এবার আরও বিবর্ণ, আরও কাহিল মাহমুদউল্লাহর দল

গোটা বাংলাদেশকে দেখাল আরও বিবর্ণ, আরও কাহিল, আরও এলোমেলো। আগের দিন ব্যাটিং মলিন থাকলেও বোলাররা দেখিয়েছিলেন লড়াইয়ের ঝাঁজ। এদিন আর তাও হলো না।

প্রেক্ষাপট মোটামুটি আগের দিনের মতোই। কেবল খানিকটা এদিক-সেদিক হলো গল্প। তামিম ইকবাল ফিফটি পেলেন। তবে গোটা বাংলাদেশকে দেখাল আরও বিবর্ণ, আরও কাহিল, আরও এলোমেলো। আগের দিন ব্যাটিং মলিন থাকলেও বোলাররা দেখিয়েছিলেন লড়াইয়ের ঝাঁজ। এদিন আর তাও হলো না। উল্টো বাবর আজম, মোহাম্মদ হাফিজের দুই ফিফটিতে একপেশে ম্যাচে মাহমুদউল্লাহর দল হেরেছে লড়াইবিহীনভাবে।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। এক ম্যাচ বাকি রেখেই জিতে নিয়েছে সিরিজ। উইকেট ছিল আগের দিনের মতো মন্থর। তাতে টস জিতে কী বুঝে ব্যাটিং নিয়ে বাংলাদেশ করল মাত্র ১৩৬। ওই রান ২০ বল আগেই পেরিয়ে দাপটের সঙ্গে ম্যাচ জিতে নিয়েছেন পাকিস্তান। দলকে জিতিয়ে অধিনায়ক বাবর অপরাজিত থাকেন ৪৪ বলে ৬৬ রান করে, হাফিজ ৪৯ বলে খেলেন হার না মানা ৬৭ রানের ইনিংস। দুজনে মিলে অবিচ্ছিন্ন ১২১ রানের জুটিতে শেষ করে দেন খেলা।

রান নিতে পুরো কুড়ি ওভার বাংলাদেশ যেখানে ধুঁকেছে, রান তাড়ায় অনায়াসে তা করে দেখিয়েছেন বাবর-হাফিজ। বাংলাদেশের ১৩৬ রান পেরুতে খুব একটা তাড়াহুড়োর দরকার ছিল না পাকিস্তানের। তারা সে পথে হাঁটেওনি। শুরুতে আহসান আলিকে হারানোর পর প্রথম কয়েকটি বল মানিয়ে নেন বাবর-হাফিজ। এরপর কোনো রকম ধন্দ ছাড়াই প্রান্ত বদল করেছেন, বের করেছেন বাউন্ডারি। ক্রমশই বাংলাদেশের রান হয়ে গেছে মামুলি। অনেকদিন পর দলে ফেরা হাফিজ ৪০ বলে তুলে নেন ফিফটি। বাবর ফিফটিতে পৌঁছান ৩৫ বলে। অথচ আগের দিনের চেয়ে উইকেটে তেমন একটা তফাৎ পাওয়া যাচ্ছিল না।

একদিন আগেই উইকেটের আচরণ দেখে অবাক হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। উইকেট বদলাল না এদিনও। কিন্তু সব দেখেও আগে ব্যাট করার কথাই ভাবলেন মাহমুদউল্লাহ।

প্রথম ম্যাচে দুই ওপেনার খেলে ফেলেছিলেন অর্ধেকের বেশি বল। রান উঠাচ্ছিলেন মন্থর গতিতে। এবার নাঈম শেখ দ্বিতীয় ওভারে নিজের প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে যান। কিন্তু মন্থরই থাকে বাংলাদেশের রানের চাকা। মোহাম্মদ মিঠুনের বদলি মেহেদী হাসানকে ওয়ান ডাউনে নামানোর বাজি হয়েছে বুমেরাং। বেচারা বিপিএলের মঞ্চ পাননি। আন্তর্জাতিক মঞ্চের বিস্তর তফাৎ ধরা পড়েছে তার নাজেহাল ব্যাটিংয়ে। এক ছক্কায় ১২ বলে ৯ রান করে তিনি বিদায় নেওয়ার পর অদ্ভুত অ্যাপ্রোচে খেলে বল নষ্ট করে গেছেন লিটন দাসও।

এমনিতে উইকেটের ভাষা বুঝতে সময় লাগে না তার। কিন্তু এদিনও তিনি কন্ডিশন তোয়াক্কা না করে এলোপাথাড়ি ঘুরিয়ে অনেকগুলো বলে মিস টাইমিং করলেন। পরে আউট হলেন ১৪ বলে ৮ রান করে।

এক প্রান্ত ধরে খেলতে থাকা তামিম ইকবালকে মাঝে সঙ্গ দিতে পেরেছেন কেবল আফিফ হোসেন। গড়েন ৪৫ রানের জুটি। পুরো ইনিংসে বাংলাদেশে মাত্র তিনজন যেতে পেরেছেন দুই অঙ্কে। আফিফের ২০ বলে ২১ রানের পর মাহমুদউল্লাহ ফেরেন ১২ বলে ১২ রান করে। ৫৩ বলে ৭ চার, ১ ছক্কায় ৬৫ করা তামিমের উপরই পুরো ইনিংস ভর করে দাঁড়িয়েছিল। আর কেউ একজন তামিমকে সঙ্গ দিতে পারলে হয়ত লড়াইটা জমতে পারত। তবে পাকিস্তানিদের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে ১৬০, ১৭০ রান হলেও তাড়া করতে তাদের খুব একটা সমস্যা হতো না।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৬/৬ (তামিম ৬৫, নাঈম ০, মেহেদী ৯, লিটন ৮, আফিফ ২১, মাহমুদউল্লাহ ১২, সৌম্য ৫*, আমিনুল ৮*; ইমাদ ০/১৬, শাহিন ১/২২, হাসনাইন ২/২০, রউফ ১/২৭, শাদাব ১/২৮, মালিক ০/৯, ইফতিখার ০/১২)

পাকিস্তান: ১৬.৪ ওভারে ১৩৭/১ (বাবর ৬৬*, আহসান ০, হাফিজ ৬৭*; মেহেদী ০/২৮, শফিউল ১/২৭, আল-আমিন ০/১৭, মোস্তাফিজ ০/২৯, বিপ্লব ০/১৬, আফিফ ০/১৬, মাহমুদউল্লাহ ০/৩)

ফল: পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী। 

সিরিজ: এক ম্যাচ বাকি থাকতে পাকিস্তান ২-০ ব্যবধানে জয়ী। 

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago