রংপুরকে হারিয়ে শীর্ষে উঠে এলো রাজশাহী
হারলেই সব শেষ নয়। কাগজে-কলমে টিকে থাকবে আশা। সঙ্গে থাকবে বেশ কিছু যদি-কিন্তুর হিসাবও। তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলগুলোর ম্যাচের ফলের দিকে। এমন সমীকরণ নিয়েই দেয়ালে পা ঠেকে যাওয়া রংপুর রেঞ্জার্স নেমেছিল মাঠে। তবে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি তারা। অন্যদিকে, রংপুরকে হারাতে পারলে শীর্ষে ওঠার হাতছানি ছিল রাজশাহী রয়্যালসের। তার ষোলোআনাই পূরণ করেছে তারা। দারুণ ক্রিকেট উপহার দিয়ে রংপুরকে ৩০ রানে হারিয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে দলটি।
সিলেটে বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি রংপুরের। দলীয় ৩ রানেই অধিনায়ক শেন ওয়াটসনকে হারায় তারা। পরে মোহাম্মদ নাঈমের সঙ্গে ৩২ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান ক্যামেরন ডেলপোর্ট। এরপর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখও। ফলে দলীয় ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বড় চাপে পড়ে যায় দলটি। দলের এ অবস্থায় টম আবেলকে নিয়ে হাল ধরেন ফজলে মাহমুদ। ৬৪ রানের জুটি গড়ে সে চাপ সামলেও নেন তারা।
তবে দলীয় ১১১ রানে এ দুই ব্যাটসম্যানই ফিরে গেলে ফের চাপে পড়ে যায় দলটি। রানের গতিতে পড়ে লাগাম। সেখান থেকে দলকে উত্তরণের চেষ্টা করেছিলেন আল-আমিন জুনিয়র। তবে তার চেষ্টা যথেষ্ট হয়নি। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪৯ রানের বেশি তুলতে পারেনি দলটি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন ফজলে রাব্বি। ২৯ রান করেন আবেল। রাজশাহীর পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ নাওয়াজ ও শোয়েব মালিক।
এর আগে দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও আফিফ হোসেন ধ্রুব রাজশাহীর শুরুটা করেছিলেন দারুণ। ৫১ রানের ওপেনিং জুটি উপহার দেন এ দুই ব্যাটসম্যান। দারুণ এক ডেলিভারিতে লিটন ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। পরের ওভারে আফিফকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন মোহাম্মদ নবি। তাতে কিছুটা চাপে পড়ে যায় রাজশাহী। এরপর ইরফান শুক্কুরকে নিয়ে দলের হাল ধরেন শোয়েব মালিক। ৩৩ রানের ছোট একটি জুটি গড়ে প্রাথমিক চাপ সামলে নেন তারা।
এরপর ইরফানের বিদায়ের পর রবি বোপারার সঙ্গে ৪৮ রানের কার্যকরী একটি জুটি গড়েন বোপারা। তবে তখন পর্যন্ত রানের গতি নিয়ন্ত্রণেই রাখতে পেরেছিলেন রংপুরের বোলাররা। তবে শেষ দিকে মোহাম্মদ নাওয়াজের সঙ্গে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে বড় সংগ্রহই এনে দেন বোপারা। ২৬ বলে এ জুটি সংগ্রহ করে ৪৭ রান। মোস্তাফিজের করা শেষ ওভারে তোপটা বেশি দাগান তারা। সে ওভারে আসে ২২ রান।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫০ রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন বোপারা। ২৯ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় এ রান করেন এ ইংলিশ ব্যাটসম্যান। এছাড়া মালিক ৩৭ ও আফিফ ৩২ রানের ইনিংস খেলেন। রংপুরের পক্ষে ৪১ রানের খরচায় ২টি উইকেট পান মোস্তাফিজ। আরাফাত সানি ও মোহাম্মদ নবির শিকার ১টি করে।
৯ ম্যাচ শেষে ৬টি জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে এলো রাজশাহী। যদিও তাদের সমান ১২ পয়েন্ট চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সেরও। তবে রান রেটে শীর্ষে আছে রাজশাহীই। অন্যদিকে এ হারে ৯ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানেই রইল রংপুর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রাজশাহী রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৭৯/৪ (লিটন ১৯, আফিফ ৩২, মালিক ৩৭, ইরফান ২০, বোপারা ৫০*, নাওয়াজ ১৫*; সানি ১/৪৫, মোস্তাফিজ ২/৪১, তাসকিন ০/৩৭, নবি ১/২৬, ডেলপোর্ট ০/১১, আবেল ০/১৮)।
রংপুর রেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৪৯/৭ (নাঈম ২৭, ওয়াটসন ২, ডেলপোর্ট ১৪, আবেল ২৯, ফজলে ৩৪, নবি ৫, আল-আমিন ১৮, জহুরুল ৪*, তাসকিন ৪*; নাওয়াজ ২/২১, ইরফান ১/২৩, মালিক ২/২৭, আফিফ ০/১৬, রাহী ০/১৭, বোপারা ০/১০, রাব্বি ২/৩২)।
ফল: রাজশাহী রয়্যালস ৩০ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রবি বোপারা (রাজশাহী রয়্যালস)।
Comments