রকিবুলের ৩১৩ ছাড়িয়ে চূড়ায় উঠলেন তামিম

তামিম ইকবাল যখন ৩১৩ রানে, বিপক্ষ দলে থাকা রকিবুল হাসান তখন ফিল্ডিং করছেন মিড-অনে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে ৩১৩ রানের ইনিংস খেলে এতদিন চূড়ায় ছিলেন রকিবুল। তামিম সিঙ্গেল নিয়ে তাকে ছাড়িয়ে যখন ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন, মিড-অন থেকে ছুটে এসে প্রথম অভিনন্দনটা তাকে দিলেন রকিবুলই। ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় দিনটি স্বর্ণাক্ষরে খোদাই করা থাকল এই মুহূর্তটির জন্য।

রবিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তামিম খেলে ফেললেন দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে ইতিহাস গড়া এক ইনিংস। বিসিএলের প্রথম রাউন্ডে পূর্বাঞ্চলের হয়ে ৪২৬ বলে অপরাজিত ৩৩৪ রানের ইনিংসে তামিম উঠলেন সবার উপরে। দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে প্রথম শ্রেণির ট্রিপল সেঞ্চুরিটাকে আরও মহিমান্বিত করতে বাকি থাকল না কোনো কিছুর কমতি। রকিবুল ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন ৬০০ বলে, তামিম তা আনলেন ৪০৭ বলে। সময়ের হিসেবেও রকিবুলকে পেছনে ফেলেছেন তামিম। ৬৪০ মিনিট লেগেছিল ডানহাতি রকিবুলের, ৫৬০ মিনিটেই তিনশোর মাইলফলকে পৌঁছে গেলেন তামিম।

এমনিতে রেকর্ড, পরিসংখ্যান নিয়ে আলাদা প্রীতি আছে তামিমের। আগের দিন ২২২ রানে অপরাজিত থাকায় জানতেন সামনে তার জন্য অপেক্ষায় আছে কী। নিজের এবং দলের পরিস্থিতিও ছিল অনুকূলে। মোস্তাফিজুর রহমান, শহিদুল ইসলাম, মুকিদুল ইসলাম আর শুভাগত হোমদের উপর দুই দিন ধরে ছড়ি ঘুরিয়েছেন তিনি। মধ্যাঞ্চলের কোনো বোলার তাকে আউট করার সুযোগ তৈরি তো দূরে থাক, সামান্য ধন্দেও ফেলতে পারেননি।

প্রথম রাউন্ডের ম্যাচের তৃতীয় দিনে ২ উইকেটে ৫৫৫ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে তামিমের দল পূর্বাঞ্চল। মধ্যাঞ্চলের ২১৩ রানকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে ৩৩২ রানের বিশাল লিড নিয়ে তারা আছে ইনিংস ব্যবধানে জেতার আশায়।

এমনিতে যেকোনো ট্রিপল সেঞ্চুরিই দারুণ কিছু। কিন্তু তামিম যেভাবে তা করেছেন তা ইনিংসের মাহাত্ম্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণে। ৩৩৪ রানের ইনিংস খেলেছেন ৭৮.৪০ স্ট্রাইক রেটে। স্ট্রোক ঝলমলে ইনিংসে দেশসেরা ওপেনার মেরেছেন ৪২ চার আর ৩ ছক্কা।

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তার ব্যাটে ছিল সাবলীল ভাব। দীর্ঘ সময় ব্যাট করেও শরীর হয়নি নিস্তেজ। পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের আগে এমন একটা রাজকীয় ইনিংস নিশ্চিতভাবেই তামিমের আত্মবিশ্বাসকেও তুলবে চূড়ায়।