লিটন, রাসেলের ঝলকে অনায়াসে জিতল রাজশাহী রয়্যালস
মন্থর উইকেটে আন্দ্রে রাসেল, কামরুল ইসলাম রাব্বির তোপে বিপর্যয়ে পড়া খুলনা টাইগার্সকে দিশা দিয়েছিলেন শামসুর রহমান শুভ। তবে দেড়শোর নিচের ওই পূঁজি একেবারে মামুলি হয়ে যায় লিটন দাসের ব্যাটে। ঝলমলে ফিফটিতে রাজশাহীর ওপেনারই অনায়াস জয়ের পথ তৈরি করে দেন। ছোট এক ঝড় তুলে শেষটায় ব্যাট হাতেও অবদান রাসেলের।
খুলনার দেওয়া ১৪৬ রানের লক্ষ্য ১২ বল বাকি রেখে টপকে ৭ উইকেটে জিতেছে রজশাহী। চার ম্যাচ খেলে এটি তাদের তৃতীয় জয়।
১৪৬ রানের লক্ষ্যটা খুব বড় না। কিন্তু চট্টগ্রামের জহুর আহমেদের উইকেট থেকে এদিন বোলাররা পাচ্ছিলেন সুবিধা। বল আসছিল থেমে। শুরুতে উইকেট পড়লে এই রানই হয়ে যেত অনেক বড়। এমন অবস্থায় দলকে দারুণ শুরু এনে দেন দুই ওপেনার লিটন দাস আর আফিফ হোসেন। চোখ ধাঁধানো শটে বরাবরই মতই মুগ্ধতা ছড়ায় লিটনের ব্যাট, আফিফ দিয়ে যান যোগ্য সঙ্গ। তাদের ঝলমলে জুটিতে লক্ষ্য ক্রমেই হয়ে যায় মামুলি। তাদের কাউকেই ধন্দে ফেলতে পারছিলেন না খুলনার বোলাররা। মনে হচ্ছিল এই জুটিতেই শেষ হয়ে যাবে ম্যাচ।
নবম ওভারে অবশ্য নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটে কাটা পড়েন ১৮ বলে ২২ রান করা আফিফ। ভাঙে ৭৫ রানের জুটি।
খানিক পর ৩৮ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন লিটন। যেভাবে খেলছিলেন ইনিংস হতে পারত আরও বড়, শেষ করেই আসতে পারতেন ম্যাচ। শহিদুলকে পুল করতে গিয়ে শেষ হয় লিটনের ৪৪ বলে ৫৮ রানের ইনিংস। ততক্ষণে অবশ্য ম্যাচ পকেটে রাজশাহীর।
পরে ১৯ বলে ১৬ করে ফেরেন শোয়েব মালিক। কিন্তু অধিনায়ক রাসেল নেমে কোন রকম শঙ্কা বাড়তে দেননি। ১৯ বলে ২৮ করে আগেভাগেই শেষ করে দেন খেলা। এর আগে বল হাতেও বড় ভূমিকা রয়্যালস অধিনায়কের।
মন্থর উইকেট দেখে খুলনা টাইগার্সকে ব্যাট করতে দিয়ে শুরুতেই চেপে ধরেন আন্দ্রে রাসেল। রান আপ কমিয়ে এদিন একটু ভিন্নভাবে বল করছিলেন তিনি। ভিন্নতা ছিল খুলনার ওপেনিং জুটিতেও। মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে ওপেন করতে নেমেছিলেন রাহমানুল্লাহ গুরবাজ। এক চার মারার পরেই রাসেলের বলে ক্যাচ উঠিয়ে বিদায় তার। রানের খাতা খোলার আগে মিরাজেরও হয়েছে একই পরিণতি।
কামরুল ইসলাম রাব্বি বল হাতে নিয়েই আঘাত হানেন মিডল অর্ডারে। পর পর দুই বলে ফিরিয়ে দেন মুশফিকুর রহিম আর নাজমুল হোসান শান্তকে। পাওয়ার প্লের মধ্যে ২৯ রানেই ৪ উইকেট খুইয়ে তখনই ডুবে মরার দশা খুলনার। ভরসা ছিলেন রাইলি রুশোও। দারুন ছন্দে থাকা এই ব্যাটসম্যান এবার থিতু হয়েও টানতে পারেননি দলকে।
বিপর্যস্ত খুলনা দিশা পায় শামসুর রহমানের ব্যাটে। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান শুরুতে সময় নিলেও পরে চার-ছয়ে পুষিয়ে দিচ্ছিলেন। তার ৪৬ বলে ৫৫ রানের ইনিংস শেষ হয়েছে আফিফের দারুণ ক্যাচে। শেষটায় রবি ফ্রাইলিঙ্ক ২৬ বলে ৩১ করলে দেড়শো কাছে যেতে পারে খুলনা। তবে এই রান নিয়ে রাজশাহীর শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপকে আটকানো ছিল ভীষণ কঠিন। বোলাররা সাদামাটা থাকায় সেই কটিন থেকেছে কঠিনতর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৪৯/৯ (গুরবাজ ৪, মিরাজ ০, রুশো ৩৫, মুশফিকুর ১, শান্ত ১, শামসুর ৫৫, ফ্রাইলিঙ্ক ৩১, শহিদুল ৬, আমির ৩, শফিউল ২*, তানবির ০*; রাসেল ৪/৩৫, ইরফান ০/১২, রাব্বি ২/২৩, জায়েদ ০/১২, আফিফ ১/১১, অলক ০/২০, রেজা ০/৮, বোপারা ২/২০)
রাজশাহী রয়্যালস: ১৮ ওভারে ১৪৯/৩ (লিটন ৫৮ , আফিফ ২২, মালিক ১৬, রাসেল ২৮* , বোপারা ১৩* ; আমির ০/২৯, ফ্রাইলিঙ্ক ১/৩৯, শফিউল ০/২৭, তানবির ০/২৬, মিরাজ ০/৫, শহিদুল ১/২৩ )
ফল: রাজশাহী রয়্যালস ৭ উইকেটে জয়ী।
Comments