চা বিক্রেতা রফিকুল জেল খাটছেন ‘নামের’ কারণে!

নামের সঙ্গে মিল থাকায় করাতকলের মালিকের পরিবর্তে এক চা বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। গত পাঁচদিন যাবত চা বিক্রেতা ওই যুবক জেলখানায় রয়েছেন। বন মামলায় পরোয়ানাভুক্ত এক আসামির নামের সঙ্গে মিল থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
Rafiqul Islam
চা বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

নামের সঙ্গে মিল থাকায় করাতকলের মালিকের পরিবর্তে এক চা বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। গত পাঁচদিন যাবত চা বিক্রেতা ওই যুবক জেলখানায় রয়েছেন। বন মামলায় পরোয়ানাভুক্ত এক আসামির নামের সঙ্গে মিল থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জেল হাজতে থাকা ওই যুবক গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড (দারগারচালা) এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে রফিকুল ইসলাম। গত ১৭ জানুয়ারি বিকালে শ্রীপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) কফিল উদ্দিন যুবককে তার চা স্টল থেকে গ্রেপ্তার করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও চা বিক্রেতা রফিকুল ইসলামের বাবা নূর মোহাম্মদ বলেছেন, “আমার ছেলের নামে কখনও কোনো মামলা নেই। তার চা বিক্রি দিয়েই আমাদের সংসার চলে। কথা নেই, বার্তা নেই শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকালে পুলিশ এসে তার কাছে নাম ও বাবার নাম জানতে চায়। এটি শুনেই তার নামে ওয়ারেন্ট রয়েছে বলে তার হাতে পুলিশ হাতকড়া লাগিয়ে দেয়। এলাকার লোকজন বারবার বিষয়টি বলার পরও চা বিক্রেতা রফিকুলকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ।

রফিকও এ সময় অনেকবার কাকুতি-মিনতি ও কান্নাকাটি করে তার নামে কোনো মামলা না থাকার কথা বলছিলেন। কিন্তু, পুলিশ কর্মকর্তা এএসআই কফিল কারো কথা আমলে না নিয়ে এমনকী যাচাই না করে তাকে নিয়ে যান।

শ্র্রীপুর বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, লাইসেন্সবিহীন করাতকলে গজারি গাছ চেরাই করার অভিযোগে ২০১৫ সালের ৮ জুলাই শ্রীপুর সদর বন বিট অফিসার সহিদুর রহমান কেওয়া পশ্চিমখণ্ডের বেগুন বাড়ি এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে রফিকুল ইসলামকে আসামি করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (বন) আদালতে একটি মামলা করেন। মামলায় রফিকুলের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ পাঠানো হয় শ্রীপুর থানায়।

অপরদিকে, এ মামলার প্রকৃত আসামি নূর মোহাম্মদের ছেলে রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি করাতকলের ব্যবসা করেন। মামলাটি তার বিরুদ্ধেই করা হয়েছিলো। তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন।

এ বিষয়ে শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমান বলেছেন, “পুলিশের একটু ভুলের কারণে একজন সাধারণ নিরপরাধ মানুষ জেল খাটছেন। এর দায় কে নেবে?”

শ্রীপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) কফিল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছেন, “চা বিক্রেতা রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর দীর্ঘ সময় থানায় রাখা হয়। তখন কেউ ব্যাপারটি জানাননি।”

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেছেন, “মামলাটি আদালতে দায়ের করা। দুজনের নাম, বাবার নাম ও এলাকা একই। থানার মামলা হলে সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার ছিলো। এখন আদালত ডিসাইড করবে সে প্রকৃত আসামি কী না।”

“তবে যতোদূর জানতে পেরেছি গ্রেপ্তারকৃত রফিকুল চা বিক্রেতা। অপর রফিকুল করাতকলের মালিক,” যোগ করেন ওসি।

Comments

The Daily Star  | English
Dhaka Battery-Powered Rickshaw Restrictions

Traffic police move against battery-run rickshaws on major roads

The move has brought some relief to commuters, as the high-speed rickshaws have been causing accidents.

2h ago