নিরুত্তাপ ম্যাচে ঝলক দেখালেন মোস্তাফিজ

mustafiz
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

পয়েন্ট তালিকার তলানির দুই দলের লড়াই। মুখোমুখি সিলেট থান্ডার ও রংপুর রেঞ্জার্স। আসর জুড়ে ধুঁকতে থাকাদের ম্যাচটি হলো নিরুত্তাপ। সিলেটের ছুঁড়ে দেওয়া মামুলি লক্ষ্য সহজেই পেরিয়ে গেল রংপুর। এর মাঝে আলাদা করে নজর কাড়লেন মোস্তাফিজুর রহমান। টানা তৃতীয় ম্যাচে দেখালেন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। হলেন ম্যাচসেরা।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সিলেটকে উড়িয়ে দিয়েছে রংপুর। তারা জিতেছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে। ১৬ বল হাতে রেখে। সাত ম্যাচে শেন ওয়াটসনের দলের এটি দ্বিতীয় জয়। অন্যদিকে, আট ম্যাচে মোসাদ্দেক হোসেনের সিলেটের এটি সপ্তম হার।

প্রথম চার ম্যাচে ৪ উইকেট। পরিসংখ্যান বিচারে খুব একটা খারাপ নয়। কিন্তু মাঠের ছবি বলছিল অন্য কথা। মোস্তাফিজ লাইন-লেন্থ ঠিক রেখে জায়গা মতো বল করেছিলেন কমই। হয়ে পড়েছিলেন প্রেডিক্টেবল। রানও দিচ্ছিলেন বেশ। তবে আগের দুই ম্যাচে তুলনামূলক ভালো বোলিং প্রদর্শনী দেখিয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার।

তার ধারাবাহিকতা বজায় থেকেছে এদিনও। ডেথ ওভারে তো ছিলেন দুর্দান্ত। প্রতিপক্ষ সিলেট যদিও ভালো অবস্থায় নেই। তারপরও চার ওভার বল করে ১৯টি ডেলিভারি ডট দেওয়াকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। আঁটসাঁট বোলিংয়ে মোস্তাফিজ দিয়েছেন মাত্র ১০ রান। উইকেট নিয়েছেন ৩টি। সব মিলিয়ে এবারের বঙ্গবন্ধু বিপিএলে তার উইকেট সংখ্যা বেড়ে হলো ১২টি।

লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, মোস্তাফিজকে আগে থেকে পড়ে ফেলতে পারেননি ব্যাটসম্যানরা। অর্থাৎ প্রেডিক্টেবল ভাবটা কাটিয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছেন তিনি। নিজের প্রথম ওভারে ১ রান দেন মোস্তাফিজ। পরের ওভারে খরচ করেন ৬। সেরাটা জমা ছিল শেষের জন্য। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে সিলেটের ইনিংস টেনে নিয়ে যাওয়া মোহাম্মদ মিঠুনকে ফেরান তিনি। ওই ওভার থেকে আসে ২ রান। আর ইনিংস ও নিজের শেষ ওভারে নাঈম হাসান ও সোহাগ গাজিকে টানা বিদায় করে জাগান হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও। তা অবশ্য হয়নি। ওই ওভারেও তিনি মাত্র ১ রান দেন।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা সিলেট মোস্তাফিজের ধাক্কায় শেষ পর্যন্ত থামে ৯ উইকেটে ১৩৩ রানে। মিঠুন ৪৭ বলে করেন ৬২। তার ইনিংসে ছিল ৪ চার ও ২ ছক্কা। বাকিরা ছিলেন যাওয়া-আসার মাঝে। ২৩ বলে ১৫ রান করে রানআউট হওয়া দলটির অধিনায়ক মোসাদ্দেক ডাইভ দেওয়ার সময় ঘাড়ে ব্যথা পান। এরপর দলের ফিল্ডিংয়ের সময় তিনি আর মাঠে নামেননি।

সহজ লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দ্বিতীয় ওভারেই অধিনায়ক ওয়াটসনকে হারায় রংপুর। ইবাদত হোসেনের ১৪২.৫ কিলোমিটার গতির ইয়র্কারে স্টাম্প হারান এই অজি। করেন ৬ বলে ১ রান। আগের ম্যাচে তিনি সাজঘরে ফিরেছিলেন ৫ রানে।

এরপর আরেক ওপেনার নাঈম শেখকে নিয়ে ৯৯ রানের জুটি গড়ে সব হিসাব-নিকাশ চুকিয়ে ফেলেন ক্যামেরন ডেলপোর্ট। জুটিতে তার ভূমিকাই ছিল বেশি। ২৪ বলে ফিফটি ছুঁয়ে ২৮ বলে ৬৩ রান করেন এই বাঁহাতি। মারেন ৬ চার ও ৫ ছয়। ডেলপোর্টকে ফেরানোর পর লুইস গ্রেগরিকেও টিকতে দেননি আফগানিস্তানের পেসার নাভিন উল হক।

জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন নাঈম ও মোহাম্মদ নবি। নাঈম ৫০ বলে ৩৮ ও নবি ১২ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিলেট থান্ডার: ২০ ওভারে ১৩৩/৯ (ফ্লেচার ০, চার্লস ৯, মিঠুন ৬২, মোসাদ্দেক ১৫, রাদারফোর্ড ১৬, নাজমুল ১, গাজি ১২, নাঈম ৮, মনির ০, নাভিন ০*, ইবাদত ০*; সানি ১/২৪, মোস্তাফিজ ৩/১০, মুকিদুল ১/৪৩, নবি ১/৩১, গ্রেগরি ১/২১)

রংপুর রেঞ্জার্স: ১৭.২ ওভারে ১৩৪/৩ (নাঈম শেখ ৩৮*, ওয়াটসন ১, ডেলপোর্ট ৬৩, গ্রেগরি ৪, নবি ১৮*; নাভিন ২/১৩, ইবাদত ১/১২, নাঈম ০/৪৫, গাজি ০/২২, রাদারফোর্ড ০/২২, মনির ০/১৫)

ফল: রংপুর রেঞ্জার্স ৭ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচসেরা: মোস্তাফিজুর রহমান।

Comments

The Daily Star  | English

Please don't resign: An appeal to Prof Yunus

A captain cannot abandon ship, especially when the sea is turbulent

8h ago