বিনিয়োগে জাপানিদের পছন্দ বাংলাদেশ

এশিয়া ও ওশেনিয়া মহাদেশের মধ্যে বিনিয়োগের জন্য জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রথম পছন্দ বাংলাদেশ। কারণ, এখানে সম্ভাবনার পাশাপাশি মুনাফার পরিমাণ অনেক বেশি। এমনটিই দেখা যাচ্ছে জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেইটিআরও) এক সমীক্ষায়।

এশিয়া ও ওশেনিয়া মহাদেশের মধ্যে বিনিয়োগের জন্য জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রথম পছন্দ বাংলাদেশ। কারণ, এখানে সম্ভাবনার পাশাপাশি মুনাফার পরিমাণ অনেক বেশি। এমনটিই দেখা যাচ্ছে জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেইটিআরও) এক সমীক্ষায়।

বাংলাদেশে কাজ করা জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে এদেশে ব্যবসা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। প্রায় ২৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান একই গতিতে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে। মাত্র ১ দশমিক ৬ শতাংশ জাপানি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ব্যবসার পরিসর কমানোর কথা জানিয়েছে।

‘এশিয়া এবং ওশেনিয়া অঞ্চলে জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায়িক অবস্থানের জেইটিআরও জরিপ ২০১৯’ থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়। তবে এই জরিপ প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও প্রকাশিত হয়নি।

এশিয়া ও ওশেনিয়ার ২০ দেশে ১৩ হাজার ৪৫৮টি জাপানি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার পরিকল্পনার ভিত্তিতে গত বছর আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে এই জরিপটি করা হয়।

ভারতে কাজ করা বেশিরভাগ জাপানি প্রতিষ্ঠান সেখানে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী। সে দেশে কাজ করা ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ব্যবসা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের পরেই জাপানিদের পছন্দ ভিয়েতনাম। সেখানে কাজ করা ৬৩ দশমিক ৯ শতাংশ জাপানি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। এরপরই রয়েছে পাকিস্তান। সেখানকার ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ জাপানি প্রতিষ্ঠান পাকিস্তানে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী।

জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায়িক লাভের হিসাবে বাংলাদেশ পঞ্চম স্থানে রয়েছে।

বাংলাদেশে পরিচালিত জাপানি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রায় ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে মুনাফা বেশি হবে বলে আশা করছে। ৪৪ দশমিক ৯ শতাংশের প্রত্যাশা ব্যবসা একই রকম থাকবে এবং প্রায় ১৮ দশমিক ৪  শতাংশ তাদের লাভ কমার আশঙ্কা করছে।

জরিপে আরও দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬৮ দশমিক ৩ শতাংশ আগামী এক বছরে বাংলাদেশি কর্মী বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। ২৯ দশমিক ৩ শতাংশ একই রাখবে এবং ২ দশমিক ৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কমাতে চায়।

জরিপ করা দেশগুলোর মধ্যে স্থানীয়দের নিয়োগ করার পরিকল্পনার হারে বাংলাদেশ গত বছর পঞ্চম অবস্থানে থাকলেও এ বছর উঠে এসেছে দ্বিতীয় স্থানে।

জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, “স্থানীয়ভাবে বাংলাদেশে উত্পাদন ব্যয় জাপানের তুলনায় ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ কম।”

তবে এই সমীক্ষায় উদ্বেগের কথাও আছে। বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরে আমদানি ছাড়পত্র পেতে গড়ে প্রায় ১৪ দশমিক ৩ দিন সময় লাগে। বিমানবন্দরে লাগে ৮ দশমিক ১ দিন। এদিক থেকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

৮১ দশমিক ৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে স্থানীয়দের নিয়োগের ক্ষেত্রে, প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ কর্মীর ঘাটতির কথা জানিয়েছে।

কর্মীদের কাজের মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে প্রায় ৬১ দশমিক ৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। গত বছর এটি ছিল ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ।

এই সমীক্ষার ভিত্তিতে জেইটিআরও বাংলাদেশি কর্মীদের দক্ষ করতে প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৭০ দশমিক ৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠান স্থানীয়ভাবে আক্সেসরিস সংগ্রহ করতে সমস্যায় পড়েন।

গত ডিসেম্বরের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৩০০ জাপানি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। এক দশক আগে এ সংখ্যাটি ছিল ৮২।

জাপানের উদ্যোক্তারা ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায় ৩৮৬ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছেন।

জেইটিআরওর মুখপাত্র উজি আন্দো বলেন, “বাংলাদেশে মৌলিক অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ শেষ হবে বলে, আগামী পাঁচ বছর জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।”

কয়েক বছর ধরে টানা উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে বাংলাদেশ। এ কারণে, জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে বিনিয়োগ করতে উত্সাহ পাচ্ছে।

তার উপলব্ধি, “এখন ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ আরও উন্নত হচ্ছে।”

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago