‘দেশের প্রথম প্যাকেজ নাটকের অভিনেতা আমি- ভাবতেই ভালো লাগে’

নোবেল

নোবেল এদেশের অন্যতম জনপ্রিয় মডেল। বিশেষ করে এদেশের পুরুষ মডেলদের মধ্যে কাজের দিক থেকে এখনো শীর্ষে রয়েছেন তিনি। মডেলিং ছাড়াও টিভি নাটক করেন, তবে খুবই কম। বাংলাদেশের প্রথম প্যাকেজ নাটকের অভিনেতাও তিনি। এক বছর বিরতির পর সম্প্রতি একটি টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন। দর্শক নন্দিত মডেল ও অভিনেতা নোবেল কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।

একবছর পর টিভি  নাটকে অভিনয় করলেন, কেমন লাগল?

ভালো তো অবশ্যই। ভীষণ ভালো বলতে পারি। ভালো না লাগলে তো কাজটি করা হতো না। সত্যি কথা বলতে নাট্যপরিচালকদের কাছ থেকে চাহিদা থাকার পরও সময় তো পাই না। চাকরি নিয়ে ব্যস্ত থাকি। সপ্তাহে দুই দিন ছুটি পাই। কখনো কখনো ছুটিতেও ব্যস্ত থাকতে হয়। সব মিলিয়ে নাটকের জন্য সময় বের করা কঠিন। তারপরও চেষ্টা করে সময় বের করে একটি এক ঘণ্টার নাটকে অভিনয় করেছি কয়েকদিন আগে। কাজটি সুন্দর হয়েছে।

নাটকটি সম্পর্কে জানতে চাই।

নাটকটির নাম ‘বি পেজটিভ’। এটি পরিচালনা করেছেন রূপক বিন রউফ। ‘বি পজেটিভ’ মূলত একটি সীমিত আয়ের পরিবারের গল্প। এইরকম পরিবারের মানুষের মাঝে অসৎ ভাবে কিছু করার সুযোগও আসে। তারপরও তারা সৎ থাকে, অসৎ চিন্তাটি মাথায় নেয় না। সীমিত আয়ের মধ্যে জীবন পার করে দেয়। কিন্ত একটি অ্যাকসিডেন্ট পরিবারটিকে শেষ করে দেয়। তখন কেউ পাশে দাঁড়ায় না। তারপরও বেঁচে থাকে ওই পরিবারের মানুষ। খুবই টাচ করবে দর্শকদের গল্পটি।

বাংলাদেশের প্রথম প্যাকেজ নাটকের নায়ক ছিলেন আপনি, কিছুদিন আগে ২৫ বছর হয়ে গেল নাটকটির, মনে পড়ে কাজটির কথা?

মনে তো অবশ্যই পড়ে। তবে ২৫ বছর হয়ে গেল এটা জানা ছিল না। আসলে সময় কত দ্রুত ফুরিয়ে যায়। এদেশের প্রথম প্যাকেজ নাটকটির নাম ছিল-প্রাচীর পেরিয়ে। পরিচালনা করেছিলেন বিখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব আতিকুল হক চৌধুরী। এইরকম একজন মানুষ যখন আমাকে প্রাচীর পেরিয়ে কাজটি করতে বলেন আমি না করার সাহস পাচ্ছিলাম না। নাটকটিতে আমি মাসুদ রানা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। বিপাশা হায়াত ছিলেন। বিপাশা হায়াতকে আমি বলেছিলাম কাজটি করতে চাই না, কেননা আমি তো অভিনয়ের মানুষ নই। আমি হচ্ছি মডেল। তখন বিপাশা হায়াত আমাকে সাহস দিয়ে বলেছিলেন-কাজটি করো। এভাবেই করি। আর সেটিই হয়ে যায় এদেশের প্রথম প্যাকেজ নাটক। বাংলাদেশের প্রথম প্যাকেজ নাটকের অভিনেতা আমি এটা ভাবতেই ভালো লাগে।

কী ধরনের সীমাবদ্ধতা ছিল তখনকার নাটকে?

অনেক ধরণের লিমিটেশন ছিল। তারপরও কাজটি করেছি। বলতে পারেন-সবাই একটা লিমিটেশন এর মধ্যে দিয়ে কাজ করতেন। ওখন তো এখনকার মতো টেকনোলজি ছিল না। ধরুন, মাসুদ রানার জন্য হেলিকপ্টারের প্রয়োজন ছিল, কিন্ত আনা হয়েছিল মাইক্রোবাস। এত অর্থ কোথায় পাওয়া যাবে? আরও নানা সীমাবদ্ধতা থাকার পরও পরিচালকের যত্ন এবং শিল্পীদের পরিশ্রমের জন্যই কাজগুলো ভালো হতো।

এদেশের পুরুষ মডেলদের মধ্যে এখনো আপনি সেরার তালিকায় আছেন, এই বিষয়টি কিভাবে দেখেন?

এজন্য প্রথমত কৃতজ্ঞতা জানাই আমার সৃষ্টিকর্তাকে। তারপর ধন্যবাদ দেব আমার দর্শকদের। এই প্রশ্নটা আমাকে অনেকেই করেন। আমার বক্তব্য হচ্ছে-মডেলিং আমার প্যাশন। বছরে একটি বা দুটি বিজ্ঞাপন করি। এখনো তাই। চাইলেই তো অনেক করতে পারি। মডেলিং করার সময় যে পরিমাণ সময় দেই, শ্রম দেই তা সবাই নাও দিতে পারেন। আমি দেই। পরিচালকের সাথে বসে গল্প শেয়ার করি। আমার নিজের কিছু ভাবনা থাকলে তাও শেয়ার করি। কাজটির ভেতরে পুরোপুরি ঢুকে যাই। এজন্যই আমার মডেলিং এর আউটপুট ভালো হয়। যার জন্যই হয়ত এত বছরেও মডেলিং এর জায়গাটা আমার জন্য ভালো অবস্থানেই আছে।

আপনার অবসর কাটে কিভাবে?

অবসরে বাচ্চাদের সময় দিই। বেশি ছুটি পেলে এবং বাচ্চাদের স্কুল ছুটি থাকলে দূরে ঘুরতে যাই। কম সময় অবসর পেলে সেভাবেই কোথাও না কোথাও পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাই। আমার অবসরের সময় কাটে পরিবারের সঙ্গে।

টিভি নাটকে আপনার অনেক চাহিদা, কিন্ত কাজ কম করেন, অভিনয়টাকে মিস করেন কি?

অবশ্যই মিস করি অভিনয়টাকে। সময় পাই না বলেই তো কাজ কম করি। অল্প করে যতটুকু ফিডব্যাক পাই তার জন্য বুঝতে পারি দর্শকরা আমাকে কতটা পছন্দ করেন। আরেকটু বেশি কাজ করতে ইচ্ছে করে, কিন্ত সময় বের করতে পারি না। একবার দেশের বাইরে যাচ্ছিলাম এয়ারপোর্ট এ কয়েকজন বাঙালি আমাকে বললেন নাটক কম করি কেন? নাটক কম করি এই প্রশ্নটা অনেকের কাছ থেকেই শুনতে হয়। এজন্যই বলি-অভিনয়টাকে দারুণ মিস করি।

নতুন প্রজন্মের পরিচালকদের নিয়ে বলুন।

কেউ কেউ খুব ভালো কাজ করছেন। দুই বছর আগেও আমি শেষ যে নাটকটি করেছিলাম, তার পরিচালকও  নতুন প্রজন্মের ছিলেন। এবারও নতুন প্রজন্মের পরিচালক এর কাজ করলাম। নতুনরাই ভালো করবেন।

আর কোনো নাটকের শুটিং করবেন কি?

করব। একটি এক ঘণ্টার নাটকের শুটিং করব। সামনের মাসে সেটা। নাটকটি পরিচালনা করবেন শেখ সেলিম। আমার সাথে একজন জনপ্রিয় চিত্র নায়িকার কাজটি করার কথা। এই নাটকটির জন্য তিন চার মাস ধরে বলা হচ্ছে আমাকে। আশা করছি আগামী মাসে করতে পারব।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago