বিয়ের পর মাথা খুলেছে লিটনের!
আগে এক ম্যাচে রান করলে পরে আরও কয়েক ম্যাচে খুঁজে পাওয়া যেত না লিটন দাসকে। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে চার-ছয়ে নান্দনিক শুরু পেতেন বটে, কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই তা টানতে না পারার ব্যর্থতার চক্রে ঘুরপাক খেতেন তিনি। এবার বিপিএলে লিটনকে দেখা যাচ্ছে অন্যরূপে। দারুণ ধারাবাহিকতায় রান পাচ্ছেন, স্ট্রাইকরেটও থাকছে ১৪০ ছুঁইছুঁই। টুর্নামেন্টে ছাড়িয়ে গেছেন চারশো রান। এসেছে পরিণত চিন্তা, এমন বদলের জন্য বিয়ে করা একটা বড় কারণ মনে করেন তিনি।
শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দেখা গেছে লিটনের আরেকটি ঝলমলে ইনিংস। তার ৪৮ বলে ৭৫ রানের ইনিংসে ভর করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৮ উইকেটের সহজ ব্যবধানে হারিয়েছে রাজশাহী রয়্যালস। এতে নিশ্চিত হয়েছে কোয়ালিফায়ার ম্যাচ খেলাও।
এখন পর্যন্ত ১২ ম্যাচ ৪২২ রান করে রান সংগ্রাহকের তালিকায় সেরা চারে আছেন লিটন। ১৩৯.৭৩ স্ট্রাইকরেট জানায় দেয় এই রান তুলতে যথেষ্ট আগ্রাসী ছিল লিটনের ব্যাট। ৩৮.৩৬ গড় টি-টোয়েন্টিতে বেশ জুতসই।
আগের চেয়ে পরিণত হয়েছেন। পরিস্থিতি পড়তে পারছেন আরও ভালো করে। অস্থির লিটন হুট করেই স্থির হয়েছেন নাকি যুগল জীবনে প্রবেশ করে। বিশ্বকাপে ভালো পারফরম্যান্স করে আসার পর গত জুলাই মাসে সঞ্চিতা বিশ্বাসকে বিয়ে করেন লিটন। পাঁচ মাসেকের যৌথ জীবন লিটনকে শিখিয়েছে দায়িত্ববোধ, মাঠের বাইরের সঙ্গে যা মাঠের খেলাতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করেন তিনি, 'আসলে অনেক সময় নিজের মাথাটা বদলে ফেলতে হয়। বয়ের পর মাথা খুলেছে। আগে বেশি আগ্রাসী ছিলাম। সংসার জীবনে যাওয়ার পর স্থির হয়েছি। বুঝতে শিখেছি। বিয়েটা আমার জন্য সৌভাগ্যেরও হতে পারে।'
‘আমি খুব ভাগ্যবান যে কম বয়সে বিয়ে করতে পেরেছি। বিয়ে জিনিসটা আমার ম্যাচুউরিটি লেভেলটা বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা আমি অনুভব করি। জানি না কে কীভাবে অনুভব করে। ওই জিনিসটাই অনুভব করছি।’
অমিত সম্ভাবনা নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে যাদের আবির্ভাব, তাদের তালিকায় উপরের দিকেই থাকবে লিটনের নাম। আঁটসাঁট টেকনিক, ব্যাটিংয়ে নান্দনিক শৈলীতে লিটন বরাবরই মেলে ধরেন দৃষ্টিসুখকর শটের পসরা। কেবল ধারাবাহিকতার অভাবই ছিল তার প্রকট। ২০১৫ সালে জাতীয় দলে আসার পর ধারাবাহিকতার কারণেই বাদ পড়েন বছর খানেক পর। বাদ গেলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে কখনই তার ব্যাটে রানখরা ছিল না।
লিটন জানালেন বিভিন্ন রকম ধাক্কা তাকে শিখিয়েছে আর বিয়ে তাকে সবখানেই করেছে পরিনত, ‘আমি যখন ১৬-১৭ (২০১৬-২০১৭) তে খারাপ ক্রিকেট খেলেছি তখন জাতীয় দেলর বাইরে ছিলাম। আমি কিন্তু অফফর্মে থাকিনি (ঘরোয়া ক্রিকেটে রানে ছিলেন)। ওই জায়গায় আমি অনেক কিছু শিখেছি। ঠেকেছি সেইসঙ্গে শিখেছি। ওটা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। আবার বিয়ের পর আবার ম্যাচউরিটি লেভেল বেড়েছে। সেটা ক্রিকেট হোক। মাঠে হোক বা মাঠের বাইরে হোক। সবকিছুতেই।’
Comments