বিক্রি বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনার নয় মাস

প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি চলছেই

অ্যান্টিবায়োটিকের সহজ লভ্যতা বন্ধে এবং প্রেসক্রিপশন ছাড়া এর বিক্রি বন্ধ করতে আদালতের নির্দেশনা থাকলেও সে ব্যাপারে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। অথচ অ্যান্টিবায়োটিকের অতি মাত্রায় ব্যবহার বাড়িয়ে তুলছে সুপারবাগের ঝুঁকি। প্রতি বছর সারা পৃথিবী জুড়ে প্রায় সাত লাখ মানুষ মারা যান এই কারণে।

অ্যান্টিবায়োটিকের সহজ লভ্যতা বন্ধে এবং প্রেসক্রিপশন ছাড়া এর বিক্রি বন্ধ করতে আদালতের নির্দেশনা থাকলেও সে ব্যাপারে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। অথচ অ্যান্টিবায়োটিকের অতি মাত্রায় ব্যবহার বাড়িয়ে তুলছে সুপারবাগের ঝুঁকি। প্রতি বছর সারা পৃথিবী জুড়ে প্রায় সাত লাখ মানুষ মারা যান এই কারণে।

সারা দেশেই এখনও নিবন্ধিত চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবায়োটিকের বিক্রি হচ্ছে। দুই শতাধিক ওষুধের দোকান পর্যবেক্ষণ এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানতে পেরেছে দ্য ডেইলি স্টার।

মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করতে ব্যবহার করা হয় অ্যান্টিবায়োটিক। তবে অ্যান্টিবায়োটিকের অত্যধিক ব্যবহার এবং অপব্যবহারের ফলে ব্যাকটেরিয়াগুলো তাদের ডিএনএতে পরিবর্তন আনতে পারে। এতে ব্যাকটেরিয়াগুলো অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ‘সুপারবাগ’-এ পরিণত হয় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশে সুপারবাগের কারণে মৃত্যু কত- এ ব্যাপারে সঠিক কোনও তথ্য নেই। তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসকরা বলছেন, আইসিইউতে প্রায় ৭০ শতাংশ মৃত্যু এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার কারণে ঘটছে।

এন্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্টেন্স (এএমআর) এমন একটি অবস্থা যেখানে রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং কিছু পরজীবীর মতো অণুজীবগুলো প্রচলিত ঔষধে ধ্বংস হয় না। ফলে আগে যেসব ঔষধে রোগ নিরাময় হত, সেগুলো অকার্যকর হয়ে পড়ে।

বিএসএমএমইউর ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সায়েদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, “সমস্যা হচ্ছে মানুষ জানে না কোন ওষুধগুলো অ্যান্টিবায়োটিক। প্রতিদিন প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছেন এবং তাদের বেশিরভাগই প্রেসক্রিপশন ছাড়াই এগুলো কিনছেন “

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌথ উদ্যোগে করা একটি সমীক্ষা দেখিয়েছে যে, গত দুই বছরে বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ৩০.৮১ শতাংশ বেড়েছে। এই সমীক্ষায় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সমীক্ষার প্রতিবেদন গত বছর ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছিল।

এর আগে গত বছরের ২৫ শে এপ্রিল হাইকোর্ট ডিজিডিএকে প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিকের বিক্রি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়।

বিষয়টি নিয়ে অ্যাডভোকেট সায়েদুল হক সুমনের করা একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে এই রায় দেওয়া হয়। যুক্তরাজ্যের দ্য টেলিগ্রাফে ডেইলি স্টারকে উদ্ধৃত করে একটি প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এই রিটটি করা হয়। গত বছর এপ্রিলে দ্য ডেইলি স্টারে ‘A big cause for health concern’ শিরোনামে প্রকাশ করা হয়।

ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ডিজিডিএ দাবি করছে যে, তারা তাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে, তারা কেবল মাত্র আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত বছরের মে মাসে সকল জেলা প্রশাসক এবং সিভিল সার্জনকে নোটিশ দিয়েছিলো।

ডিজিডিএর অতিরিক্ত ব্যবস্থা হিসেবে এক মাস পরে পুন:নোটিশ জারি করে।

ডিজিডিএর পরিচালক মো. রুহুল আমিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “সারাদেশে আমাদের ওষুধ পরিদর্শকরা নিয়মিতভাবে অংশীদারদের সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন।”

এর বাইরে আর কি করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এসব ক্ষেত্রে সচেতনতাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”

তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, ডিজিডি-এর এসব পদক্ষেপ শুধুই তাদের ‘গা বাঁচানোর’ জন্য।

২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিএসএমএমইউয়ের মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ইমিউনোলজি (ডিএমআই) বিভাগের পরীক্ষাগার থেকে করা এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে দেশে সুপারবাগের সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়ছে।

২০১০ সালে রোগীর মধ্যে সুপারবাগ এবং মাল্টি-ড্রাগ রেজিস্টান্ট (এমডিআর) ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গিয়েছিল ৬.৫ শতাংশ ক্ষেত্রে। তবে এটি ২০১৮ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, অ্যান্টিবায়োটিকের অপ্রয়োজনীয় এবং অতিরিক্ত ব্যবহার এএমআর ব্যাকটেরিয়া বা সুপারবাগের সৃষ্টি করে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এএমআর সংক্রমণ বিশ্বব্যাপী হুমকিতে পরিণত হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে এর কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় এক কোটি মানুষের মৃত্যু হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

তবে দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো বিষয়টিকে হালকাভাবে নিচ্ছেন বলে তাদের কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে।

বাস্তবতা: অধিক মুনাফার লক্ষ্য

সম্প্রতি, ডেইলি স্টারের সংবাদদাতারা রাজধানীর ফার্মগেট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) এবং সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের ওষুধের দোকানে পরিদর্শনের জন্য যান। তারা সাভার, রংপুর, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ এবং রাজশাহীর শহর ও গ্রাম অঞ্চলের ওষুধের দোকানগুলোতেও গেছেন।

সব জায়গাতেই অবস্থা ছিলো একই রকমের।

গত মাসে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার একটি গ্রামের বাজারে আধা ডজন ওষুধের দোকানে খোঁজ নিয়ে আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতা দেখতে পান সেখানে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি হচ্ছে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই।

গ্রামের বাজারের এক ওষুধের দোকানের মালিক দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, “অ্যান্টিবায়োটিকগুলো খুবই ভাল কাজ করে এবং বেশি লাভজনক। তাই মাঝে মাঝে আমরা এগুলো কেনার পরামর্শ দিই। সবাই সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিকের সম্পূর্ণ ডোজ কেনেন না। এছাড়াও তারা চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করতে চান না বাড়তি টাকা খরচ হওয়ার ভয়ে।”

খুলনার হযরত মার্কেট, ময়লাপোতা মোড়, নতুন রাস্তার মোড় এবং খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে কমপক্ষে ২৫ টি দোকানে গিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সংবাদদাতারা দেখতে পান ক্রেতারা কোনও প্রেসক্রিপশন ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ কিনছেন।

ময়লাপোতা মোড়ের আফরোজ মেডিকেল হলের মালিক জালাল আহমেদ জানান, প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রি না করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা তিনি পাননি।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের রাস্তায় শতাধিক ওষুধের দোকান রয়েছে। সেখানকার একজন ওষুধ বিক্রেতা জানিয়েছেন যে তারা অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করে বিপুল পরিমাণে লাভ করেন।

তিনি বলেন, “আমরা এ বিষয়ে কোনও নির্দেশনা পাইনি।”

নগরীর চৌহাট্টা এবং আম্বরখানাতেও একই পরিস্থিতি দেখতে পেয়েছেন দ্য ডেইলি স্টারের সংবাদদাতারা।

আমাদের ময়মনসিংহ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতারাও জেলা দুটিতে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিকের বিক্রি হতে দেখেছেন।

২০১৪ সালে রাজশাহীতে পরিচালিত এবং ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনের জার্নালে প্রকাশিত এক সমীক্ষা থেকে জানা যায়, সাধারণত আমাশয়, ডায়রিয়া, সাধারণ সর্দি, কাশি, জ্বর, দাঁতে ব্যথা, কানে ব্যথা বা গলা ব্যথায় নিজেরাই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন রোগীরা। এক্ষেত্রে তারা কোনো ডাক্তারের পরামর্শ নেন না।

ডিজিডিএ ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে এক লাখ ১৮ হাজার ৯০১টি লাইসেন্সধারী খুচরা ওষুধের দোকান আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইট থেকে জানা যায় প্রায় সম পরিমাণ লাইসেন্সবিহীন খুচরা ওষুধ বিক্রির দোকান রয়েছে।

২০১৫ সালে পরিচালিত সিস্টেম ফর ইমপ্রুভড এক্সেস টু ফার্মাসিউটিক্যালস এন্ড সার্ভিসেসের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, এসব ওষুধের দোকানে আসা ক্রেতাদের প্রায় ৬৮ ভাগর কাছেই প্রেসক্রিপশন থাকে না।

অন্য একটি গবেষণার জন্য, ইন্সটিটিউট অফ এপিডেমিওলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর) ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সারাদেশে নয়টি পাবলিক হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা প্রায় ১৪ হাজার ৬৬৯টি নমুনা বিশ্লেষণ করেছে।

এই সমীক্ষায় তারা দেখতে পান ‘ওয়াচ গ্রুপ’ অ্যান্টিবায়োটিক সেফট্রিয়াক্সোনের কার্যকারিতা ১০ থেকে ৯২ ভাগ পর্যন্ত কমে গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, অ্যান্টিবায়োটিকগুলো তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। প্রাথমিক ব্যবহারের জন্য ‘অ্যাক্সেস গ্রুপ’। ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে এর থেকে উচ্চ প্রতিরোধ গড়তে ব্যবহার করা হয় ‘ওয়াচ গ্রুপ’। আর এই দুই গ্রুপের ওষুধ যখন আর কাজ করে না তখন ব্যবহার করা হয় ‘রিজার্ভ গ্রুপ’।

আরেকটি ‘ওয়াচ গ্রুপ’ ওষুধ ইমিপেনামের কার্যকারিতাও ১০ থেকে ৭৬ শতাংশ কমেছে বলে পাওয়া গেছে। যদি এই গ্রুপের ওষুধগুলো কাজ না করে তাহলে প্রতিষেধক হিসেবে বিকল্প হতে পারে কেবল মাত্র অল্প কিছু অন্যান্য অ্যান্টিবায়োটিক।

এই গবেষণার নেতৃত্ব দেওয়া আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন হাবিব বলেছিলেন, “ওষুধের অকার্যকারিতা দেখিয়ে দিচ্ছে আমরা দ্রুত আমাদের হাতে থাকা অব্যবহৃত সীমিত এন্টিবায়োটিক ঔষধগুলোও শেষ করে ফেলছি। যখন সেগুলোও কার্যকারিতা হারাবে, তখন সাধারণ অসুখেও কোন ঔষধ কাজ করবে না। অর্থাৎ রোগ নিরাময় হবে না।”

ডিজিডিএর পদক্ষেপ কি যথেষ্ট না?

প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধ করতে ডিজিডিএর নির্দেশনার বিষয়ে একাধিক জেলা প্রশাসক বলেছেন যে, ডিজিডিএর উদ্যোগ বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে খুব একটা প্রভাব ফেলেনি।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মো. আশিব আহসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “আমরা আমাদের সকল অংশীদারদের নিয়ে একটি বৈঠক করেছি। তবে, আমরা এখনও কোনও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি নি।” আগে সচেতনতা বাড়ানোর দিকে জোড় দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, সচেতনতা বাড়াতে বিষয়টি নিয়ে আরও প্রচারণা দরকার এবং এ নিয়ে ডিজিডিএকে আরও পরিকল্পনা করা উচিত।

জানতে চাইলে ডিজিডিএর পরিচালক রুহুল আমিন প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিকের বিক্রয় ও ব্যবহার শাস্তিযোগ্য অপরাধ কিনা তাও বলতে পারেননি।

ডিজিডিএর একজন কর্মকর্তা অবশ্য বলেছেন যে, কোনও ওষুধ বিক্রেতাকে যথাযথ প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির জন্য বিদ্যমান আইনে শাস্তি দেওয়া যেতে পারে।

যদিও এখন পর্যন্ত এই ধরনের শাস্তি দিতে পারে কি না অথবা দেওয়া হয়েছে কি না, ডিজিডিএ কর্তৃপক্ষ সেটা বলতে পারেনি।

বিএসএমএমইউর অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, ডিজিডিএ এই অপরাধের জন্য ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করতে পারে। ওষুধের দোকানের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা যেতে পারে এবং দোকানটি বন্ধও করে দেওয়া যেতে পারে।

যোগাযোগ করা হলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ডিজিডিএকে বাঁচিয়ে বলেন,  “এখানে জনবলের ঘাটতি রয়েছে। সারাদেশে ওষুধের দোকান পর্যবেক্ষণ করা তাদের জন্য কঠিন।”

ডিজিডিএর সূত্র থেকে জানা যায় তাদের ৫৪ টি জেলা কার্যালয়ে মাত্র ৪৬ জন ওষুধ পরিদর্শক আছেন।

সমন্বয়ই আসল

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি হতে থাকার জন্য দায়ী মূলত ডিজিডিএর তদারকি না করা এবং ওষুধ প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি।

ডিজিডিএ জনবল নিয়োগের অপেক্ষায় অলসভাবে বসে থাকতে পারে না জানিয়ে অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, “প্রতিটি উপজেলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০ জন চিকিৎসকসহ প্রায় ২০০ জন কর্মী রয়েছেন। তারা সহজেই এএমআর সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, রোগীদের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক সংবেদনশীলতা পরীক্ষার সুযোগের অভাব থাকায় চিকিৎসকরা অনেক সময়ই অপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক লেখেন।

তিনি জানান, ৫৫টি জেলার চিকিৎসকদের এবিএস পরীক্ষার সুযোগ নেই।

আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডাঃ জাকির হোসেন হাবিব অবশ্য বলছেন, এবিএস পরীক্ষার বিকল্প হিসেবে বিদ্যমান সুবিধাগুলোই ব্যবহার করা যেতে পারে। তার জন্য, সরকারকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ল্যাব টেকনিশিয়ান নিয়োগ করতে হবে এবং পর্যাপ্ত বিকারকের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিকাল ফার্মেসি ও ফার্মাকোলজির অধ্যাপক ডা. মুনিরউদ্দিন আহমেদ প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির বিরুদ্ধে সকল স্থানীয় সংস্থাকে একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি চান এই কাজে ডিজিডিএ নেতৃত্ব দিক।

অধ্যাপক সায়েদুর রহমান পরামর্শ দিয়েছেন, এন্টিবায়োটিকের বাক্সগুলোকে লাল রংয়ের করতে। এতে সবাই সহজেই জানতে পারবে যে, এগুলো প্রেসক্রিপশন ছাড়া কেনা যাবে না। আসলে মানুষ সচেতন করাটাই সবচেয়ে জরুরি।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago