মুশফিক-মিরাজের ব্যাটে প্লে অফে খুলনা

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

জিতলেই যে প্লে অফ নিশ্চিত হতো না নয়, তবে একটা আশা থাকতো কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের। অন্য দলের ফলাফলের উপর নির্ভর হয়ে থাকতে হতো। তবে হারলে নিশ্চিত বিদায়। আর নিশ্চিত পথেই হেঁটেছে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স! নিজেদের শেষ ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের কাছে এক অর্থে উড়ে গিয়েছিল দলটি। মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৯২ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পায় খুলনা।

আর এ জয়ে প্লে অফের চারটি দলই পেয়ে গেল বিপিএল। আগেই শেষ চার নিশ্চিত করা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স, ঢাকা প্লাটুন, রাজশাহী রয়্যালসের সঙ্গে চতুর্থ দল হিসেবে যোগ দিল খুলনা টাইগার্স। ১১ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ১৪ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে সমান ১৪ পয়েন্ট ঢাকা ও রাজশাহীরও। শেষ দিনে নির্ধারিত হবে কোন দুটি দল খেলবে কোয়ালিফায়ার, আর এলিমিনেটর খেলবে কোন দুটি দল।

মুশফিক-মিরাজের ব্যাটে লক্ষ্যটা বিশাল ছিল কুমিল্লার। ২১৯ রানের। এতো বড় লক্ষ্যে শুরুতেই খালি হাতে বিদায় নেন ওপেনার সাব্বির রহমান। আগের ম্যাচেই যিনি ওপেনিংয়ে নেমে দারুণ এক হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন। এরপর দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ মিডল অর্ডারও। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দলটি। ৭৬ রানেই হারিয়ে ফেলে টপ অর্ডারের সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যান। কার্যত ম্যাচের ভাগ্য তো তখনই নির্ধারণ হয়ে যায়।

শেষ দিকে অবশ্য ইয়াসির আলী ও ফারদিন হাসান কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তা কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৬ রানে থামে দলটি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ রানের ইনিংস খেলেন থারাঙ্গা। এছাড়া ফারদিন ২২ ও ইয়াসির ২০ রান করেন। খুলনার পক্ষে ২৭ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান শহিদুল ইসলাম। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ আমির ও আমিনুল ইসলাম। 

এর আগে এদিন টস জিতেছিল কুমিল্লাই। তবে বেছে নেয় বোলিং। শুরুটা খারাপও করেনি তারা। দলীয় ২ রানেই নাজমুল হোসেন শান্তকে তুলে নেয় তারা। এরপর দারুণ ছন্দে থাকা রাইলি রুশোকেও ফেরায় ব্যক্তিগত ২৪ রানে। তবে এখানেই শেষ তাদের বোলারদের সাফল্য। বাকী গল্পটা মুশফিকুর রহিম ও ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজের। দলীয় ৩৩ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলের হাল তো ধরেননি, দলকে বিশাল সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন এ দুই ব্যাটসম্যান।

তৃতীয় উইকেটে ১৬৮ রান যোগ করেন মিরাজ ও মুশফিক। জুটি বড় হতে পারতো আরও। কারণ দলীয় ২০১ রানে পেশীতে টান লাগায় সাজঘরে ফিরতে হয় মিরাজকে। তবে মুশফিক খেলেন শেষ পর্যন্ত। এমনকি ম্যাচের সব মনোযোগও কেড়ে নেন। কারণ শেষ দিকে সবাই অপেক্ষা করছিল তার সেঞ্চুরি দেখার।

তবে কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরি তুলে নিতে পারেননি মুশফিক। ৯৮ রানে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছেড়েছেন। শেষ ওভারে অবশ্য সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ছিলেন। প্রয়োজন ছিল ৮ রানের। প্রথম বলে ডট দিয়ে দ্বিতীয় বলে চারও মেরেছিলেন। এক পর্যায়ে শেষ বলে দরকার ছিল ৩ রানের। কিন্তু সৌম্য সরকারের ফুলটাস বল থেকে এক রানের বেশি নিতে পারেননি। ৫৭ বলে ১২টি চার ও ৩টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান মুশফিক।

এবারের বিপিএলে ওপেনার বনে যাওয়া মিরাজও খেলেছেন দারুণ। ৪৫ বলে করেন ৭৪ রান। এরপর ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। অন্যথায় সেঞ্চুরির লড়াইয়ে ছিলেন তিনিও। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ২ উইকেটে ২১৮ রান তোলে খুলনা। কুমিল্লার পক্ষে একটি করে উইকেট নেন ইফ্রান হোসেন ও মুজিব উর রহমান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ২১৮/২ (শান্ত ১, মিরাজ ৭৪* আহত অবসর, রুশো ২৪, মুশফিক ৯৮*, নজিবুল্লাহ ৭*; ইফ্রান ১/৩৮, রনি ০/৫৭, মুজিব ১/১৮, সৌম্য ০/৩০, সুমন ০/৪০, জিল ০/৩১)।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১২৬/৯ (জিল ১০, সাব্বির ০, থারাঙ্গা ৩২, মালান ৮, সৌম্য ৯, ইয়াসির ২০, ফারদিন ২২, রনি ৩, মুজিব ২, সুমন ৯*, ইফ্রান ১*; আমির ২/২৪, ফ্র্যাইলিঙ্ক ১/২৫, শহিদুল ৩/২৭, শামসুর ১/১৭, আমিনুল ২/১৯, শফিউল ০/১১)।

ফলাফল: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৯২ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স)।

Comments

The Daily Star  | English
Government notification banning Awami League

Govt bans activities of AL until ICT trial completion

A gazette notification was issued in this regard by Public Security Division of the home ministry

2h ago