নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বিজেপির নতুন কৌশল

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে ভারতজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ-প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে নতুন কৌশল নিয়েছে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।
India citizenship protest
২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ভারতের নতুন দিল্লিতে জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে এক শিশুর হাতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) বিরোধী প্ল্যাকার্ড। ছবি: রয়টার্স

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে ভারতজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ-প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে নতুন কৌশল নিয়েছে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।

দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীকে আশ্বস্ত ও নাগরিকপঞ্জি নিয়ে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে গতরাতে (২২ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি কার্টুন চলচ্চিত্র প্রকাশ করেছে বিজেপি।

আজ (২৩ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল দিল্লির রামলীলা ময়দানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন এবং নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বিরোধীদের বক্তব্যকে ‘গুজব’ বলে আখ্যা দেওয়ার পর দলের পক্ষ থেকে এই নতুন প্রচারণা শুরু হয়েছে।

কার্টুন চলচ্চিত্রে দেখা যাচ্ছে, একজন মুসলমান আরেকজনকে বোঝাতে চেষ্টা করছেন যে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মুসলমানদের জন্যে ক্ষতিকর কোনো আইন তৈরি করেনি।

‘প্রধানমন্ত্রী হিংসা ছড়াচ্ছেন’

নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপির নতুন প্রচারণাকে ‘নতুন কৌশল’ হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব আইন এবং নাগরিকপঞ্জি নিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কোনো ‘নতুন বার্তা’ দেননি। বরং সৃষ্টি করেছেন ‘অনিশ্চয়তা’।

এমনকী, প্রধানমন্ত্রী বিতর্কিত বিষয়গুলো সরাসরি বাতিল না করে দিয়ে সেগুলো নিয়ে ‘ধোঁয়াশা’ তৈরি করেছেন। পাশাপাশি করেছেন সংশয় দূর করার অভিনয়।

এক টুইটার বার্তায় কংগ্রেস বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর তার ভাষণে “হিংসা” ছড়িয়েছেন।

সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, “সরকার স্পষ্ট করুক, এনআরসি হবে, না কী হবে না।”

দুই নেতার দুই কথা, কৌশলের অংশ?

দিল্লিতে নির্বাচনী জনসভায় নরেন্দ্র মোদি যখন বলছেন, “সারাদেশে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে কোনো কথা হয়নি” তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলছেন, “২০২৪ সালের মধ্যেই সারাদেশে নাগরিকপঞ্জি হবে।”

বিজেপির দুই শীর্ষ নেতার দুই রকমের কথায় দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, “এটি আসলে বিজেপির নতুন কৌশল।”

কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেছেন, “নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে বলেছেন, এনআরসি নিয়ে আলোচনা হয়নি। তা হলে কি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে সামঞ্জস্য নেই? দল ও সরকারের মধ্যে সংঘাত তৈরি হয়েছে? নাকি দুজনে মিলে দেশবাসীকে বোকা বানাচ্ছেন?”

তৃণমূলের বক্তব্য, “সিএএ এবং এনআরসি হচ্ছে বিজেপির যৌথ প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রী যা-ই বোঝানোর চেষ্টা করুন না কেন, বিজেপি যে এনআরসি গোটা দেশে করবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সুতরাং দেশবাসীকে কে ভুল বোঝাচ্ছেন, তা পানির মতো পরিষ্কার।”

ঝাড়খণ্ডে বিজেপির পরাজয়

আজ (২৩ ডিসেম্বর) ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ও কংগ্রেস জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। রাজ্যের ৮১টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস জোট পেয়েছে ৪১টি আসন। ক্ষমতাসীন বিজেপি পেয়েছে ২৮টি আসন।

বিশ্লেষকদের মন্তব্য, ঝাড়খণ্ড নির্বাচনের এই ফলাফল বুঝিয়ে দিয়েছে ভুল পথে হাঁটছে বিজেপি।

Comments

The Daily Star  | English
Outcomes of Cop28

The consensus and clashes COP28 brought up

It is almost certain that in the end, some progress would be made on some of the contentious issues, but a decision to act on key areas will most likely be kicked down the road once again.

1h ago