নাটকীয় ম্যাচে রাসেল ঝড়ে ফাইনালে রাজশাহী

১৮তম ওভারে মাত্র ৬ রান দিলেন রুবেল হোসেন। শেষ দুই ওভারে তখন দরকার ৩১ রানের। দুই ছক্কা দুই চারে মেহেদী হাসান রানার ১৯তম ওভারে এলো ২৩ রান। ফলে শেষ ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৮ রান। শেষ ওভারে সে রান করতে দুই বল খেলতে হয়েছে রাজশাহী রয়্যালসের। প্রথম দুই বলে রান না এলেও পরে একটি ওয়াইড ও একটি নো-বলে এবং সে নো-বলে ছক্কা হাঁকালে ম্যাচের নাটকীয় সমাপ্তি হয়। অবিশ্বাস্য এ জয়ের মূল নায়ক অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

১৮তম ওভারে মাত্র ৬ রান দিলেন রুবেল হোসেন। শেষ দুই ওভারে তখন দরকার ৩১ রানের। দুই ছক্কা দুই চারে মেহেদী হাসান রানার ১৯তম ওভারে এলো ২৩ রান। ফলে শেষ ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৮ রান। শেষ ওভারে সে রান করতে দুই বল খেলতে হয়েছে রাজশাহী রয়্যালসের। প্রথম দুই বলে রান না এলেও পরে একটি ওয়াইড ও একটি নো-বলে এবং সে নো-বলে ছক্কা হাঁকালে ম্যাচের নাটকীয় সমাপ্তি হয়। অবিশ্বাস্য এ জয়ের মূল নায়ক অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল।

বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ২ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালের টিকেট কাটে রাজশাহী রয়্যালস।

অথচ এদিন ম্যাচের এক সময় মনে হয়েছিল বেশ বড় জয়ই পেতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম। ১৫ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৮৯ রান ছিল তাদের। এরপর ম্যাচের মোড় একাই ঘুরিয়ে দেন রাসেল। পুরো বিপিএলে খোলসে আবদ্ধ থাকা এ ব্যাটসম্যান গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পুষিয়ে দিলেন এ ক্যারিবিয়ান। মাত্র ২২ বলে খেলেন ৫৪ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। আর এ ইনিংস সাজাতে ২টি চারের সঙ্গে ছক্কা মেরেছেন ৭টি।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটাই ভালো হয়নি রাজশাহীর। দলীয় ১৪ রানেই বিদায় নেন দুই ওপেনার আফিফ হোসেন ধ্রুব ও লিটন কুমার দাস। এরপর স্কোরবোর্ডে ২০ রান হতে ফিরে যান অলক কাপালীও। ফলে বড় চাপে পড়ে যায় দলটি। এরপর শোয়েব মালিককে নিয়ে দলের হাল ধরেন ইরফান শুক্কুর। স্কোরবোর্ডে ৪৬ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। মালিকের বিদায়ে ভাঙে এ জুটি। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি শুক্কুরও।

প্রথম কোয়ালিফায়ারে ম্যাচ হারলেও দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন রাজশাহীর পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক। কিন্তু দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে বলে ব্যাটে করতেই যেন হিমশিম খেলেন এ ব্যাটসম্যান। অথচ দলের অন্যতম ভরসা ছিলেন তিনি। আগের ম্যাচে ৫০ বলে ৮০ রান করা মালিক এদিন ২২ বলে করেন মাত্র ১৪ রান। ইরফানের ব্যাট থেকে আসে ৪২ বলে ৪৫ রান। তবে তাদের ব্যর্থতা একাই ঘুচিয়ে দেন রাসেল। চার বল বাকী রেখেই দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি।

মালিক-শুক্কুররা রানের চাকা সচল রাখতে না পারা দলকে টেনে তোলার পথে মোহাম্মদ নাওয়াজকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ৩৩ রানের জুটি গড়েন রাসেল। এরপর ১৭তম ওভারে জোড়া উইকেট তুলে রাজশাহীকে ফের চাপে ফেলে দেন রায়াদ এমরিত। কিন্তু রাসেল যেন ভিন্ন পণ করে নেমেছিলেন। বাকী কাজ একাই করেন অধিনায়ক।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে চট্টগ্রাম। ক্রিস গেইলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালোই ছিল দলটির। দলীয় ৪৫ রানে ২টি উইকেট হারালেও গেইলের আগ্রাসনে রানের চাকা ছিল সচল। ফলে ১০ ওভারের আগেই শতরানের কোটা পার করে দলটি।

দলীয় ৯৭ রানে আফিফ হোসেন ধ্রুবর বলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান গেইল। এরপর তোপ দাগানো শুরু করে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। আফিফের সেই ওভারেই মারেন ২টি ছক্কা। তবে চট্টগ্রাম অধিনায়ককে খুব বেশি আগাতে দেননি মোহাম্মদ নাওয়াজ। তার কুইকার ঠিকভাবে খেলতে না পারলে বোল্ড হয়ে যান অধিনায়ক। এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে দলটি। যদিও কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন আসেলা গুনারাত্নে। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬৪ রান করে থামে দলটি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬০ রানের ইনিংস খেলেন গেইল। মাত্র ২৪ বলে ৬টি চার ও ৫টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। এছাড়া মাহমুদউল্লাহ ৩৩ ও গুনারাত্নে ৩১ রান করেন। রাজশাহীর পক্ষে দুর্দান্ত বোলিং করেন ইরফান ও নাওয়াজ। দুই জনই পান ২টি করে উইকেট। তাদের করা ৮ ওভারে রান খরচ হয় মাত্র ২৯।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৬৪/৯ (জিয়া ৬, গেইল ৬০, ইমরুল ৫, মাহমুদউল্লাহ ৩৩, ওয়ালটন ৫, নুরুল ০, গুনারাত্নে ৩১, এমরিত ২, রুবেল ৮*, নাসুম ০, রানা ০; ইরফান ২/১৬, জায়েদ ০/১৬, শোয়েব ০/১৮, কামরুল ০/১৬, রাসেল ১/৩৫, নাওয়াজ ২/১৩, আফিফ ১/২০, কাপালী ০/৯)।

রাজশাহী রয়্যালস: ১৯.২ ওভারে ১৬৫/৮ (লিটন ৬, আফিফ ২, শুক্কুর ৪৫, কাপালী ৯, মালিক ১৪, রাসেল ৫৪*, নাওয়াজ ১৪, রেজা ৬, রাব্বি ০, রাহী ৫*; রানা ১/৪৭, রুবেল ২/৩২, এমরিত ২/৪১, নাসুম ০/১১, মাহমুদউল্লাহ ১/১০, জিয়া ১/১৬, গুনারাত্নে ০/৮)।

ফলাফল: রাজশাহী রয়্যালস ২ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আন্দ্রে রাসেল (রাজশাহী রয়্যালস)।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago