খালের মাঝে আ. লীগ নেতার কূপ খনন, তীব্র পানি সংকটে স্থানীয়রা

Bandarban deep tubewell
বান্দরবানের পানেক্যাং খালের মাঝখানে প্রায় ১০০ ফুট খনন করে কূপ খনন করা হয়েছে। ছবি: স্টার

বান্দরবানে একজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা খালের মাঝখানে প্রায় ১০০ ফুট খনন করে একটি কূপ তৈরি করেছেন।

উচ্চ ভোল্টেজের পানির পাম্প ব্যবহার করে এই আওয়ামী লীগ নেতা তার হোটেল ব্যবসার জন্যে কূপ থেকে প্রতিদিন প্রায় ১২ হাজার লিটার পানি তুলছেন। এর ফলে ঐ এলাকার স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কাজল কান্তি দাশ পানেক্যাং খালের কিছু অংশ দখল করে এবং স্থানীয়দের প্রতিবাদকে উপেক্ষা করে কূপটি খনন করেছেন।

সদর উপজেলার কাশেমপাড়া এবং কসাইপাড়ার প্রায় ৬৫০ জন স্থানীয় বাসিন্দা পানীয় জল এবং প্রতিদিনের কাজকর্মের জন্য এই খালটির উপর নির্ভরশীল।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কূপ খননের পর থেকে তারা পানির তীব্র সংকটে পড়েছেন।

কাশেমপাড়া এলাকার বাসিন্দা শারমিন আক্তার বলেছেন, “প্রতিদিন খালের ভেতরের কূপ থেকে পাম্প ব্যবহার করে প্রচুর পরিমাণে পানি তোলার ফলে আমরা মারাত্মক পানির সংকটে পড়েছি।”

“আমরা খালটিতে কূপ নির্মাণ না করার জন্য প্রতিবাদ করেছি। খালের পানি আমাদের জীবনযাপনের একমাত্র উৎস। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা কাজল কান্তি দাস আমাদের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে কূপটি খনন করেছেন”, বলেছেন আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম।

“এর আগে আমরা কখনো এতো তীব্র পানির সংকটে পড়িনি। গত কয়েকমাস ধরে সংকট ভয়াবহ হয়ে উঠেছে,” যোগ করেন সাইফুল।

হোটেল হিল ভিউয়ের পরিচালক সুলতান নাফিজ মাহমুদ বলেছেন, “আমাদের হোটেলের জন্য প্রতিদিন প্রায় ১২ হাজার লিটার পানির প্রয়োজন হয়।”

এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম বলেছেন, “আমরা খাল দখল করাকে সমর্থন করিনি। কাজল তার হোটেল ব্যবসায়ের জন্য খালের ভূগর্ভস্থ পানি তুলছেন।”

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম অফিসের সুপারইনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার শিবেন্দু খাস্তগীর বলেছেন, “যদি উচ্চ ভোল্টেজ মোটর ব্যবহার করে খালের ভূগর্ভস্থ পানি তোলা হয় তাহলে ধীরে ধীরে খালের উপরের অংশের পানিও শেষ হয়ে যাবে। ফলে সেই এলাকায় সংকট মারাত্মক হতে পারে।”

যোগাযোগ করা হলে হোটেল মালিক কাজল কান্তি দাশ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “আমি খালে কূপটি খনন করেছি এবং আমার হোটেলের জন্য পানি তুলি। আপনার যা ইচ্ছে তা লিখতে পারেন। আমি কাউকে পরোয়া করি না।”

বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নোমান হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক যে হোটেল ব্যবসায়ের জন্য একটি খালের মাঝখানে কূপ খনন করে উচ্চ ভোল্টেজের পানির পাম্প ব্যবহার করে ভূগর্ভস্থ পানি তোলা হচ্ছে।”

“অভিযুক্ত দখলদার প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয়দের কাছে অনুরোধ করবো তারা যেনো দরখাস্ত নিয়ে আমার অফিসে আসেন,” বলছিলেন নোমান।

Comments

The Daily Star  | English

JnU students begin mass hunger strike

Approximately 5,000 current and former students have joined the protest

2h ago