মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না দীপা রায়ের
কিছুদিন আগেই আত্মীয়ের বিয়ে খেতে হবিগঞ্জ থেকে সপরিবারে মৌলভীবাজারে এসেছিলেন দীপা রায় (৩৫)। গত ২২ জানুয়ারি বিয়ে শেষ হলেও গতকাল ছিলো বিয়ের বৌভাত। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পরিবারের সঙ্গেই হবিগঞ্জে ফিরে যাওয়ার কথা ছিলো আজ-কালকের মধ্যেই।
কিন্তু, মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না দীপা রায়ের। ভয়াবহ আগুন অকস্মাৎ মা-মেয়ের জীবন কেড়ে নিবে তা নিশ্চয় ভাবেননি দীপা রায়ের স্বামী সজল রায়।
আজ (২৮ জানুয়ারি) সকালে পিংকি সু স্টোরে লাগা আগুনে পুড়ে অন্যান্য স্বজনদের সঙ্গে মারা গেছেন মা-মেয়ে দুজনেই। বিয়ের আনন্দের রেশ কাটতে না কাটতেই পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তাদের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই।
পিংকি সু স্টোরের উপরের বাসাতেই আত্মীয়দের সঙ্গে এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন দীপা রায়। আগুন লাগার পর বাসার অন্যান্য সদস্যদের মতো দীপাও ছেলেমেয়েদের নিয়ে ওই বাসায় আটকা পড়েন। প্রাণ বাঁচাতে আরও অনেকের সঙ্গে তার ছেলে বাসার বাইরে বেরিয়ে আসতে পারলেও ছোট মেয়ে বৈশাখীকে (৩) নিয়ে বের হতে পারেননি দীপা। অন্য তিনজনের সঙ্গে তিনিও মারা যান আগুনে পুড়ে।
দীপার আত্মীয় কল্প রায় জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগেই আত্মীয়ের বিয়েতে যোগ দিতে সপরিবারে মৌলভীবাজারে আসেন দীপা। তার গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার উমেদনগরে। তার স্বামী সজল রায়। দীপা রায়ের আরও এক ছেলে রয়েছে।
আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের সাইফুর রহমান রোডের পিংকি সু স্টোরে গ্যাসের লাইন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। দোকানের পেছনে বাসায় সেসময় আটকা পড়ে কয়েকজন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় দমকল বাহিনী।
আগুনে নিহতরা হলেন পিংকি সু স্টোরের মালিক সুভাষ রায় (৬৫), সুভাষ রায়ের মেয়ে প্রিয়া রায় (১৯), সুভাষ রায়ের ভাইয়ের স্ত্রী দীপ্তি রায় (৪৮), সুভাষ রায়ের শ্যালকের স্ত্রী দীপা রায় (৩৫), দীপার মেয়ে বৈশাখী রায় (৩)।
আহতদের মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
Comments