ব্যাংকিং খাত নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়ার সময় এসেছে: মুহিত

ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে ‘এজ ইজ দ্য প্রাইস অব উইজডম’। এই প্রবাদটি আবারও মনে করিয়ে দিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে ‘এজ ইজ দ্য প্রাইস অব উইজডম’। এই প্রবাদটি আবারও মনে করিয়ে দিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

উদাহরণ স্বরূপ, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে বহুল আলোচিত একক-অঙ্কের ব্যাংক সুদের হার আরোপ করতে যাচ্ছে সরকার। যা কার্যকরভাবে বাজার ব্যবস্থাকে ভেঙে দেবে বলে মনে করেন তিনি।

আজ ২৫ জানুয়ারি ৮৬ বছরে পা দেওয়া মুহিত মনে করেন, সরকারের এমন উদ্যোগে কোনও লাভ হবে না।

ঢাকাতে নিজের বাসায় বসে দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “সরকার ব্যাংকের ওপর এটা চাপিয়ে দিতে পারে, ব্যাংকগুলোও তা মানতে বাধ্য। কিন্তু, ব্যাংকিং খাতে এটি বড় কোনো ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে না।”

কারণ, ব্যাংকিং খাতের মূল সমস্যা হলো উচ্চ খেলাপি ঋণ, যা এখানে চিহ্নিত করা হয়নি।

তার মতে, ব্যাংকিং খাতের সংস্কারের জন্য প্রয়োজন খেলাপি ঋণ হ্রাস করা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ রেকর্ড হয়েছে ১১৬,২৮৮ কোটি টাকা, যা মোট বকেয়া ঋণের ১১.৯৯ শতাংশ।

“আমরা খেলাপি ঋণ হ্রাস করতে গিয়ে তা প্রচুর পরিমাণে বাড়িয়ে ফেলেছি। যা একটি ভুল ছিল।”

উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাম্প্রতিক ঋণ সময়সূচি প্যাকেজের কথা উল্লেখ করেন।

“এটি কোনো ভাল উপায় নয়… আমরা কেবল খেলাপি ঋণের সংখ্যা বাড়িয়ে তুলছি। তাই এটা সঠিক উপায় নয় এবং সবজায়গাতেই খেলাপি ঋণ আদায় করা সহজ নয়।”

খেলাপি ঋণ সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, “খেলাপি ঋণ নির্দিষ্ট শতাংশে নামিয়ে আনার জন্য একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করা উচিত। আমি কোনও সংখ্যাকে নির্দিষ্ট করে পরামর্শ দিচ্ছি না… এই সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে।”

“যেসব ব্যাংক খেলাপি ঋণের অনুপাত কমাতে ব্যর্থ হবে, তারা নতুন ব্যবসা করার অনুমতি পাবে না। তাদের বিদ্যমান ব্যবসা নিয়ে কাজ করতে হবে, ফলে ব্যাংকগুলো চাপে পড়বে।”

“সুতরাং, তাদের এ বিষয়ে কিছু করতে হবে। আমাদেরও কঠোর হতে হব,” বলেন মুহিত।

 

তিনি অবশ্য স্বীকার করেছেন, ২০০৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি ব্যাংকগুলোকে প্রশ্রয় দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, “আমি ব্যাংকিং খাতকে অনেক সুযোগ দিয়েছি। আমি প্রশ্রয় দিয়েছি।” উদাহরণ হিসেবে ব্যাংকিং (সংশোধন) আইন-২০১৭ এর প্রসঙ্গ টানেন তিনি।

সংশোধনীতে একটি বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ ছয় বছর থেকে বাড়িয়ে নয় করা হয়। এছাড়া পরিচালনা বোর্ডে পারিবারিক কোটা দুই থেকে চার করা হয়। যা একটি বেসরকারি ব্যাংককে একক পরিবারের নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়িয়েছে।

“আমি মনে করি প্রশ্রয় দেওয়ার পর্ব এখন শেষ। আমি যদি এখন সরকারে থাকতাম তাহলে, আমি এটি বন্ধ করে দিতাম।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রচুর ব্যাংক রয়েছে। বর্তমানে ৬০টি ব্যাংকের কার্যক্রম চলছে। এরমধ্যে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১২টি ব্যাংক চালু হয়েছিল।

“আমাদের অনেক ব্যাংক রয়েছে। তবে, আমি কখনোই এগুলো নিয়ে চিন্তিত ছিলাম না। কারণ, আমি ভেবেছিলাম তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে একীভূত হতে বাধ্য হবে এবং সংখ্যায়ও হ্রাস পাবে।”

যখন জানতে চাওয়া হয়, আপনি নিজেই তো ফারমার্স ব্যাংকের একীভূতকরণের সুযোগ পেয়েছিলেন। জবাবে তিনি বলেন, “আমি ভুল করেছি। আমার উচিত ছিল এটিকে বন্ধ করে দেওয়া।”

তিনি জানান, ফারমার্স ব্যাংক চালু রাখতে তার ওপরে কোনও চাপ ছিল না। অনিয়ম ও ঋণ কেলেঙ্কারি থেকে মুক্ত হতে ব্যাংক পরিচালনার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে গত বছরের জানুয়ারিতে ফারমার্স ব্যাংকের জায়গায় নতুনভাবে পদ্মা ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়।

২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ব্যাংকটি (ফারমার্স ব্যাংক) তিন বছরেরও কম সময়ে আর্থিক অনিয়মের জন্য আলোচনায় উঠে আসে।

দুর্নীতির অভিযোগগুলো নিয়ে তারা নীরব ছিলেন। ফলে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও আমানতকারীরা তাদের অর্থ উঠিয়ে নিতে শুরু করে।

এ কারণে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সরকার ব্যাংকটিকে উদ্ধারে ব্যবস্থা নেয়। ২০১৮ সালের মার্চে চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী এবং একটি পাবলিক মার্চেন্ট ব্যাংক, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন ৭১৫ কোটি টাকার ইক্যুইটি শেয়ার কিনে ব্যাংক জামানত ফেরত দেয়।

বেসিক ব্যাংক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বেসিক ব্যাংক মাত্র একজনের দ্বারা ধ্বংস হয়েছিল। তিনি হলেন শেখ আবদুল হাই বাচ্চু। ব্যাংকটির বর্তমান চেয়ারম্যান খুব ভালো ব্যাংকার এবং তার যোগ্যতার প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস রয়েছে। তবে বাচ্চু যে পর্যায়ে বেসিক ছেড়েছে, সেখান থেকে পুনরুদ্ধার করা খুব কঠিন।”

মুহিত দাবি করেন, বাচ্চু ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে রাজনৈতিক বিবেচনায় বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন।

“সব জায়গাতেই তার ভালো যোগাযোগ ছিল এবং সে তাদের পুরোপুরিভাবে কাজে লাগিয়েছে।”

মুহিত অবশ্য জোর দিয়ে বলেন, এখন আর রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের বোর্ডগুলোতে রাজনৈতিকভাবে নিয়োগ পাওয়া যাবে না।

“এটি আমার সময় থেকেই শুরু হয়েছিল।”

যা ক্ষতি হওয়ার তা ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আটটি রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের ৫০ শতাংশেরও বেশি খেলাপি ঋণের অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যার পরিমাণ ৫৯,৬২২ কোটি টাকা।

ব্যাংকগুলোর এই ঋণ ফেরত নিতে সরকার একটি পাবলিক এ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি (পিএএমসি) গঠনের পরিকল্পনা করছে। ইতিমধ্যে এর একটি খসড়া আইনও তৈরি করেছে।

সরকারের এই উদ্যোগকে সমর্থন করেন আবুল মাল আবদুল মুহিত।

“আমি মনে করি পিএএমসি পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে পারবে। তবে, এটি নির্ভর করবে সংস্থাটি কোন সম্পদ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেবে এবং কী অবস্থায় বা কী শর্তের বিনিময়ে তা নেবে।”

পিএএমসি যদি কঠোরভাবে তা করে, তাহলে এটি ব্যবহার করে ব্যাংকগুলোর ক্ষতিকর সম্পদ এতে ফেলে দেওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।

“একই সঙ্গে, যেসব ব্যাংকের সম্পদ পিএএমসি-এর অধিগ্রহণ করা হচ্ছে, সেসব ব্যাংককে অন্যভাবে শাস্তি দিতে হবে।”

তার উত্তরাধিকারী বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের মতো তিনিও মনে করেন, দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ার কারণ হলো দুই-অঙ্কের সুদের হার।

“সুদের হার মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সম্পর্কিত। আন্তর্জাতিক মানের তুলনায় আমাদের মুদ্রাস্ফীতি বেশি।”

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে গড় মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫.৫৯ শতাংশ এবং এর একটি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা রয়েছে।

কিন্তু, স্বাভাবিকভাবে সুদের হার কমিয়ে আনার জন্য আমানত ও ঋণের মধ্যকার সুদের হারের ব্যবধান কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

“বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এখন এটি ৪ শতাংশেরও কম। যা এক ধরনের উন্নতি, তাই আমাদের এটিকে এগিয়ে নেওয়া উচিৎ” উল্লেখ করেন মুহিত।

অর্থনীতির জন্য এখন উদ্বেগের অন্যতম কারণ হলো রপ্তানি কমে যাওয়া, বিশেষ করে পোশাক খাতের।

গার্মেন্টস রপ্তানিকারকরা দীর্ঘদিন ধরে নগদ প্রণোদনার সুবিধা ভোগ করে আসছেন, এখন রপ্তানি উৎসাহিত করতে আরও সুবিধা দাবি করছেন তারা।

এই সময়ে গার্মেন্টস রপ্তানিকারকদের নগদ প্রণোদনা দেওয়া কি বুদ্ধিমানের কাজ হচ্ছে, যা কৃত্রিমভাবে তাদের প্রতিযোগিতামূলক এবং আত্মতুষ্ট করেছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে মুহিত বলেছেন, “এটি খুব ভালো একটি প্রশ্ন এবং এর উত্তর আমার কাছে নেই। নগদ প্রণোদনা যে দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না তা এখন স্পষ্ট।”

পরবর্তীতে, পোশাক রপ্তানিকারকদের প্রতি ডলারের জন্য পাঁচ টাকা অতিরিক্ত অর্থ চাইবার ব্যাপারে কটাক্ষ করেন তিনি।

“নগদ বোনাস সবকিছু ঠিক করে দেবে… এমনটি ভাবা ঠিক নয়। তাদের (পোশাক রপ্তানিকারীদের) সমাধানের উপায়টি ভালো নয়। তারা আরও বেশি নগদ বোনাস চাইছে। যা সহজ নয়।”

পোশাক রপ্তানিকারীদের গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে।

“আমি সরকারকে এ বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দেব।”

এই ব্যাপারটি দেখতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা এবং ভারতে পাঠানোয় কামালের প্রশংসা করেছেন এমএ মুহিত। বিশ্বব্যাপী পোশাক ব্যবসায় বাংলাদেশের এসব প্রতিযোগী দেশগুলোর সরকার এই জাতীয় নগদ সুবিধা প্রদান করছে কিনা দেখতেই তাদের পাঠানো হয়েছে।

তবে, রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনা এবং এর ব্যাপ্তি বাড়াতে আরও মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

“রপ্তানি উন্নয়নে অবস্থা সুবিধার নয়। আমরা সবসময় রপ্তানিতে ভালো করছিলাম। আমরা ৯-১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার বজায় রেখেছিলাম… এটিই অনেক। এটি সত্য সবসময় তা ধরে রাখা যায় না। কিন্তু, হঠাৎ পড়ে যাওয়া কিছুটা হলেও উদ্বেগের বিষয়।”

অর্থনীতির জন্য আরেকটি উদ্বেগের কারণ হলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়া। যা সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটাতে ব্যাংকের কাছে পাঠিয়েছে।

এনবিআরের রাজস্ব সংগ্রহ কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি রেগে ওঠেন। কর প্রশাসন বছরের পর বছর ধরে স্ফীত পরিসংখ্যান সরবরাহ করে আসছে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন।

এখন চর্চা বন্ধ হয়ে গেছে। আর এ কারণেই রাজস্বে তুলনামূলকভাবে প্রবৃদ্ধি কম মনে হয় বলে জানান তিনি।

“এজন্য রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা দায়ী। তারা মিথ্যাবাদী। তাদের শাস্তি হওয়া উচিত, এমনকি যারা অবসর নিয়েছেন তাদেরও। তিন বছর ধরে তারা ভুল প্রতিবেদন সরবরাহ করে আসছে। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বলেছে। যখন এটি হ্রাস পেয়েছিল তখন তারা বৃদ্ধি দেখিয়েছে। তবে সত্যি হলো, আমাদের রাজস্ব আদায় আসলেই কমে গেছে।”

কিন্তু, এখন রাজস্ব সংগ্রহ বাড়াতে হবে বলে মনে করে তিনি। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শহরে বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে সম্পদ জরিপের পরামর্শ দেন সাবেক এই অর্থমন্ত্রী।

শিক্ষার্থীদের পরিদর্শন শেষে কোন পরিবারকে কর প্রদান করা উচিত তার একটি তালিকা তৈরি করতে হবে এবং একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কর প্রদানের পরামর্শ দিতে হবে। সরকারের উচিত এটি নিয়ে কাজ করা।

“একবার তাদের নোটিশ দিলে তারা করের আওতায় চলে আসবে। তারপরে তারা এগিয়ে আসবে এবং করের স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে তর্ক করবে। তবে একবার ঠিক হয়ে গেলে স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়টিও থাকবে না। তখন তাদের সঙ্গে আলোচনা করে করের হার নির্ধারণ করতে হবে।”

নতুন মূল্য-সংযোজন কর আইনে রাজস্ব সংগ্রহ নির্দিষ্ট পরিমাণে বাড়ানোর কথা ছিল। মুহিত এর বড় অংশের তদারকি করেছিলেন। তবে, তা এখনও সফল হয়নি।

“আমরা অনেক আশা নিয়ে এই আইনটি তৈরি করেছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম সব সময়ের জন্য এটি একটি সমাধান হবে। যদিও তা হয়নি।”

কারণ, ভ্যাট গণনা বেশ জটিল।

“ভ্যাটের সম্পূর্ণ তত্ত্বটি হলো আপনি যে মূল্য যুক্ত করেন, তার ওপর কর প্রদান করতে হয়। সুতরাং, ৪-৫ জন একই পণ্যের জন্য ট্যাক্স দেয়। তাদের সবারই কিছু কিছু অর্থ দেওয়ার কথা ছিল। এই কাজের জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় হিসাবরক্ষণ এবং শৃঙ্খলা নেই। এখানেই আমাদের সমস্যা। আমাদের এখনও মূল্য সংযোজন তদারকি করার সিস্টেম নেই। সেখানে যেতে একটু সময় লাগবে।”

অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন এমএ মুহিতের সময় ঘটে যাওয়া বড় ঘটনা হলো, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক (এনওয়াই ফেড) থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার চুরি হয়ে যাওয়া।

এই ঘটনার চার বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও সমাধান হয়নি।

এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমাদের ভুল হয়েছে, আমাদের আগেই ফেডের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত ছিল। কারণ, ফেড স্পষ্টভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা ভুল করেছে।”

হ্যাকাররা যে পরিমাণ অর্থ নিয়েছিল, তার মধ্যে ২০ মিলিয়ন ডলার শ্রীলঙ্কার একটি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়েছিল।

এ বিষয়ে সরকারকে এখন আরও কঠোর অবস্থান নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

“আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো রিজাল ব্যাংককে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরিয়ে দেওয়া। পুরো ব্যাংকিং ব্যবস্থা পরিচালিত হয় বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে এবং রিজাল ব্যাংক হলো জালিয়াত। আমার মতে, বিশ্বে রিজাল ব্যাংকের অস্তিত্ব থাকা উচিত নয়। এজন্য আমাদের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।”

অর্থমন্ত্রী হিসেবে তার সবচেয়ে গর্বিত অর্জনের কথা জানতে চাইলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বলেন, “অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি অর্জন।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের একজন অর্থমন্ত্রীর একটিই কাজ, দারিদ্র্য কমানো। আপনি যদি দারিদ্র্য কমাতে পারেন তাহলে, আপনি সফল।”

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

8h ago