আমরা তা-ই বলি, যা আমাদের বাস্তবায়নের সামর্থ্য রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

জাতির উদেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আমরা আপনাদের জন্য কী করতে চেয়েছিলাম আর কী করতে পেরেছি এ বিষয়ে আমরা সব সময়ই সচেতন। আপনারাও নিশ্চয়ই মূল্যায়ন করবেন। তবে আমরা মুখরোচক প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাসী নই। আমরা তা-ই বলি, যা আমাদের বাস্তবায়নের সামর্থ্য রয়েছে।”

জাতির উদেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আমরা আপনাদের জন্য কী করতে চেয়েছিলাম আর কী করতে পেরেছি এ বিষয়ে আমরা সব সময়ই সচেতন। আপনারাও নিশ্চয়ই মূল্যায়ন করবেন। তবে আমরা মুখরোচক প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাসী নই। আমরা তা-ই বলি, যা আমাদের বাস্তবায়নের সামর্থ্য রয়েছে।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ মজবুত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। ছোটোখাটো অভিঘাত এই অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।

অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকে বিশ্বের শীর্ষ পঁচটি দেশের একটি এখন বাংলাদেশ, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইএমএফ-এর হিসেব অনুযায়ী পিপিপির ভিত্তিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান ৩০তম। প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারস-এর প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বে ২৩তম স্থান দখল করবে। এইচএসবিসির হিসাব অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৬তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলছে ২০২০-এ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ভারতসহ এশিয়ার দেশগুলো থেকে এগিয়ে থাকবে।

রূপকল্প ২০২১ সম্পর্কে ভাষণে তিনি বলেন, রূপকল্প ২০২১ এর অন্তর্নিহিত মূল লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করা। মাথাপিছু আয় ১২০০ মার্কিন ডলার অতিক্রম করায় বিশ্বব্যাংক ২০১৫ সালে বাংলাদেশকে নি¤œ-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে যেখানে মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার, ২০১৯ সালে তা ১ হাজার ৯০৯ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

ভাষণে তিনি আরও বলেন, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১.৫ শতাংশ। বর্তমানে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২০.৫ শতাংশে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের হিসেব মতে ২০১০ সালে দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাসরত কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা ছিল ৭৩.৫ শতাংশ। ২০১৮ সালে তা ১০.৪ শতাংশে  হ্রাস পেয়েছে। ২০১৮ সালে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে স্থান দিয়েছে।

গত ১৫ বছরে দেশের বাজেটের আকার বৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতির বিকাশের প্রমাণ মেলে তার বার্ষিক আর্থিক পরিকল্পনায়। ২০০৫-৬ অর্থবছরে বিএনপি সরকারের শেষ বছরে বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৬১ হাজার কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেটের আকার সাড়ে আট গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকায়। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকায়। বাজেটের নব্বই ভাগই এখন বাস্তবায়ন হয় নিজস্ব অর্থায়নে।”

তিনি বলেন, গত অর্থবছরে আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮.১৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ শতাংশের নীচে। বছরের শেষ দিকে আমদানি-নির্ভর পিঁয়াজের দাম বৃদ্ধি ব্যতীত অন্যান্য নিত্য-প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম স্বাভাবিক ছিল।

“আমরা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। পাবনার রূপপুরে ২৪০০ মেগাওয়াটের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। ভারতের সঙ্গে স্থল সীমানা চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ছিটমহল সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। মায়ানমার এবং ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমানার বিরোধ মীমাংসার ফলে বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশির উপর আমাদের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। খুলে গিয়েছে নীল-অর্থনীতির দ্বার,” ভাষণে বলেন শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন: 

আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশ্বে সুপরিচিত নাম বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী

নতুন জীবনীশক্তি সঞ্চার করতে উদযাপন হবে মুজিববর্ষ: প্রধানমন্ত্রী

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

2h ago