সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার তোড়জোড়
কোথাও হাতুড়ি ও পেরেকের ঠোকাঠুকি, কোথাও বাঁশ কাঁটার কাজ চলছে। একদিকে ইট দিয়ে মেঝে পাকা করা হচ্ছে, অন্যদিকে বসানো হচ্ছে নামফলক। কাঠ দিয়ে চলছে স্টলের ভেতরে সাজসজ্জার কাজ। কোথাও আবার রঙ লাগানো হচ্ছে।
এই দৃশ্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের। মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রায় আসন্ন। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বইমেলা। সেজন্য চলছে স্টল নির্মাণের জোর প্রস্তুতি।
অন্য বছরের তুলনায় এবারের বই মেলার লটারি অনুষ্ঠিত হয়েছে বেশ আগে। এর পরপরই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জুড়ে চলছে প্রকাশকদের স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণের কাজ।
গত বছরের তুলনায় এ বছর বইমেলার পরিধি বাড়ছে। পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে এখন সেই ব্যস্ততাই লক্ষ্য করা গেছে।
অসংখ্য শ্রমিক কাজ করছেন স্টল নির্মাণে। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন শিল্প নির্দেশকরা। সবকিছু তদারকি করছেন প্রকাশকরা।
গত বছরের চাইতে এ বছর প্যাভিলিয়নের সংখ্যা বেড়েছে। এবার প্যাভিলিয়ন হচ্ছে ৩৪টি। মূলত বড় বড় প্রকাশকরা প্যাভিলিয়ন পেয়ে থাকেন। উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে, প্যাভিলিয়নগুলোর কাজ অনেকটাই শেষের পথে।
তাম্রলিপির প্রকাশক এ কে এম তারিকুল ইসলাম রনি নিজে উদ্যানে উপস্থিত থেকে প্যাভিলিয়ন নির্মাণের কাজ দেখাশোনা করছেন। অনন্যা’র প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখা যায়- এই প্রকাশনীর কর্মচারীরা সবকিছু দেখাশোনা করছেন। এছাড়া যারা এক ইউনিট, দুই ইউনিট, তিন ইউনিট বা চার ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছেন, তারাও স্টল নির্মাণ কাজের প্রতিই বেশি জোর দিচ্ছেন।
শব্দশিল্প প্রকাশনীর প্রকাশক শরিফ জানান, প্রতিদিন বিকালে এসে স্টল নির্মাণের কাজ দেখে যাচ্ছেন।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাজ করতে আসা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বইমেলার স্টল নির্মাণকে ঘিরে তারা এখন খুব ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। সকাল থেকে তাদের কাজ শুরু করতে হয়। সন্ধ্যার পরও কাজ চলে।
আসলাম নামের এক শ্রমিক বলেন, “পনের বছর ধরে বইমেলার স্টল নির্মাণের কাজ করছি। ভালোই লাগে বইমেলার স্টল নির্মাণের কাজ করতে।”
নির্মিতব্য স্টলগুলো ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো প্রকাশক ডিজাইন ধরে ধরে শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছেন। এ বছর বইমেলায় ৩২২টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। দুই প্রবেশ পথের কাছে বাংলা একাডেমির প্যাভিলিয়ন থাকবে দুটি। সেগুলোর নির্মাণ কাজও চলছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রকাশক ডেইলি স্টারকে জানান, এতো বেশি পরিধি বাড়ানোর কারণে পাঠকরা বিব্রত হবেন, তারা ঘুরে শেষ করতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, এ বছরও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রতি বছরের মতো থাকবে শিশু চত্বর। এটাকে মূলত শিশুদের বিনোদন ও শিক্ষামূলক সাজসজ্জা দিয়ে সাজানোর কাজ চলছে।
সেই সঙ্গে গত বছর থেকে উদ্যানে নতুন করে শুরু হয়েছে- নতুন মঞ্চ, লেখক মঞ্চ। এ বছরও লেখক মঞ্চ হচ্ছে।
সব মিলিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী কিছুদিন চলবে স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণের কাজ। তারপর বসবে মাসব্যাপী প্রাণের গ্রন্থমেলা।
Comments