মাহমুদউল্লাহর এ কেমন ‘বিশ্রাম’?
টানা খেলার ধকল এড়াতে মাঝেমধ্যেই খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দিয়ে থাকে টিম ম্যানেজমেন্ট। আর দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে তা বেশ স্বাভাবিক। কিন্তু মাহমুদউল্লাহর ক্ষেত্রে ঘটল কিছুটা উল্টো। টেস্ট দলে না থাকলেও ঠিকই খেলবেন ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির আসর বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল)। তাতে প্রশ্ন উঠেছে, আসলেই কি বিশ্রামে মাহমুদউল্লাহ?
তাছাড়া মাহমুদউল্লাহ যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে বাদ পড়ছেন, তার ইঙ্গিত কদিন আগেই সংবাদ সম্মেলনে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। এমনকি তাকে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরামর্শও দিয়েছিলেন কোচ। তাতে এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে ক্রিকেটের দীর্ঘ সংস্করণে কোচের পরিকল্পনায় নেই মাহমুদউল্লাহ। অথচ প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন বললেন ভিন্ন কথা। বেশ জোর দিয়ে জানালেন, বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে মাহমুদউল্লাহকে। আবার পরক্ষণেই বললেন, বিশ্রামে থাকলেও অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান খেলবেন বিসিএলে।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ে টেস্টের দল ঘোষণার পর মাহমুদউল্লাহ না থাকার ব্যাখ্যায় মিনহাজুল বললেন, ‘আমরা ওকে এই সিরিজ থেকে বিশ্রাম দিয়েছি। ঘরের মাটিতে খেলা। তাই নতুন কিছু খেলোয়াড়কে আমরা যাচাই করতে চাই। কিছু খেলোয়াড়কে আমরা পাকিস্তান সফরের জন্য নিয়েছিলাম। সেজন্য একটা বা দুইটা টেস্ট ম্যাচ খেলেছে এমন খেলোয়াড় আছে... আর অবশ্যই আমরা মাহমুদউল্লাহকে বিশ্রাম দিয়েছি।’
বর্তমানে দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রথম শ্রেণির আসর বিসিএল চলছে। সেখানে মাহমুদউল্লাহ খেলবেন কি-না জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘অবশ্যই, বিসিএলে খেলার জন্য সে থাকছে।’
যুক্তি যদি এটাই হয়, তাতেই প্রশ্নটা উঠে আসে, আসলেই কি বিশ্রামে মাহমুদউল্লাহ? যদি তেমনটা হয়, তাহলে ঘরোয়া ক্রিকেটে কেন খেলবেন? তার মতো সিনিয়র খেলোয়াড় যদি মাঠে নামবেনই, তাহলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কেন নয়?
তবে মূল কথা, পাকিস্তানে সবশেষ রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে নাসিম শাহর হ্যাটট্রিক বলে যেভাবে উদ্ভটভাবে আউট হয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ, তাতে এ সংস্করণে তার মনোযোগের অভাব দেখা দিয়েছে স্পষ্টভাবে। এটা চোখ এড়ায়নি কোচ, নির্বাচক থেকে টিম ম্যানেজমেন্টের কারোরই। আপাতত টেস্টে তাকে বিবেচনা করতে চাইছেন না তারা। তাই ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করে আবারও জাতীয় দলে সাদা পোশাকে ফেরার জন্যই বিসিএলে খেলছেন মাহমুদউল্লাহ।
এর আগেও বিশ্রামের অজুহাতে বাদ দেওয়া হয়েছিল মাহমুদউল্লাহকে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের শততম টেস্টের আগে হুট করেই তাকে বাদ দেওয়া হয়। এরপর আবার অধিনায়ক করেও ফেরানো হয়। এখন দেখার বিষয়, শেষ পর্যন্ত কত দিন বিশ্রামে থাকেন মাহমুদউল্লাহ।
Comments