ষ তিনি! আসলে বিপিএলের গত মৌসুম থেকেই দারুণ ছন্দে আছেন রুশো। সেবার ৫৫৮ রান করেছিলেন যা বিপিএলের এক মৌসুমে কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। এবারও যেভাবে ব্যাট করছেন তাতে হয়তো নিজেকে আরও ছাড়িয়ে যাবেন তিনি!

Comments

The Daily Star  | English

Former DMP commissioner Asaduzzaman Mia arrested

Rapid Action Battalion has arrested former Dhaka Metropolitan Police (DMP) commissioner Asaduzzaman Mia from the capital's Mohakhali area

2h ago