আমার এন্ডোর্সমেন্ট কেন বাড়ে খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন: সাকিব

নিষিদ্ধ হলেও সাকিবের জনপ্রিয়তায় কোনো ভাটা পড়েনি। এখনো আগের মতো কিংবা বলতে গেলে আগের চেয়েও বেশি মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছেন তিনি। মানুষের সমর্থন পাওয়ায় তাকে পণ্যদূত করতে এগিয়ে আসছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও।
ছবি: প্রবির দাস

বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারিতে এক বছর নিষিদ্ধ ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার স্টিভেন স্মিথ আর ডেভিড ওয়ার্নার। ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস নাইট-ক্লাবে মারামারি করেও পড়েছিলেন নিষেধাজ্ঞায়। শাস্তির ওই সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের বিজ্ঞাপনী চুক্তিও বাতিল হয়ে গিয়েছিল। এদের সবার চেয়ে আরও গুরুতর কারণে ক্রিকেটে নিষিদ্ধ আছেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু বিজ্ঞাপনী বাজারে তার কদর যেন হু হু করে আরও বেড়ে গেছে।

তিন তিনবার জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করায় গত ২৯ অক্টোবর এক বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ হন সাকিব। স্পর্শকাতর বিষয়ে নিষিদ্ধ হলেও এরপর বেশ কয়েকটি পণ্যসেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি নবায়নে তৎপর দেখা যাচ্ছে সাকিবকে। নিষিদ্ধের পর পরই তার সঙ্গে চুক্তি করে মোবাইল ফোনসেট নির্মাতা হুয়াওয়ে, সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি), মোটরবাইক কোম্পানি ইয়ামাহা। তার সঙ্গে চুক্তি চলমান আছে অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবারেরও।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভারের পণ্য লাইফবয়ের পণ্যদূত হিসেবে চলমান চুক্তি আরও তিন বছরের জন্য নবায়ন করেছেন সাকিব। রাজধানীর দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে চুক্তি নবায়ন অনুষ্ঠানে পণ্যটির বিজ্ঞাপনে দেখানো হয়, কঠিন সময়ে থাকা সাকিব আছেন আরও শক্তভাবে ফিরে আসার পথে। কিন্তু কঠিন সময়েও তার বিজ্ঞাপনী বাজার রমরমা থাকার কারণ কী? সাকিব মুচকি হেসে জবাব দিলেন, ‘আপনি একটু চেষ্টা করেন কারণ খুঁজে বের করার।’

সেই কারণ খুঁজে বের করা অবশ্য কঠিন কিছু নয়। নিষিদ্ধ হলেও সাকিবের জনপ্রিয়তায় কোনো ভাটা পড়েনি। এখনো আগের মতো কিংবা বলতে গেলে আগের চেয়েও বেশি মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছেন তিনি। মানুষের সমর্থন পাওয়ায় তাকে পণ্যদূত করতে এগিয়ে আসছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও।

সাকিব জানালেন, মানুষের এই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে তিনি মুখিয়ে আছেন, ‘বাংলাদেশে অনেকবারই শুনেছেন কিংবা এই কথা প্রচলিতও আছে যে জীবিত থাকতে মর্মটা বোঝা যায় না। আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, আমি জীবিত থাকতে মর্মটা বুঝতে পারছি। আমি খুশি, যেহেতু সবার ভালোবাসা আছে। এখানে আমার দায়িত্বটা বেড়ে যায় স্বাভাবিকভাবে। এই দায়িত্বটা পালন করতে আমি চেষ্টা করব।’

ক্রিকেটের সবচেয়ে স্পর্শ কাতর বিষয়গুলোর একটিতে নিষিদ্ধ হওয়া সাকিবকে পণ্যদূত করায় তাদের ভাবমূর্তির ক্ষতি হচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্ন গেল ইউনিলিভারের কাছেও। প্রতিষ্ঠানটির বিপনন পরিচালক নাফিস আনায়োর বোঝাতে চাইলেন তেমন কোন আভাস তাদের কাছে নেই, 'লাইভবয় সোশ্যাল ইস্যু নিয়ে কাজ করে। হ্যান্ডওয়াশের যে প্রোগ্রামটা স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক হিসবে আমরা করি, সবচেয়ে বড় আয়োজন। সেখানে সাকিব প্রতি বছর একবার করে যান। আমরা চেষ্টা করি বাচ্চাদের দিনে হাত ধোঁয়ার অভ্যাস চালু করতে। আমাদের ব্যান্ড ইমেজে ক্ষতি করবে কিনা সময় বলে দেবে। আমরা এখন তা মনে করছি না। অথেনটিসিটিকে আমরা গুরুত্ব দেই। ব্র্যান্ড এবং ব্র্যান্ড এম্বেসডর সাকিব মোস্ট অথেনটিক।'
 
অবশ্য এই প্রশ্নে সাকিবও নিজে থেকেই দিলেন ব্যাখ্যা। জানালেন ইউনিলিভারের সঙ্গে তার সম্পর্কটা আর কেবলই পেশাদার মোড়কে আটকে নেই, 'আমাদের সম্পর্কটা এমন একটা জায়গায় এসে পৌঁছেছে যে ব্যক্তিগত কোন সমস্যার কারণে কনফ্লিক্ট তৈরি হবে, বা এটার (নিষিদ্ধের) কারণে খারাপ হবে সম্পর্ক এই অবস্থায় নেই।। এতদিন একটা জিনিস চলার পর এই জায়গাটা থাকে না। এখন আর ফাইনান্সিয়াল, এন্ডোরসমেন্ট ইত্যাদি আর চিন্তায় আসে না। একটা ব্রান্ডের সঙ্গে তখন পরিবারের মতো সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই।'
 
তিন তিনবার জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করায় গত ২৯ অক্টোবর সব ধরণের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম থেকে এক বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় সাকিবকে। তবে আইসিসির কোন বিধি না ভাঙলে তিনি খেলায় ফিরতে পারবেন এক বছর পরই। 

 

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago