উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি কম শর্ত আরোপের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি একে আরও টেকসই করার জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে এই ব্যাপারে বেশি শর্তারোপ না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা দেশের আরও উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি এবং আমরা আশা করি, আমাদের উন্নয়ন সহযোগীরাও আমাদেরকে খুব বেশি শর্ত না দিয়ে এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবেন। যেনো যে অগ্রযাত্রা আমরা শুরু করেছি, সেটাকে যেনো আরও ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারি।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (২৯ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম (বিডিএফ)-২০২০’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা যে কাজগুলো শুরু করেছি, সে কাজগুলোকে আমরা সাসটেইনেবল করতে চাই। আর সেটা করতে গেলে আর্থিক সঙ্গতি দরকার। আর সেক্ষেত্রে আমি মনে করি, আমাদের যারা উন্নয়ন সহযোগী আছেন তারাও এগিয়ে আসবেন, সহযোগিতা করবেন।”
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “একটা বিষয়ে কেউ যখন সাকসেসফুল হয়, সেখানে সাহায্য করতে তো কারো দ্বিধা থাকে না বরং আগ্রহ আরও বেশি হয়। সেটা আমরা দেখি, কাজেই সেটাই হবে বলে আমরা মনে করি।”
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সরকারের উন্নয়ন চাহিদার সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগীরা যাতে সম্পৃক্ত হতে পারে, সেজন্যই দু’দিনব্যাপী এই বিডিএফ সভার আয়োজন করেছে। যেখানে সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার খসড়ার পাশাপাশি উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারের অগ্রাধিকার খাতগুলো তুলে ধরা হবে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৈঠকের উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন। বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ সেফার, জাইকার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনিচি ইয়ামাদা এবং এডিবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট শিক্সিন চেন বক্তৃতা করেন।
ইউএন রেসিডেন্ট কোঅরডিনেটর এবং লোকাল কনসালটেটিভ গ্রুপের কো-চেয়ার মিয়া সেপোও বক্তৃতা করেন এবং ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ স্বাগত বক্তৃতা করেন।
ইআরডি সূত্র জানায়, বিশ্ব ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি), জাইকা, ইউএসএইড, ইউকে এইড, ভারত, চীনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন।
মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিদেশি কূটনীতিক এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
২০১০ সাল থেকে বিডিএফ’র সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবার চতুর্থবারের মতো এই সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে বিশ্বব্যাংক ও দ্বিপক্ষীয় দাতা সংস্থার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। সেসময় বিশ্বব্যাংক ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে দাতাদের একটি কনসোর্টিয়াম আয়োজনের প্রস্তাব দেয়। বঙ্গবন্ধু সরকারের সক্রিয় ভূমিকায় ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের সভাপতিত্বে ওই কনসোর্টিয়ামটি ঢাকায় আয়োজন করতে সমর্থ হয় জাতির পিতার সরকার। কালক্রমে, দাতাদের সেই কনসোর্টিয়াম বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম নামে পরিচিতি লাভ করে। আর এক সময়ের দাতারা পরিণত হয় ‘উন্নয়ন সহযোগী’ হিসেবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “১৯৭৫-এর পর আমাদের অনেক চড়াই উৎরাই পেরোতে হয়েছে, কখনও গণতন্ত্র ধারাবাহিকভাবে চলতে পারেনি, সামরিক স্বৈরশাসন বলবত ছিলো। ফলে, দেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সাধিত হয়নি।”
দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই দেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন শুরু হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এটা মাথায় রাখতে হবে, কোন রাজনৈতিক কমিটমেন্ট ছাড়া কখনও কোন দেশ উন্নতি করতে পাওে না। আর সেটা আজকে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একেবারে প্রমাণিত সত্য।”
তিনি বলেন, “একটি দেশকে গড়ে তোলার জন্য সেখানে যেমন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রয়োজন থাকে, কমিটমেন্ট থাকা দরকার, তেমনি একটি পরিকল্পনা থাকা দরকার।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রতিটি রাজনৈতিক দলের যদি একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকে যে, দেশটাকে কীভাবে তারা গড়তে চায় তাহলেই সে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হতে পারে। আর আমরা সে কাজটাই করেছিলাম।”
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্র নিয়ে আলোচনা করায় আলোচকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আমাদের এখানেই থেমে থাকলে চলবে না। ভবিষ্যতের দিকে আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা যে লক্ষ্য স্থির করেছি তাতে একজন মানুষও গৃহহারা থাকবে না, কেউ না খেয়ে কষ্ট পাবে না, বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না, নিরক্ষর থাকবে না, প্রতিটি মানুষ সুন্দর জীবন পাবে।”
‘জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের জন্য বাংলাদেশ দায়ী নয়, কিন্তু সবচেয়ে নির্মম শিকার’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা এই অবস্থার জন্য দায়ী তাদেরই সবথেকে বেশি অবদান রাখা দরকার।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষার করার জন্য আমরা ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ প্রণয়ন করে সেটা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা আশা করি, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য যে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ইতোমধ্যেই আমরা সেটা মোকাবেলা করার মতো পদক্ষেপ নিয়েছি। এক্ষেত্রে আমি বলবো- আমরা যখন জলবায়ুর প্রভাব নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করি তখন অনেক প্রতিশ্রুতি (উন্নত দেশের) পাই। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আর সেভাবে কেউ পূরণ করে না।”
তিনি বলেন, “কাজেই জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবেলায় আমরা নিজস্ব অর্থায়নে ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছি। নিজেদের টাকা দিয়েই এই ফান্ড গড়েছি, তাতে সামান্য কিছু সহযোগিতা আমরা পেয়ে থাকি।”
সরকার প্রধান বলেন, “আমি মনে করি, উন্নত দেশগুলোর এবং আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের আরও এগিয়ে আসা দরকার। আরও সহযোগিতা দরকার। যে সমস্ত দেশ শুধু বাংলাদেশ নয়, বিভিন্ন ছোট ছোট দ্বীপ রাষ্ট্র যারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তাদের সকলেরই এই সহযোগিতাটা দরকার।”
শেখ হাসিনা বলেন, “তার সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই দীর্ঘ মেয়াদি এবং পাঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে দেশের উন্নয়ন শুরু করে এবং জাতিসংঘের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এমডিজি (সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) গ্রহণ ও বাস্তবায়ন শুরু করেছে।”
তিনি বলেন, “পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশাপাশি মানুষের চাহিদার কথা বিবেচনা করে সরকার সে সময় দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ করে ‘রূপকল্প-২০২১’ নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন শুরু করে। এটি একদিকে যেমন আমাদের দলের অর্থনৈতিক নীতিমালা, তেমনি সরকারের উদ্যোগে আসলে দেশের উন্নয়ন কিভাবে করবো সেই পরিকল্পনা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সেই সময় থেকেই ঢাকা উন্নয়ন সভা (বিডিএফ) শুরু হলো এবং উন্নয়ন সহযোগীরাও সহযোগিতা শুরু করলো।”
বিগত ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে আগের মেয়াদে বিরোধী দলে থাকলেও তাকেই বিনা অপরাধে প্রথম গ্রেপ্তার করে ‘সলিটারি কনফাইনমেন্টে’ রাখে। যে সময় তার দল সরকারে এলে কীভাবে দেশ পরিচালনা করা হবে, সে পরিকল্পনা প্রণয়নের সুযোগটি তিনি গ্রহণ করেন বলেও উল্লেখ করেন।
“আমরা কতো সালে কি কি করবো সেটার একটি খসড়া আমি কারাগারে বসেই প্রণয়ন করি। যেটা আমি পরে ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে যুক্ত করি,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা এবং নদী থেকে ভূমি পুণরুদ্ধারে তার সরকারের পরিকল্পনা এবং গৃহীত পদক্ষেপের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দুর্যোগের ক্ষেত্রে মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সমগ্র নদী ড্রেজিং করে নদীগুলোর নব্যতা বাড়াতে হবে। তাহলে বন্যার হাত থেকে দেশের মানুষকে আমরা মুক্ত করতে পারবো এবং ‘ল্যান্ড রিক্লেমেশন’ করতে পারবো। এজন্য আমাদের সহযোগিতা দরকার।”
তার সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নদীপথ, রেলপথ, সড়কপথ এবং আকাশপথ-সবক্ষেত্রেই যেনো এই যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও ত্বরান্বিত হয়, সেজন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন অব্যাহত রেখেছি। সেই সঙ্গে আরও নতুন নতুন প্রকল্পও আমরা নিতে চাই।”
জনগণ যেনো রাজধানীমুখী না হয়ে নিজ গ্রামে বসবাস করতে পারে, সে সুযোগ সৃষ্টিও তার সরকারের একটি অন্যতম লক্ষ্য অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গ্রামেই সাধারণ জনগণ সকল ধরনের নাগরিক সুবিধা এবং সুযোগ লাভ করতে পারে, সেজন্য আমার গ্রাম আমার শহর প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করছি।”
তিনি এ সময় সারাদেশে প্রায় ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে সেখান থেকে ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদানের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়ায় তার সরকারের উদ্যোগ তুলে করেন।
তিনি বলেন, “সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা লাভের পাশাপাশি ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। ওই গ্রামের নারী-পুরুষরাই সেখানে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।”
‘ঝরে পড়া’ বন্ধে তার সরকারের স্কুল ফিডিং কর্মসূচি চালুর প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দুর্গম এলাকা বা চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা যেনো বিদ্যালয়ে কাছে থেকেই লেখাপড়া করতে পারে, সেজন্য আমরা আবাসিক স্কুল করে দিচ্ছি।”
সরকার কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে যেকোনো একটা বিষয়ে বাচ্চাদের হাতেকলমে শিক্ষা দেওয়া হবে এবং ৪৯২টি উপজেলার প্রত্যেকটিতে একটি করে কারিগরি স্কুলও করে দিচ্ছি।”
শেখ হাসিনা তার এই উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন, “শিক্ষায় সকলেই উচ্চশিক্ষায় যাবে না, কিন্তু শিক্ষা শেষে যেনো কর্মসংস্থান পেতে পারে সেজন্যই এই ব্যবস্থা। অর্থাৎ যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আসছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই আমাদের জনসংখ্যাকে তৈরি করতে হবে।”
সারাদেশে ৫ হাজার ৮শ’ ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ এবং দেশের সকল উপজেলায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার প্রকল্প তার সরকার বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে গ্রামে নিজ ঘরে বসেই যেনো আয় রোজগার করে জীবিকা নির্বাহ করা যায়, তার নিশ্চয়তা বিধান করা।”
‘লার্নিং এন্ড আর্নিং’ কর্মসূচির মাধ্যমে এখন অনেকেই ঘরে বসে তাদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
‘দেশের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা, শরীরচর্চা, সাংস্কৃতিক চর্চা এবং সাহিত্য চর্চায় আরও মনোনিবেশ করবে এটাই তার সরকার চায়’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কারণ, আমরা বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক এবং দুর্নীতি দূর করতে চাই। আর সেদিকে লক্ষ্য নিয়েই শিশুদের বহুমুখী প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে তাদের আমরা বড় করে তুলতে চাই। কারণ, একটা জাতিকে সুষ্ঠুভাবে গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য,” যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
মাতৃ মৃত্যু ও শিশু মৃত্যু হার হ্রাস, হত দরিদ্রের হার কমানো এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা এবং মাতৃদুগ্ধদানকারী মায়েদের জন্যও সরকারের ভাতার প্রচলনসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্ততা ভাতা, প্রতিবন্ধী, পঙ্গু ভাতাসহ তার সরকারের ২ কোটি ৩ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি এবং উপবৃত্তি প্রদানের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মায়ের মোবাইল ফোনে প্রতি মাসের শেষে বৃত্তির টাকা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। যাতে সামাজিক এবং দারিদ্র বিমোচনের ক্ষেত্রে উপকার হচ্ছে।”
‘আমার বাড়ি আমার খামার’ প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্প চালু, ‘কর্মসংস্থান ব্যাংক’ থেকে উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে বিনা জমানতে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান সুবিধা প্রদান এবং প্রবাস গমনেচ্ছুদের জন্য ‘প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠা, গৃহহীনদের ঘরবাড়ি তৈরিতে ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’ বাস্তবায়নে সরকারের পদক্ষেপের তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর-বাড়ি-তৈরির জন্য ১শ’ কোটি টাকা বাজেট রয়েছে এবং তাদেরকে খুঁজে খুঁজে তা দেওয়া হচ্ছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “সবথেকে বড় কথা হলো দেশটাকে গড়ে তুলতে হবে। জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করে গেছেন এবং তার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো। আমরা সেই কর্মপরিকল্পনা নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি।”
Comments