হারের বৃত্তেই সিলেট, প্লে অফে রাজশাহী
দিনের প্রথম ম্যাচেই প্লে অফ নিশ্চিত করেছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এবার তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দল হিসেবে প্লে অফে জায়গা করে নিল রাজশাহী রয়্যালসও। সিলেট থান্দারকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েই শেষ চার নিশ্চিত করেছে দলটি। ২৯ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের বড় জয় পায় রাজশাহী। তাতে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেও উঠে আসে দলটি। অন্যদিকে সিলেটে নিজেদের শেষ ম্যাচেও ভাগ্য ঘুরল না স্বাগতিকদের। খালি হাতেই ঘরের মাঠ থেকে ঢাকা ফিরছে আন্দ্রে ফ্লেচারের দল।
তবে সিলেট ব্যর্থ হলেও সবমিলিয়ে দারুণ জমে উঠেছে বঙ্গবন্ধু বিপিএল। সিলেট পর্বের প্রায় প্রতি ম্যাচেই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে পরিবর্তন আসছে। এক ম্যাচে এক দল শীর্ষে উঠলে তো পরের ম্যাচেই তাদের টপকে শীর্ষে উঠছে অন্য কোন দল। শনিবারও পরিবর্তন হয় দুই দফা। দিনের প্রথম ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে হারিয়ে শীর্ষে ওঠে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। পরের ম্যাচে সিলেটকে হারিয়ে রান রেট বিবেচনায় শীর্ষে উঠে যায় রাজশাহী। ১০ ম্যাচে ৭টি জয়ে তাদের সংগ্রহ ১৪ পয়েন্ট। সমান ১৪ চট্টগ্রামেরও। তবে রান রেটে পিছিয়ে আছে দলটি।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন টস জিতেছিল সিলেটই। বেছে নেয় ব্যাটিং। আর ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে দেখে শুনেই খেলে তারা। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। পাওয়ার প্লের সদ্ব্যবহার করতে পারেনি। উল্টো দুটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দলটি। এরপর অধিনায়ক আন্দ্রে ফ্লেচারের সঙ্গে ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নেন মোহাম্মদ মিঠুন। কিন্তু ৩২ রানের জুটি গড়ার পর রানআউটে কাটা পড়েন অধিনায়ক। ফলে ফের চাপে পড়ে যায় সিলেট।
শেরফেন রাদারফোর্ডকে নিয়ে ৪৭ রানের আরও একটি জুটি গড়ে সে চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন মিঠুন। কিন্তু এবার রাদারফোর্ডের সঙ্গে ভুল বোঝাবোঝির খেসারৎ দিয়ে রানআউট হন মিঠুনও। এরপর স্কোরবোর্ডে ১ রান যোগ হতে আউট হয়ে যান সোহাগ গাজী। আর লেজের দিকের ব্যাটসম্যানরাও দায়িত্ব নিতে পারেননি। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৩ রানের বেশি করতে পারেনি দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৭ রানের ইনিংস খেলেন মিঠুন। ৩৮ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। এছাড়া অধিনায়ক ফ্লেচার ও রাদারফোর্ড দুই জনই ২৫ রান করে করেন। রাজশাহীর পক্ষে এক ওভারে ১৪ রান দিয়ে ২টি উইকেট পান আলোক কাপালী। ৪ ওভার বল করে ১৮ রানের খরচায় ১টি উইকেট নেন মোহাম্মদ ইরফান। উইকেট না পেলেও দারুণ কৃপণ বোলিং করেছেন মোহাম্মদ নাওয়াজ। ৪ ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ১৫।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা দুর্দান্ত করে রাজশাহী। দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও আফিফ হোসেন ধ্রুব ওপেনিংয়ে এনে দেন ৫৯ রানের জুটি। এ জুটি ভাঙেন রাদারফোর্ড। এরপর আফিফের সঙ্গে ৩৫ ও ইরফান শুক্কুরের সঙ্গে ৩১ রানের জুটি গড়ে দলের জয়ের শক্ত ভিত গড়ে দেন অধিনায়ক শোয়েব মালিক। এরপর এক ওভারে অধিনায়ক মালিক ও ইরফানকে তুলে নিয়ে কিছুটা আশা জাগালেও তা যথেষ্ট হয়নি সিলেটের জন্য।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন আফিফ। ৩০ বলে ৮টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিন ই। ২০ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৬ রানের ইনিংস খেলেন লিটন। অধিনায়ক মালিক করেন ২৭ রান। সিলেটের পক্ষে ১১ রানের খরচায় ২টি উইকেট নেন দেলোয়ার হোসেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট থান্ডার: ২০ ওভারে ১৪৩/৬ (ফ্লেচার ২৫, মজিদ ১৬, চার্লস ৮, মিঠুন ৪৭, রাদারফোর্ড ২৫, গাজী ০, মিলন ১৩*, দেলোয়ার ২*; নাওয়াজ ০/১৫, রাহী ১/২৯, ইরফান ১/১৮, রাব্বি ০/২৮, রেজা ০/১১, মালিক ০/১৯, কাপালী ২/১৪, বোপারা ০/৩)।
রাজশাহী রয়্যালস: ১৫.১ ওভারে ১৪৫/৪ (লিটন ৩৬, আফিফ ৪৬, মালিক ২৭, শুক্কুর ১০, বোপারা ১, নাওয়াজ ১৭*; ইবাদত ০/৩২, নাভিন ০/৩৪, রাদারফোর্ড ১/৩১, অপু ০/৩৬, দেলোয়ার ২/১১)।
ফলাফল: রাজশাহী রয়্যালস ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আফিফ হোসেন ধ্রুব (রাজশাহী রয়্যালস)।
Comments