ভারতের নাগরিকত্ব আইনের সমালোচনায় মাহাথির

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের সমালোচনা করে বলেছেন, এটি একটি মুসলিম বিদ্বেষী আইন এবং এর কারণেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। ছবি: রয়টার্স

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের সমালোচনা করে বলেছেন, এটি একটি মুসলিম বিদ্বেষী আইন এবং এর কারণেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে।

গতকাল শুক্রবার দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরের একটি সম্মেলনে এসব কথা বলেন মাহাথির। প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, যেখানে ভারতীয়রা একসঙ্গে বসবাস করছেন, সেখানে এই আইনের “প্রয়োজনীয়তা” কতটুকু?

“এই আইনের জন্য মানুষ মারা যাচ্ছে। অথচ ৭০ বছর ধরে তাদের নাগরিকরা একসঙ্গে বাস করছে, তাহলে এতদিন কেন তাদের কোনো সমস্যা  হয়নি?” বলেন মাহাথির।

নাগরিকত্ব সংশোধ আইনের ফলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিবেশী তিন দেশ থেকে “অত্যাচারের” মুখে ভারতে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ হবে, যদি তারা মুসলিম না হন। দেশের সংখ্যালঘু মুসলিমদের কোণঠাসা করতেই এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হয়েছে, অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।

নরেন্দ্র মোদির সরকার ভারতকে একটি হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করতে নতুন আইনটি করেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অথচ দেশটিতে প্রায় ২০ কোটি মুসলিম রয়েছে, যা ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ।

৯৪ বছর বয়সী মাহাথির বলেন, “আমার খুব আফসোস হচ্ছে যে, ভারতকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র দাবি করা হলেও তারা মুসলিমদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিচ্ছে এবং তাড়িয়ে দিতে চাইছে।”

“আমরাও যদি একই কাজ করি, তাহলে কী হবে আমি জানি না। তবে এটুকু বলতে পারি সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে চলা আন্দোলনের মধ্যেই এসব মন্তব্য করলেন মাহাথির। এখন পর্যন্ত এই আন্দোলনে প্রায় ২০ জন নিহত হয়েছে বলে ভারতের গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানী নয়া দিল্লিসহ সারা ভারতজুড়ে বিক্ষোভ হয়েছে। আন্দোলন দমাতে বিভিন্ন শহরে ইন্টারনেট সেবা ও মেট্রো স্টেশন বন্ধ রাখে ভারত সরকার।

দিল্লির একটি মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় হাজার হাজার মানুষ শুক্রবারের নামাজের পরে মিছিল করেছেন। এ সময় তারা মোদি সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।

দেশটির প্রশাসন সব ধরনের জনসমাবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে শত শত মানুষ গ্রেপ্তার করেছে। এর পরও বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে।

জাতিসংঘ ভারতের সংশোধিত আইনকে “বৈষম্যমূলক” বলে আখ্যায়িত করেছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর “ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা” করার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

High Temperature Days: Barring miracle, record of 76yrs breaks today

At least 23 days of this month were heatwave days, which equals the record set in 2019 for the entire year.

10h ago