মুগ্ধতা ছড়ালেন তরুণ হাসান মাহমুদ

Hasan Mahmud
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

রাইলি রুশো খেলছিলেন সাবলীল, ছিলেন স্বচ্ছন্দ। বড় রান তাড়ায় খুলনা টাইগার্সের মূল অস্ত্রের একজনই তিনি। অষ্টম ওভারে থিতু হওয়া রুশো পেলেন হাসান মাহমুদের এমন এক বল, যাতে আসলে তার করার ছিল সামান্যই। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে ফেরার আগের কয়েক মুহূর্ত থাকে দেখাল হতভম্ব। বাংলাদেশের কোন পেসারের হাত থেকে এমন ডেলিভারি হরহামেশা যে দেখা যায় না ক্রিকেটে।

হাসানের দারুণ অ্যাঙ্গেলে করা বলে সিম পজিশন ছিল দারুণ। রুশোর শরীর ঘেঁষা লাফিয়ে উঠে তার ব্যাটে চুমু খেয়ে বল জমা পড়ে উইকেটকিপার এনামুল হকের গ্লাভসে। ১৭৩ রান তাড়ায় ৪৪ রানে খুলনা টাইগার্স হারায় চতুর্থ উইকেট। ম্যাচের প্রেক্ষিতে বিশাল ব্রেক থ্রু। বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রেক্ষিতে এই এক ডেলিভারিই দিচ্ছে বড় আশার আলো। হাসান মাহমুদ যে এতেই দিয়ে দিলেন বড় কিছুর ইঙ্গিত। 

এর আগে মেহেদী হাসান মিরাজ হাসানের স্লোয়ারে স্কুপ করতে গিয়ে হন বোল্ড। প্রথম দুই ওভার থেকে মাত্র ৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন হাসান। তৃতীয় ওভারে ফিরে কিছুটা রান দিলেও পেছনের হাতে বল করে আউট করে দেন রবি ফ্রাইলিঙ্ককে। সেই বলেও ছিল নিখুঁত পরিকল্পনা আর বুদ্ধির ছোঁয়া। ব্যাক হেন্ড স্লোয়ার অনুশীলন করছিলেন ইমার্জিং কাপ থেকে। সেইরকম এক বলে কাবু করে দেন ফ্রাইলিঙ্ককে। 

তরুণ এই পেসারের ভার পড়েছিল স্লগ ওভারেও বল করার। মুশফিকুর রহিমের হাতে বেদম মার খেয়ে ১৪ রান দেওয়ায় বোলিং ফিগার হয়ে যায় কিছুটা এলোমেলো। তবে ম্যাচ বের করার হুঙ্কার দেওয়া মুশফিকও যে ফিরেছেন তার বলেই।  ওই ওভারেরই পঞ্চম বলে হাসানের লো ফুলটস আকাশে উঠিয়ে বিদায় নেন ৩৩ বলে ৬৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলা মুশফিক, হার নিশ্চিত হয় খুলনারও। 

শেষ পর্যন্ত চার ওভারের স্পেলে ৩২ রানে ৪ উইকেট পান হাসান। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটাই এই তরুণের সেরা বোলিং ফিগার। ঢাকার করা ১৭২ রানের জবাবে হাসানের মুন্সিয়ানাতেই ১৬০ রানে আটকে যায় খুলনা টাইগার্স।শেষ দুই ওভারে রান বেশি দিলেও তার স্কিল ছিল নজরকাড়া। এর আগে টুর্নামেন্টে ১৪৪.১ কিমিতে বল কর আলোচনায় আসেন তিনি। এবার ম্যাচ সেরা হয়ে নিজের সামর্থ্যকে আরও চেনালেন কুড়ি না পেরুনো এই তরুণ। 

ম্যাচ শেষে বললেন রুশোকে করা ডেলিভারিটিই তার করা এখন পর্যন্ত সেরা, ‘হ্যাঁ এটি অবশ্যই সেরা ডেলিভারি ছিল। না হলে তো উইকেটটা পেতাম না। রুশোকে প্ল্যান ছিল স্টাম্প টু স্টাম্প করা, ও যেহেতু বাইরে খেলে, বাইরে না খেলতে দেওয়া। এই চেষ্টাই করেছি। বলটা অনেক ভালো জায়গা জায়গায় থেকে বাউন্স করেছিল, ভালো লেংথে হিট করেছিল। সেজন্য ভালো লেগেছে।

সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। অস্ট্রেলিয়ায় হতে যাওয়া সে বিশ্বকাপে গতি, বাউন্সের ভালো করতে হলে দরকার পেস বোলিংয়ের নজরকাড়া অস্ত্র। তরুণ হাসান সে পথের কাণ্ডিরে হতে হতে পারেন বড় এক নাম।

Comments

The Daily Star  | English

UK govt unveils 'tighter' immigration plans

People will have to live in the UK for 10 years before qualifying for settlement and citizenship

1h ago