১৭ বছর পর মাকে খুঁজে পেলেন ছেলে

কাউকে কিছু না বলে ১৭ বছর আগে ছোট মেয়ের খোঁজে ঘর ছেড়েছিলেন বকুল বালা। তারপর থেকে নিরুদ্দেশ তিনিও।
পটুয়াখালীর তিতাস সিনেমা হলের কাছে বকুল বালাকে খুঁজে পাওয়া যায়। ছবি: সোহরাব হোসেন

কাউকে কিছু না বলে ১৭ বছর আগে ছোট মেয়ের খোঁজে ঘর ছেড়েছিলেন বকুল বালা। তারপর থেকে নিরুদ্দেশ তিনিও।

এই দুজনের সঙ্গে আবার কখনও দেখা হবে- এই আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা।  

তবে গতকাল রোববার পটুয়াখালীর তিতাস সিনেমা হলের কাছে ঠাকুর কৃষ্ণ হাওলাদার (৪৫) তার মাকে খুঁজে পান।

আশি ছুঁই ছুঁই বকুল বালার বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার তেলবাড়িয়া গ্রামে। পটুয়াখালী সরকারি কলেজে ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলেন তার নাতি রিপন চন্দ্র। শহরে সবুজবাগ দিয়ে যাওয়ার সময় গত শুক্রবার সে-ই প্রথম বকুলকে দেখতে পান।

খুব ছোটবেলায় দাদিকে দেখেছেন। খুব একটা মনেও নেই কেমন দেখতে। তবে দাদীর গল্প শুনে শুনে বড় হয়েছেন রিপন। রাস্তায় দাদীর মতো ওই নারীর প্রতি অজানা এক মায়া কাজ করে তার।

বাড়িতে গিয়ে বাবা কৃষ্ণ হাওলাদারকে বলেন এ সব কথা। তখনি মাকে দেখতে ছুটে যান কৃষ্ণ।

নিরুদ্দেশ হওয়ার কিছু দিন আগেই বকুলের চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে সবচেয়ে ছোট মেয়ে আলোর বিয়ে হয়। তবে বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই আলোর স্বামী ভারতে চলে যান। স্বামীকে খুঁজতে ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আলো।

এরপর মেয়েও বাড়ি ফিরে না আসায় আর থাকতে পারছিলেন না মা বকুল। মেয়েকে খুঁজতে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি ছাড়েন তিনি।

“আমার বোনকে খুঁজতে গিয়ে মা-ই হারিয়ে যান। আমি এই এলাকার মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ যারা আমার মাকে এতো বছর ধরে খাবার আর আশ্রয় দিয়েছেন” বলেন কৃষ্ণ।

স্থানীয়রা জানান বছর চারেক আগে এক বৃষ্টির দিনে বয়স্ক ওই নারীকে তারা রাস্তার পাশে খুঁজে পান। রেস্তোরাঁ মালিক শারমিন আক্তার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে থাকার জায়গা দেন। পরে কাউন্সিলর কাজল বরন দাস কাপড় আর কম্বলের ব্যবস্থা করেন।

কাজল বলেন, “সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবার কাছেই পরিচিত হয়ে ওঠেন বকুল। তিনি খুব কম কথা বলেন আর মানসিকভাবেও কেমন উদাসীন থাকতেন”।

“আমরা তার জন্য একটি ঘর বানিয়ে দিয়েছি। তবে আমরা ভীষন আনন্দিত এবার তিনি তার নিজের পরিবারে ফিরছেন জেনে,” বলেন কাজল।

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago