মৃত্যুশয্যায় পাবনার একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা, প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসা
ভালো নেই পাবনার তালিকাভুক্ত একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা (৮০)। ছয় মাস আগে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এখন নিজের কুঁড়ে ঘরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। অর্থাভাবে মায়ের সুচিকিৎসা করাতে পারছেন না ভানু নেছার সন্তানরা।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, সাঁথিয়ায় সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন ভানু নেছা। গোলা-বারুদ মাথায় করে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌঁছে দিতেন তিনি। গুলি লেগে আহত হয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালে পাবনায় ও ঢাকায় সরকারি-বেসরকারিভাবে তাকে সম্মানিত করা হয়। কিন্তু এখন আর কেউ তার খবর নেন না।
সাঁথিয়ার নন্দনপুর ইউনিয়নের তেথুঁলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ভানু নেছার স্বামী আব্দুল প্রামাণিক মারা যান কয়েক বছর আগে। ভানু নেছার দুই ছেলে দিনমজুরের কাজ করেন। মায়ের সরকারি ভাতা এবং নিজেদের সামান্য আয়ে কোনমতে চলে তাদের সংসার। তাই অর্থাভাবে মায়ের সুচিকিৎসা করতে পারছেন না তারা।
ভানু নেছার দুই ছেলে ইউনুস আলী ও শহিদুল ইসলাম জানান, তার মা বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। কোলে করে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিতে হয়। পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ায় ইশারায় কথা বলেন। ছয় মাস হলো ঠিকমতো খেতে পারেন না।
সাঁথিয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল লতিফ জানান, একাত্তরে নন্দনপুরে যখন পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধ শুরু হয়, তখন আমরা বাঙ্কারে ছিলাম। এই ভানু নেছা তখন আমাদের অনেকভাবে সহযোগিতা করেছিলেন। তিনি কোমরে বেঁধে থানা থেকে গোলাবারুদ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সরবরাহ করেছিলেন। তিনি আজ অর্থাভাবে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। ভানু নেছার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য আমরা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম জামাল আহমেদ জানান, “আমি ইতিমধ্যে তার অসুস্থতার খোঁজ-খবর নিয়েছি। বাড়িতে গিয়ে তাকে দেখে গুরুতর অসুস্থ মনে হয়নি। বয়সের ভারে তিনি নুয়ে পড়েছেন। তারপরও প্রয়োজন হলে উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে অবশ্যই তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। তাৎক্ষণিকভাবে পরিবারকে অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছে।
Comments