তেঁতুলিয়ায় পুলিশ-র‍্যাবের সঙ্গে সংঘর্ষে পাথর শ্রমিক নিহত

গুরুতর আহতদের পঞ্চগড় সদর হাসপাতাল থেকে এম্বুলেন্সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় পাথর উত্তোলনের দাবিতে করা সড়ক অবরোধের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এক পাথর শ্রমিক নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। আন্দোলনকারীরা পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে।

আজ রোববার সকাল পৌনে ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা সড়কের ভজনপুর এলাকায় থেমে থেমে এই সংঘর্ষ হয়। গুরুতর আহতদের মধ্যে জুমার উদ্দীনকে (৬০) পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি সেখানে মারা যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, তেঁতুলিয়ার ভজনপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ‘বোমা মেশিন’দিয়ে পাথর উত্তোলন চলছিল। পরিবেশবাদীদের দাবির মুখে প্রায় ছয় মাস আগে পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন পাথর শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। পাথর উত্তোলনের অনুমতির দাবিতে আজ সকাল থেকে ভজনপুর বাজারে ঢোল পিটিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন শ্রমিকেরা। তারা সকাল ১০টার দিকে পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয় এবং পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় র‌্যাব-১৩-এর সদস্যরা।

বেলা ২টা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে তিনজন পুলিশ ও তিনজন র‌্যাব সদস্যসহ ১৫ জনকে আহত অবস্থায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা পৌনে তিনটার দিকে আহত পাথর শ্রমিক জুমার উদ্দিন মারা যান। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আহতদের মধ্যে চার জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এঁরা হলেন, ভজনপুর এলাকার আজিবুদ্দিন (৩৫) ও করিমুল (৫২), বুড়াবুড়ি-বালাবড়ি এলাকার শহিদুল (৪০) ও দেবনগর-হাওয়াজোত এলাকার ভোম্বল (৪৫)।

পঞ্চগড় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুলিশ সদস্যরা হলেন, নায়েক মেহেদী হাসান, কনস্টেবল জয়ন্ত কুমার ও ইমতিয়াজ। র‌্যাব-১৩ এর ডিএডি আবু বক্কর, সদস্য ফেরদৌস রনি ও সাইদুল ইসলাম প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সিরাজউদ্দৌলা বলেন, আহতদের বেশিরভাগেরই শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। ময়না তদন্ত ছাড়া নিহতের মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না।

পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, বিনা উস্কানিতে শ্রমিকেরা লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করেছে। তারা পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পুলিশ সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য লাঠিচার্জ করে এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় আটজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান পুলিশ সুপার।

Comments

The Daily Star  | English

Over 14 million people could die from US foreign aid cuts: study

USAID had provided over 40 percent of global humanitarian funding until Trump returned to White House

13m ago