পিকনিকের টাকা দিতে পারেনি, বই কেড়ে নিলেন প্রধান শিক্ষক

স্কুলের বার্ষিক পিকনিকে যাওয়ার টাকা দিতে পারেনি পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী কাজলী রানি রায় (১১)। আর এ অপরাধে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার পাঠ্যবই কেড়ে নিয়েছেন।
কাজলী রানি রায়। ছবি: সংগৃহীত

স্কুলের বার্ষিক পিকনিকে যাওয়ার টাকা দিতে পারেনি পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী কাজলী রানি রায় (১১)। আর এ অপরাধে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার পাঠ্যবই কেড়ে নিয়েছেন।

এ ঘটনা ঘটেছে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গাবরোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

পিকনিকের টাকা দিতে না পারায় কাজলীর দিনমজুর বাবা কৃষ্ণ চন্দ্র রায়কেও অপমাণ করেন প্রধান শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক।

২৯ জানুয়ারি পিকনিকের জন্য ২৫০ টাকা করে শিক্ষার্থীদের জমা দিতে বলেন প্রধান শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক।

কাজলীর বাবা কৃষ্ণ চন্দ্র জানান, তিনি ২০০ টাকা জোগাড় করতে পেরেছিলেন। আশা করেছিলেন প্রধান শিক্ষক বাকি ৫০ টাকা মওকুফ করে দেবেন।

২০০ টাকা যখন শ্রেণি শিক্ষককে দেয় কাজলী তখন বাকি টাকা নিয়ে আসতে বলেন তিনি, নয়তো প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করতে বলেন।

কাজলী বলে, “প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে সব বললে তিনি আমাকে ধমক দেন আর ওইদিনই বাকি টাকা নিয়ে আসতে বলেন”।

পরে বাবাকে নিয়ে স্কুলে গেলে, কাজলী স্কুলের নিয়ম মেনে চলছে না বলে জানান প্রধানশিক্ষক। তাই স্কুলের বই রাখার কোনো অধিকার নেই জানিয়ে প্রধান শিক্ষক কাজলীকে অন্য স্কুলে ভর্তি করার কথা বলেন বলে জানিয়েছেন কৃষ্ণ চন্দ্র।

“আমি এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছি। পরদিন ব্র্যাকের একটি স্কুলে ভর্তি হয় আমার মেয়ে” বলেন কৃষ্ণ চন্দ্র।

জলঢাকার ইউএনও মো. সুজাউদ্দৌলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি অভিযোগ পেয়েছি। এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্তের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি”।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, “গাবরোল প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছি এবং কাজলীর বাবাকে মেয়েকে ওই স্কুলে ফিরিয়ে আনতে রাজি করানো হয়েছে। সে এখন নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে”।

“যেহেতু অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি তাই প্রধান শিক্ষককে পিকনিকের তারিখ পেছানো এবং কাজলীকে কোনো ফি ছাড়াই পিকনিকে নেয়ার কথা জানিয়েছি”, বলেন শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ।

তিনি জানান, দুই-একদিনের মধ্যেই তিনি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।

প্রধান শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক বলেন, “আমি কেবল মেয়েটিকে স্কুলের নিয়ম-নীতি মানার কথা বলতে চেয়েছি। কিন্তু তারা আমাকে ভুল বুঝেছে”।

 

 

  

Comments

The Daily Star  | English

Matia Chowdhury no more

Awami League presidium member and former minister Matia Chowdhury breathed her last around 1:00pm

13m ago