কাঠবিড়ালীর ঘরে থ্রিলারের প্রবেশ
সর্ম্পক একটা ফাঁদ! সেই ফাঁদের গল্পই বুনেছেন পরিচালক। ভালোবাসার সম্পর্কের গল্পে একটু একটু করে ঢুকে পড়ে প্রতিশোধ। তবে ‘কাঠবিড়ালী’ সিনেমাটা কি ভালোবাসা, বন্ধুত্ব, বিশ্বাসহীনতা ও প্রতিশোধের গল্প? সিনেমার গল্পটি নিজের গতিতেই এগিয়েছে। কোথাও আরোপিত মনে হয়নি। গল্পের প্রয়োজনে চরিত্ররা ফুটে উঠেছে।
গ্রাম বাংলার পরিচিত গল্প ‘কাঠবিড়ালী’র। প্রথমদিকে নিছক সাদামাটা ভালোবাসার গল্প মনে হলেও ধীরে ধীরে বাঁকবদল ঘোরের মধ্যে নিয়ে যায়। সেই ঘোর থেকে আর বের হতে দেয় না। নিটোল ভালোবাসার গল্পটি বিরতির পর রহস্যে মোড়ানো থ্রিলার হয়ে উঠে। গল্পের এই মুনশিয়ানা যত্নের সঙ্গে বুনেছেন পরিচালক। গল্পটা তিনি বলতে চেয়েছেন, সঠিকভাবে বলার চেষ্টা করেছেন। কখনো কখনো মনে হতে পারে গল্পটাই নায়ক-নায়িকা।
নিয়ামুল মুক্তার প্রথম পরিচালনা ‘কাঠবিড়ালী’। তবে কোথাও প্রথম ছবি বানানোর অদক্ষতা চোখে পড়েনি। এখানেই তার সার্থকতা। নির্মাণের প্রতি সততা, নিজের বিশ্বাসকে পর্দায় এঁকেছেন যত্ন করে। বড় একটা ধন্যবাদ তার প্রাপ্য।
‘কাঠবিড়ালী’ ছবির চিত্রায়নে কাব্যময়তা চোখে প্রশান্তি ছড়াবে। গ্রামবাংলার সৌন্দর্য চমৎকার ভাবে তুলে ধরেছেন ছবিতে। অনেকদিন লেগে থাকবে মনের ভেতরে। পাট খেতের গভীর, বহমান আর শুকনো নদীর দৃশ্য, রাতের জোছনা, বটগাছ, সবুজ ধানখেতের আইল মুগ্ধ করে রাখবে কিছুক্ষণের জন্য। চিত্রায়নের সঙ্গে ছবির আবহসঙ্গীত মিলেমিশে একাকার হয়েছে। ইমন চৌধুরী সুরের মায়াজালে বুঁদ করে রাখার চেষ্টা করেছেন। শফি মন্ডলের গাওয়া গানটি বুকের কোথাও যেন হাহাকার তৈরি করে। ‘পতি’ গানটাও তাই।
‘কাঠবিড়ালী’ ছবির অন্যতম অভিনেত্রী অর্চিতা স্পর্শিয়া চরিত্রের মধ্যে ঢুকে কখন ‘কাজল’ হয়ে উঠেছেন নিজেই হয়তো টের পাননি। তার অনবদ্য অভিনয় মুগ্ধ করেছে। তবে কিছু দৃশ্যে কাজলের পোশাক নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। গ্রামের একটা মেয়ে এতোটা নতুন পরিপাটি পোশাক পরে থাকে কি? পরিচালক বিষয়টার দিকে একটু মনোযোগ দিতে পারতেন। হাসু চরিত্রের অভিনয় শিল্পী আসাদুজ্জামান আবীর প্রত্যাশার চেয়ে ভালো করেছেন। চমকে দিয়েছেন অভিনয়ের দক্ষতায়। এছাড়া সাঈদ জামান, শাহরিয়ার ফেরদৌস, শিল্পী সরকার, হিন্দোল রায়, এ কে আজাদ, তানজিনা রহমান নিজ নিজ চরিত্রে সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছেন।স্পর্শিয়া ও আবীর, ছবি: সংগৃহীত
Comments