আন্তর্জাতিক

বিরোধিতার কারণে অনলাইনে নাগরিকত্বের আবেদনের কথা ভাবছে মোদি সরকার

ভারতের যেসব রাজ্যে বিজেপির সরকার নেই সেসব রাজ্যে ক্ষমতাসীনরা দেশটির নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করায় দেশজুড়ে অনলাইনে নাগরিকত্বের আবেদনের কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার।
India protest
ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভে যোগ দেয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ছবি: এএফপি ফাইল ফটো

ভারতের যেসব রাজ্যে বিজেপির সরকার নেই সেসব রাজ্যে ক্ষমতাসীনরা দেশটির নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করায় দেশজুড়ে অনলাইনে নাগরিকত্বের আবেদনের কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার।

আজ (১ জানুয়ারি) ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে নির্যাতিত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, পার্সি, শিখ ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্বের বিষয়ে রাজ্যগুলোর ভূমিকা অপ্রাসঙ্গিক করে দিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে অনলাইনে করার কথা ভাবছে কেন্দ্র।

পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বেশ কয়েকটি অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, তারা বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন বাস্তবায়ন করবেন না। আইন অনুযায়ী, জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, “নাগরিকত্বের জন্য আবেদন, তথ্য যাচাই এবং নাগরিকত্ব প্রদান— পুরো প্রক্রিয়াটিই অনলাইনে করার চিন্তাভাবনা চলছে। জেলা প্রশাসকের পরিবর্তে বিষয়টি দেখা-শোনার জন্য নতুন কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।”

অনলাইনে নাগরিকত্বের আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হলে সে বিষয়ে রাজ্যগুলোর হস্তক্ষেপের সুযোগ থাকবে না বলেও মনে করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

নিজে আইন না পড়েই জনগণকে মোদির ‘গুরু’র পরামর্শ

ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন না পড়েই দেশটির জনসাধারণকে আইনটির পক্ষে অবস্থান নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আধ্যাত্মিক গুরু হিসেবে পরিচিত সদগুরু জগ্গী বাসুদেব।

গতকাল (৩১ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রায় ২০ মিনিটের এক ভিডিও বার্তায় সদগুরু বাসুদেব তার বক্তব্যের শুরুতেই বলছেন, “আমি পুরো আইন পড়িনি। এ বিষয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিভিন্ন লেখা পড়েছি।”

এরপর তিনি বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের প্রশংসা করে তিনি বলেন যে এরকম আইন পৃথিবীর সব দেশেই রয়েছে। তিনি এই আইনের প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন ভিডিও বার্তায়।

আইনটির বিরোধিতা করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ-প্রতিবাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন যে “শিক্ষার্থীরা আইনটি না পড়েই রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে।” এ জন্যে তিনি তাদের তিরস্কারও করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলাকেও সমর্থন করেন।

বাসুদেব বলেন, “শিক্ষার্থীরা পাথরের শ্রমিকের মতো আচরণ করেছে। তারা সবাইকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়েছে।” বার্তায় মোদির গুরু পুলিশের প্রশংসা করেছেন। বলেছেন, “এতো প্রতিক্রিয়া হবে তা সরকারের ধারণাতেই ছিলো না। তাই বেশি পুলিশ নামায়নি।” এর ফলে “পুলিশই মার খেয়েছে,” বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে, নরেন্দ্র মোদি বিরোধীদের সমালোচনা করে বলেছিলেন যে তারা আইনটি না পড়েই এর প্রতিবাদ করছে, জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। অথচ, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বলা হচ্ছে, মোদির গুরু নিজেও আইনটি পড়েননি।

কেরালায় নাগরিকত্ব আইন বাতিলের প্রস্তাব পাশ

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার বিধানসভায় আজ বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন বাতিল করে একটি প্রস্তাব পাশ করেছেন বিধানসভার সদস্যরা। কমিউনিস্ট শাসিত রাজ্যের বিরোধী দলের সদস্যরাও সেই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন বলে জানিয়েছে দ্য ডেইলি স্টারের নতুন দিল্লি সংবাদদাতা।

‘বিজেপিকে একা করে দিন’

ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপিকে ‘একা’ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি তিনি এক সভায় বলেন, “দেশে বিজেপিকে একা করে দিন। যারা দেশবাসীকে তাড়াতে চায়, ভারতে তাদের জায়গা নেই।”

‘‘নাগরিকগঞ্জির মাধ্যমে দেশের মানুষকে তাড়ানোর চক্রান্ত চলছে,” উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সবাইকে বলব, এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে জোট বাঁধুন, তৈরি হোন।”

তৃণমূল নেত্রী সারা ভারতে আন্দোলনকারীদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছেন। তার মতে, “এটি গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন, মাথার উপরের আশ্রয় রক্ষার আন্দোলন। ঠিকানা রক্ষার আন্দোলন।”

উল্লেখ্য, গত ২৯ ডিসেম্বর ঝাড়খণ্ড রাজ্যে বিজেপিবিরোধী সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারতের বিরোধীদলের নেতারা নতুন করে বিজেপির বিভেদনীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রস্তুতির ঘোষণা দিয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

More and more people now turning to OMS

Leaving his poultry shop for his salesman, Abul Kashem rushed to gate-1 of New Market around 11:00am yesterday to buy essentials from an OMS outlet.

2h ago