মাশরাফিকে নিয়ে নাটকীয়তার তাহলে বাকি আছে আরও

Mashrafe Mortaza
ফাইল ছবি: বিসিবি

বিপিএলের পর মাঠ ছেড়েছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, জিম্বাবুয়ে সিরিজ এগিয়ে আসতেই আবার নিয়মিত মাঠে দেখা যাচ্ছে তাকে। জিম করছেন, মেদ ঝরিয়েছেন, ফিটনেস নিয়ে খেটে নিজেকে তৈরি করছেন। ওয়ানডে অধিনায়ক বদল হয়নি, স্বাভাবিক হিসাবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলারই তো প্রস্তুতি এসব। কিন্তু নির্বাচক, মাশরাফি নিজে বা বোর্ডের কর্মকর্তাদের কথাবার্তায়, তিনি যে খেলছেনই এমন কোন স্পষ্ট আভাস পাওয়া যায়নি। বরং এই সিরিজে তার থাকা না থাকা নিয়ে অপেক্ষা করছে নাটকীয়তার।

বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে লর্ডসে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে শেষবার নেমেছিলেন দেশের সফলতম অধিনায়ক। বিশ্বকাপ শেষে শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার কথা থাকলেও চোটের কারণে যেতে পারেননি। এরপর আর ওয়ানডে খেলেনি বাংলাদেশ। মাশরাফি খেলছেন কিনা এই প্রসঙ্গও আসেনি সরাসরি সামনে।

তবে এই সময়ে ঘটেছে অনেক কিছু। গত বছর এই জিম্বাবুয়ে খেলতে এসেছিল ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ, তখন সিরিজে ওয়ানডে যোগ করে মাশরাফিকে বিদায় জানাতে চেয়েছিল বিসিবি। তাতে সায় না দিয়ে খেলা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। এমন সিদ্ধান্তে অস্বস্তি গোপন গোপন করেননি বিসিবির প্রভাবশালী বোর্ড কর্তারা। এমন পরিবেশেই সর্বশেষ কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন মাশরাফি। বিপিএলের সময়েই এসব অস্বস্তিকর প্রসঙ্গের উত্তর দিতে গিয়ে অভিমানও ঝরে বাংলাদেশের অনেক সাফল্যের এই নায়কের কণ্ঠে। বোর্ড ও তার মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্বও পরিষ্কার হয়ে যায় তখন।

বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সের কারণে খোদ মাশরাফিই দলে জায়গা প্রত্যাশা করেন না বলে কিছুটা খেদ থেকে জানিয়েছিলেন। তবে তাকে দলে রাখলে দেশের হয়ে তিনি খেলতে নামবেন, এই কথাও জানিয়ে রেখেছেন। জিম্বাবুয়ে সিরিজে কি তবে খেলছেন? গত কয়েকদিন মাঠে নিয়মিত আসা মাশরাফির এসব প্রশ্নের উত্তর দাঁড়ায় এরকম, সামনে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ আছে, সেজন্য নিজেকে তৈরি করছেন। আর জাতীয় দলে সুযোগ পেলেও তো ভালো, খেলবেন। ওয়ানডে অধিনায়ক বলছেন, সুযোগ পেলে খেলবেন।  অর্থাৎ বল তিনি ঠেলে দিয়েছেন নির্বাচকদের কোর্টে।

কিন্তু নির্বাচকরাও এই বিষয়ে দিতে পারলেন না স্পষ্ট ধারণা। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন জানিয়েছেন সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই দেওয়া হবে ওয়ানডে দল, তখনই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।

একটি সূত্রে জানা গেছে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি ওয়ানডে খেলে মাশরাফিকে আবার অবসর নিতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মাশরাফির এখনি অবসরের চিন্তা নেই, তাকে রাখলে খেলবেন পুরো সিরিজ, এবং সেটা অবসর আলোচনা বাদ দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই। এরমধ্যে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর সঙ্গে দেখা হয়েছে তার। কদিনের মধ্যে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানও বসতে পারেন তাকে নিয়ে।  

তবে জানা গেছে, মাশরাফির এই অবস্থানের পর সমস্ত সিদ্ধান্তের ভার নির্বাচকদের উপর দিয়ে দিয়েছেন বোর্ড সভাপতি। পারফরম্যান্স বিচার করে মাশরাফি যদি দলে থাকার মতো হন তবে থাকবেন, আর তিনি দলে থাকলে তো অধিনায়কই। কিন্তু নির্বাচকরা যদি মনে করেন পারফরম্যান্সের কারণে তাকে রাখা যায় না, তাহলে তাকে বাদ দিয়ে দল হবে এবং সেক্ষেত্রে ওয়ানডে অধিনায়কত্বও করতে পারেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

এখন মাশরাফিকে দলে রাখা, না রাখা। না রাখলে তার ব্যাখ্যা কি হবে তা নিয়ে বাড়ছে কৌতূহল। মাশরাফি নিজেকে খেলার জন্য তৈরি রেখেছেন। চোট বা ফিটনেস জনিত কারণ বলারও সুযোগ নেই। সম্প্রতি টেস্ট দল থেকে মাহমুদউল্লাহকে বাদ দিয়েও ‘বাদ’ শব্দটি ব্যবহার করতে পারেননি নির্বাচকরা।  মাশরাফির মতো বড় তারকা থাকা, না থাকার প্রশ্নে  নির্বাচকদের সামনে তাই অপেক্ষা করছে কঠিন পরীক্ষা।

Comments

The Daily Star  | English
What’s in the new budget?

Budget to set 10 priorities

Govt puts inflation control, revenue reform, fiscal restraint at the heart of its economic plan

8h ago