বাড়তি গতি আর ভবিষ্যৎ ভাবনায় জাতীয় দলে হাসান মাহমুদ
১৩ ম্যাচে ১০ উইকেট। ইকোনমি ৯.২০। তবে এই পরিসংখ্যান বিচারে নয়, হাসান মাহমুদ বাংলাদেশ জাতীয় দলে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন তার বাড়তি গতির কারণে। পাশাপাশি দারুণ সম্ভাবনাময় হওয়ায় বঙ্গবন্ধু বিপিএলে তার চেয়ে ভালো করা বেশ কয়েকজন পেসারকে পেছনে ফেলেছেন ২০ বছর বয়সী এই তরুণ।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) পাকিস্তানের মাটিতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। চমক দেখিয়ে একমাত্র নতুন মুখ হিসেবে দলে এসেছেন মাহমুদ।
বিপিএলে ঢাকা প্লাটুনের হয়ে খেলা মাহমুদ নিয়মিত বল করেছেন ১৪০ কিলোমিটারের আশেপাশে। চট্টগ্রাম পর্বে স্বাগতিক দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ঘণ্টায় ১৪৪.১ কিলোমিটার গতির একটি ডেলিভারি দিয়ে বিস্ময় জাগিয়েছিলেন তিনি। সেই গতির রথে চড়েই বাংলাদেশ দলে ঠাঁই পেয়েছেন শৈশবে শোয়েব আখতার, ব্রেট লির মতো পেসারদের দেখে জোরে বোলিংয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠা মাহমুদ।
বিসিবির নির্বাচক হাবিবুল বাশার তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, গতি দিয়েই নজর কেড়েছেন মাহমুদ, ‘সে একজন জেনুইন ফাস্ট বোলার। এবার (বিপিএলে) বেশ কিছু ফাস্ট বোলার পেয়েছি আমরা। তবে হাসান মাহমুদ তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গতিসম্পন্ন। এটা খুবই দরকার হয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। তরুণ ছেলে। খুব ভালো করছে।’
‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বোলিং করতে গেলে হয় আপনার হয় ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতি থাকতে হবে অথবা সুইং থাকতে হবে। আমাদের তো সেরকম বোলার তেমন নাই। হাসান মাহমুদের মধ্যে গতির ব্যাপারটা আছে। সে কিন্তু আরও জোরে বল করতে পারে।’
চট্টগ্রামের বাঁহাতি পেসার মেহেদী হাসান রানা বিপিএলে ১০ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ১৮ উইকেট। ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনবার। গড় (১৫.৮৩) আর ইকোনমিতেও (৭.৫০) মাহমুদের চেয়ে যোজন যোজন ব্যবধানে এগিয়ে আসরে দারুণ পারফর্ম করা রানা। সিলেট থান্ডারের ইবাদত হোসেন আর (১২ ম্যাচে ১৪ উইকেট) আর খুলনা টাইগার্সের শহিদুল ইসলামও (১৩ ম্যাচে ১৯ উইকেট) পরিসংখ্যানের দিক থেকে অনেক সামনে।
তবে গতির সঙ্গে সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিয়েই মাহমুদ নিজেকে আলাদা করেছেন বাকিদের থেকে। পরিসংখ্যান আহামরি না হলেও আসর জুড়ে বুদ্ধি খাটিয়ে-পরিকল্পনা সাজিয়ে বল করে গিয়েছেন। গতির সঙ্গে তার ভাণ্ডারে আছে সুইং আর স্লোয়ারও।
মাহমুদকে নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানাতে গিয়ে বাশার বলেছেন, ভবিষ্যতে এরকম পেসারই চাই তাদের, ‘তাকে সেভাবেই দেখাশোনা করা হবে যেন বোলিংয়ে নিয়ন্ত্রণ আনতে গিয়ে গতি কমে না যায়। বিপিএলের শুরুতে যতটা গতিতে সে বল করেছিল, শেষের দিকে কিন্তু ততটা হয়নি। কারণ একটানা ম্যাচ খেলতে হয়েছে। এখন যেহেতু বিপিএল শেষ, আমাদের হাতে সুযোগ আছে, সামনে (পাকিস্তান সফরে) ম্যাচ খেলুক বা না খেলুক, একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকবে। ভবিষ্যতে তার মতো বোলার আমাদের দরকার।’
Comments