ঘুরে দাঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়াকে সিরিজ হারালেন রোহিত-কোহলিরা
ইনিংসের শেষ ভাগে জ্বলে ওঠেন পেসার মোহাম্মদ শামি। সেঞ্চুরিয়ান স্টিভেন স্মিথকে ফিরিয়ে দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে বেঁধে রাখেন তিনশর নিচে। ওই মোমেন্টাম ধরে রেখে রান তাড়ায় দলকে পথ দেখান ওপেনার রোহিত শর্মা। তার সেঞ্চুরির পর তিন অঙ্ক ছোঁয়ার সম্ভাবনা জাগান অধিনায়ক বিরাট কোহলিও। তিনি বিদায় নিলে বাকি কাজটা সারেন শ্রেয়াস আইয়ার। তাতে অনায়াস জয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে ভারত।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে অজিদের ৭ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। বেঙ্গালুরুতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৮৬ রান তোলে সফরকারীরা। জবাবে ১৫ বল বাকি থাকতে ৩ উইকেটে ২৮৯ রান করে জয়োল্লাসে মাতে ভারতীয়রা।
প্রথম ওয়ানডেতে ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারের পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছেন কোহলিরা। আগের ম্যাচে তারা জয় পেয়েছিলেন ৩৬ রানে।
ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৬ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। এরপর আগের ম্যাচের মতোই হাল ধরেন স্মিথ ও মারনাস লাবুশেন। তাদের ১২৭ রানের জুটিতে বড় স্কোর গড়ার আশা জাগিয়েছিল দলটি। কিন্তু ৬৪ বলে ৫৪ রান করে লাবুশেন ফিরলে স্মিথ আর যোগ্য সঙ্গী হিসেবে পাননি কাউকে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি তুলে তিনি সাজঘরে ফেরেন ১৩১ রানে। তার ১৩২ বলের ইনিংসে ছিল ১৪ চার ও ১ ছয়।
রানের গতি বাড়াতে লাবুশেন আউট হওয়ার পর চমক দেখিয়ে মিচেল স্টার্ককে পাঁচে নামিয়েছিল অজিরা। কিন্তু রানের খাতা খোলার আগেই রবীন্দ্র জাদেজার শিকার হন বাঁহাতি পেসার। ছয়ে নেমে অ্যালেক্স ক্যারি করেন ৩৫ রান। শেষ ১০ ওভারে মাত্র ৬৩ রান যোগ করতে পারে অস্ট্রেলিয়া। হারায় ৫ উইকেট।
৬৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ভারতের সবচেয়ে সফল বোলার এদিন শামি। নিজের শেষ ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান খরচ করেন ডানহাতি পেসার। সাজঘরে পাঠান স্মিথ, প্যাট কামিন্স ও অ্যাডাম জ্যাম্পাকে।
এরপর ভারতকে দারুণ শুরু পাইয়ে দেন রোহিত। শিখর ধাওয়ান কাঁধে চোট পাওয়ায় ওপেনিং করতে নামা লোকেশ রাহুল ছিলেন দর্শকের ভূমিকায়। ৬৯ রানের উদ্বোধনী জুটিতে তার অবদান মাত্র ১৯।
প্রতিপক্ষ বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ১৩৭ রান যোগ করেন রোহিত-কোহলি। অজিদের সেরা দুই পেসার, কামিন্স ও স্টার্কের ওপর দিয়েই ঝড়টা গিয়েছে বেশি। ক্যারিয়ারের ২৯তম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে রোহিত ফেরার পর কাণ্ডারি হয়ে ওঠেন কোহলি। দ্রুত রান তোলায় তাকে সঙ্গ দেন শ্রেয়াস। রান তাড়ায় বরাবরই দুর্বার ভারত দলনেতা অল্পের জন্য হন সেঞ্চুরিবঞ্চিত।
গোটা ইনিংসে একবারের জন্যও ভারতকে চেপে ধরতে পারেনি অ্যারন ফিঞ্চের দল। রোহিত ১২৮ বলে ১১৯ রান করেন ৮ চার ও ৬ ছক্কায়। কোহলির ৯১ বলে ৮৯ রানের ইনিংসে ছিল ৮টি চার। মেরেকেটে খেলে শ্রেয়াস ৩৫ বলে ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন। ম্যাচসেরা হন রোহিত। সিরিজ সেরার পুরস্কার জেতেন কোহলি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৮৬/৯ (ওয়ার্নার ৩, ফিঞ্চ ১৯, স্মিথ ১৩১, লাবুশেন ৫৪, স্টার্ক ০, ক্যারি ৩৫, টার্নার ৪, অ্যাগার ১১*, কামিন্স ০, জ্যাম্পা ১, হ্যাজেলউড ১*; বুমরাহ ০/৩৮, শামি ৪/৬৩, সাইনি ১/৬৫, কুলদীপ ১/৬২, জাদেজা ২/৪৪)
ভারত: ৪৭.৩ ওভারে ২৮৯/৩ (রোহিত ১১৯, রাহুল ১৯, কোহলি ৮৯, শ্রেয়াস ৪৪*, মনিশ ৮*; কামিন্স ০/৬৪, স্টার্ক ০/৬৬, হ্যাজেলউড ১/৫৫, অ্যাগার ১/৩৮, জ্যাম্পা ১/৪৪, লাবুশেন ০/১১, ফিঞ্চ ০/৯)
ফল: ভারত ৭ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ভারত ২-১ ব্যবধানে জয়ী।
Comments