নাঈমের হাফসেঞ্চুরি, তাসকিনের ৪ উইকেট
মোহাম্মদ নাঈমের হাফসেঞ্চুরির পাশাপাশি বাকিরা ব্যাট হাতে ছোট ছোট অবদান রাখলেন। আগের তিন ম্যাচে বাইরে থাকা তাসকিন আহমেদ একাদশে ফিরে নিলেন গুরুত্বপূর্ণ ৪ উইকেট। রাজশাহী রয়্যালসকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল শেন ওয়াটসনের রংপুর রেঞ্জার্স।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে রংপুর জিতেছে ৪৭ রানের ব্যবধানে। তাদের ৬ উইকেটে ১৮২ রানের জবাবে রাজশাহীর ইনিংস থামে ৮ উইকেটে ১৩৫ রানে।
আট ম্যাচে রংপুরের এটি তৃতীয় জয়। ৬ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে পয়েন্ট তালিকার ষষ্ঠ স্থানে। বিপরীতে, রাজশাহীর এটি সমান ম্যাচে তৃতীয় হার। তারা ১০ পয়েন্ট নিয়ে আছে চতুর্থ স্থানে।
লক্ষ্য তাড়ায় রাজশাহীর কোনো ব্যাটসম্যানই কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি। উইকেট ছুঁড়ে আসার মিছিলে যোগ দেন লিটন দাস-আফিফ হোসেনরা। পরের দিকে রবি বোপারা-আন্দ্রে রাসেলরাও দায়িত্ব নিতে পারেননি।
চতুর্থ ওভারে আক্রমণে এসেই আফিফকে ফিরিয়ে দেন তাসকিন। লুইস গ্রেগরি মিড অফে নেন দুর্দান্ত ক্যাচ। নবম ওভারে লিটনও তাসকিনের অনেক বাইরের বল মারতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে আসেন। পরের বলেই শোয়েব মালিককে বোল্ড করে দেন তাসকিন। তার ইনসুইং ডেলিভারিটি ছিল দুর্দান্ত। শেষদিকে ফরহাদ রেজাকেও শিকার করেন ডানহাতি পেসার।
সবমিলিয়ে ২৯ রানে ৪ উইকেট নেন তাসকিন। গ্রেগরি ২ উইকেট পান ২৭ রানে। রাজশাহীর হয়ে অলক কাপালি ২৮ বলে সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন। বোপারার ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ২৮ রান।
এর আগে ব্যাট করতে নামা রংপুর প্রথম ১০ ওভারে তোলে ১ উইকেটে ৭৫ রান। এই ভিতকে কাজ লাগিয়ে পরের ১০ ওভারে তারা যোগ করে আরও ১০৭ রান। ফলে স্কোরবোর্ডে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পেয়ে যায় দলটি।
নাঈম প্রথম তিন বলের মধ্যে রাসেলকে মারেন চার-ছয়। চোটের কারণে এরপর মাঠ ছেড়ে যান রাজশাহী অধিনায়ক। ওভারের বাকিটা পূরণ করেন মালিক। রাসেল পরে ফিরলেও আর বোলিং করেননি।
নাঈমের ব্যাটে আগ্রাসন চলতে থাকে। মোহাম্মদ ইরফানের করা পরের ওভার থেকে তিনটি চার আদায় করে নেন তিনি।
রংপুরের ৩৮ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ওয়াটসনের বিদায়ে। টানা তৃতীয় ম্যাচে ব্যর্থ এই অস্ট্রেলিয়ান করেন ৭ বলে ৭ রান। তার উইকেটটি নেন আফিফ।
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নাঈমের ব্যাটের ধার অবশ্য কমে যায়। অন্যদিকে, উইকেটে গিয়েই হাত খুলে মারতে থাকেন ক্যামেরন ডেলপোর্ট। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনে যোগ করেন ৫৪ রান।
নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে এই জুটি ভাঙেন আফিফ। ডেলপোর্ট ১৭ বলে তিনটি চার ও দুটি ছয়ে করেন ৩১ রান। তার বিদায়ের আগেই অবশ্য ফিফটি তুলে নেন নাঈম।
১৪তম ওভারে আক্রমণে এসেই নাঈমকে ফেরান কামরুল ইসলাম রাব্বি। ৪৭ বলে ছয়টি চার ও একটি ছয়ে তার ব্যাট থেকে আসে ৫৫ রান।
গ্রেগরি ১৭ বলে ২৮ ও মোহাম্মদ নবি ১২ বলে ১৬ রান করে ফেরার পর রংপুরের স্কোর পৌনে দুইশো ছাড়িয়ে যায় আল-আমিন জুনিয়র ও জহুরুল ইসলামের ব্যাটে। শেষ ১৫ বলে তারা যোগ করেন অবিচ্ছিন্ন ৩৪ রান।
আল-আমিন ১০ বলে ১৫ ও জহুরুল ৮ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন। রাজশাহীর হয়ে আফিফ ও মোহাম্মদ ইরফান ২টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রংপুর রেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৮২/৬ (নাঈম ৫৫, ওয়াটসন ৭, ডেলপোর্ট ৩১, গ্রেগরি ২৮, নবি ১৬, মাহমুদ ০, আল-আমিন ১৫*, জহুরুল ১৯*; রাসেল ০/১১, মালিক ০/৬, ইরফান ২/৩৫, তাইজুল ০/২৩, আফিফ ২/৪০, নাহিদুল ০/১৭, কাপালি ০/১০, রাব্বি ১/১৫, রেজা ১/২৪)
রাজশাহী রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৩৫/৮ (লিটন ১৫, আফিফ ৭, কাপালি ৩১, মালিক ০, বোপারা ২৮, নাহিদুল ১৯, রাসেল ১৭, রেজা ০, তাইজুল ৪*, রাব্বি ৫*; সানি ০/৩২, মোস্তাফিজ ০/১৬, তাসকিন ৪/২৯, গ্রেগরি ২/২৭, নবি ১/২৯)
ফল: রংপুর রেঞ্জার্স ৪৭ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: ।
Comments