পছন্দের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় মাকে হত্যা!

পছন্দের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় মা মাহমুদা বেগমকে (৪৫) হত্যার পরিকল্পনা করে মেয়ে জুলেখা আক্তার (১৯) ও তাঁর বন্ধু। হত্যায় অংশ নেন জুলেখার বন্ধু নাইম ইসলাম ও তাঁর তিন সহযোগী। আজ সোমবার বিকেলে মানিকগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহমেদের কাছে ১৬৪-ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন গ্রেপ্তার জুলেখা, নাইম ও নাইমের সহযোগী রাকিব।
২২ জানুয়ারি মানিকগঞ্জ শহরের দক্ষিণ সেওতা এলাকায় নিজবাড়িতে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় মাহমুদা বেগমকে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক শামীম আল মামুন জানান, লেপচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাঁকে হত্যার পর জুলেখাকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে স্বর্ণালংকার লুটের নাটক সাজায় নাইম।
শামীম আল মামুন জানান, হত্যাকাণ্ডের সময় বাড়িতে নিহতের একমাত্র মেয়ে জুলেখা ছিলেন। তাঁকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি। শুক্রবার বিকেলে জুলেখার বাবা জহিরুল ইসলাম আলিয়ার বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় মেয়ে, তার বন্ধু নাইম ইসলাম এবং নাইমের সহযোগী রাকিবসহ আরও দুইজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরে জুলেখাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মানিকগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পরে জুলেখার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতেই তাঁর বন্ধু কেরানীগঞ্জের আরাকুল গ্রামের নাইম ইসলাম (২৫) এবং তাঁর সহযোগী একই গ্রামের রাকিবকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। বাকি দুই আসামকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, নাইম পেশায় নির্মাণ শ্রমিক। জুলেখার সঙ্গে ফেসবুক-ম্যাসেঞ্জারে আট মাস আগে নাইমের পরিচয় হয় এবং দুজনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জুলেখা নাইমকে বিয়ে করতে চাইলে তাঁর মা রাজি হননি। এ অবস্থায় মাকে হত্যার পরিকল্পনায় জড়ায় জুলেখা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাতে নাইম ও তাঁর সহযোগীরা জুলেখার ঘরে ঢুকে। সকাল ৭টার দিকে জুলেখার বাবা ফজরের নামাজশেষে প্রাতভ্রমণে বের হলে তারা মাহমুদা বেগমকে হত্যা করে।
জুলেখার বাবা জহিরুল ইসলাম আলিয়ার জানান, তিনি পরিবার নিয়ে নিজস্ব পাঁচ তলা ভবনের দোতলায় বসবাস করেন। তিনি কাতারে প্রবাসী জীবন কাটিয়ে দেশে এসে পোল্ট্রি ব্যবসা করছেন। বছর তিনেক আগে মেয়ে জুলেখাকে বিয়ে দেন ঢাকার ধামরাইয়ে। তিন মাস আগে মেয়ের বিচ্ছেদ ঘটলে তিনি বাবার বাড়িতে চলে আসেন।
Comments